এখন পড়ছেন
হোম > অন্যান্য > কিনবেন নাকি এবারের স্পেশ্যাল চমক ‘রামায়ণ শাড়ি’? বাংলার তৈরী অসাধারন কাজ চমকে দিচ্ছে বিশ্বকে

কিনবেন নাকি এবারের স্পেশ্যাল চমক ‘রামায়ণ শাড়ি’? বাংলার তৈরী অসাধারন কাজ চমকে দিচ্ছে বিশ্বকে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বাংলা আর বাঙালির সঙ্গে যে জিনিসগুলি অবিচ্ছেদ্যভাবে থেকে যাবে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো বাংলার শাড়ি বা তাঁত। কেবলমাত্র ভারতবর্ষে নয় ইংরেজ শাসিত ভারতবর্ষের আগেও এই তাঁত শিল্প মুঘল যুগ থেকেই তার বিস্তৃতি লাভ করেছিল। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শিল্পী’ হয়ত অনেকেরই পড়া। সেখানে বাংলার তাঁতিদের দুর্দশার কথা জানা যায়। সেই সঙ্গে একজন আদর্শ তাঁত শিল্পীর কথাও ফুটে ওঠে। তবে বর্তমানে কলকারখানা আবিষ্কারের পরে তাঁতশিল্প যথেষ্ট মার খেলেও ভালো শাড়ির কদর এখনো বাঙালির অন্তরে রয়ে গেছে। তাই ভালো শাড়ি দেখলে বা নিজের আলমারিতে কয়েকটি ভালো শাড়ির কালেকশন অনেক মেয়েই রাখতে চায়। তবে সেক্ষেত্রে সবার প্রথমে তাঁত শিল্প সম্পর্কে বা এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের সম্পর্কে একটু জেনে নেওয়া দরকার।

জানা যায়, ‘তাঁত বোনা’ শব্দটি এসেছে ‘তন্তু বয়ন’ শব্দ থেকে, আর এই পেশার সাথে যুক্ত মানুষরা তাই ’তন্তুবায়’ বা ‘তাঁতি’ নামেই পরিচিত হয়। আর সেই তাঁত বোনার কাজে তাঁত হচ্ছে এমন একটি যন্ত্র যা দিয়ে তুলা বা তুলা হতে উৎপন্ন সুতো থেকে কাপড় বানানো যায়। ছোট থেকে বড়, তাঁত বিভিন্ন রকমের হতে পারে ৷ সাধারণত তাঁত নামক যন্ত্রটিতে সুতো কুণ্ডুলি আকারে টানটান করে ঢুকিয়ে দেয়া থাকে, যখন তাঁত চালু করা হয় তখন নির্দিষ্ট সাজ অনুসারে সুতো টেনে নেওয়া হয় এবং এর ভিতরের কলাকৌশল অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়। এই যন্ত্রটি ঝোলানো হাতল টেনে সুতো জড়ানো মাকু আড়াআড়ি ছিটানো হয়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে এবার সেই শাড়ির ইতিহাসে হতে চলেছে একটি অভূতপূর্ব শাড়ির প্রকাশ। যেখানে বাংলার তাঁত শিল্পের ঐতিহ্য সঙ্গে উঠে আসবে সনাতন মহাকাব্যের ও কাহিনী। যেখানে শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে ফুটে উঠবে কৃত্তিবাসী রামায়ণের বিভিন্ন ঘটনার আঙ্গিক। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন, এমনই একটি শাড়ি তৈরির কথা জানা গেছে। যে শাড়ির মধ্যে ফুটে উঠেছে আদি কাব্যের রস, যে শাড়ির অঙ্গে শোভা পেয়েছে রাম রামায়ণের গল্প। নদীয়া, ফুলিয়ার খ্যাতনামা তাঁতশিল্পীরা এই শাড়ি বুনেছেন বলে। আর শাড়িটি তৈরি করেছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত তাঁত শিল্পী বীরেন কুমার বসাক।

ইতিহাস থেকে জানা যায় “আদি বসাক সম্প্রদায়”-এর তাঁতিরাই আদিকাল তাঁত বুনে এসেছে। এরা প্রধানত যাযাবর শ্রেণীর অন্তর্গত হলেও প্রথমে এরা সিন্ধু উপত্যকার অববাহিকায় বসবাস করত। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তারা সেই স্থান পরিত্যাগ করে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে এসে তাঁতের কাজ শুরু করে। কিন্তু স্থানীয় আবহাওয়া তাঁতের পক্ষে প্রতিকুল হওয়ার জন্য নতুন জায়গার সন্ধানে বেরিয়ে বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে তারা চলে যায়। তবে সেখানকার আবহাওয়াও প্রতিকূল হওয়ায় আবার তারা স্থান পরিবর্তন করে। তাদের মধ্যে এক দল চলে যায় কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে আর অপর একদল ঢাকার ধামরাইয়ে চলে যায়। আবার এই ধামরাইয়ের থেকে কিছু বসাক চলে আসে চৌহাট্টা অঞ্চলে। এরপর থেকে বসাক তাঁতিরা প্রধানত ধমরাইয়া ও চৌহাট্টা এই দুই অঞ্চলেই বিভক্ত হয়ে পড়ে৷

তবে এই শাড়ির কদর কোথায়? জানা গেছে, পুরো শাড়ি জুড়ে রাম-রাবণ আর সীতার কাহিনি সূক্ষ্ম সুতোর কাজে ফুটিয়ে তুলেছেন বাংলার তাঁতশিল্পীরা। এই শাড়ি বুনতে সময় লেগেছে ১ বছরেরও বেশি। রংবেরঙের সুতো দিয়ে কৃত্তিবাসী রামায়ণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে শাড়ি বুননের জন্য মজুরি ধরা হয়েছে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা। আর সম্পূর্ণ শাড়ির দাম আড়াই লক্ষ টাকা। তবে দাম শুনে চোখ কপালে তুললে হবে কেন, এই শাড়ির কদরের কাছে দাম সবসময়ই ফিকে হয়ে থাকবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!