এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > পদ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে আটকানো হচ্ছে দলবদল, তোলপাড় তৃণমূলের অন্দরেই

পদ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে আটকানো হচ্ছে দলবদল, তোলপাড় তৃণমূলের অন্দরেই

তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সাংগঠনিক নেতা হিসেবে পরিচিত বিপ্লব মিত্রের দলবদলকে কেন্দ্র করেই ক’দিন ধরে তীব্র জল্পনা শুরু হয়। তৃণমূলকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রতিষ্ঠিত করা বিপ্লব মিত্র যদি বিজেপিতে যোগ দেন, তাহলে তার সাথে অনেক জনপ্রতিনিধি গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন এবং তৃণমূলের দখলে থাকা জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে চলে যাবে বলে চরম আশঙ্কায় ভুগছিলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃনমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ।

তবে শেষ পর্যন্ত এই জেলা পরিষদ নিজেদের দখলে রাখতে পারল না তৃনমূল। গতকাল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লব মিত্রর সাথে এই জেলার জেলা পরিষদের সভাধিপতি সহ 10 জন সদস্য বিজেপিতে যোগ দেন। যার ফলে 18 আসন বিশিষ্ট দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ গেরুয়া শিবিরের দখলে চলে আসে।

কিন্তু প্রথম থেকেই বিশ্বস্ত সুত্রে খবর পাওয়া গিয়েছিল যে, বিপ্লব মিত্রের সাথে 14 জন জেলা পরিষদের সদস্য বিজেপিতে যোগ দেবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চারজন সদস্য যোগ না দেওয়ায় এবার রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। জানা গেছে জেলায় তৃণমূলের ভাঙ্গন রুখতে এখন কার্যত কালঘাম ছুটেছে অর্পিতা ঘোষের।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সূত্রের খবর, জেলা পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম, শ্যামল সাহা, আমজাদ মন্ডল এবং মিঠু জোয়ারদারের মত বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ সদস্যদের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের দিল্লি যাওয়া থেকে আটকে দিয়েছেন অর্পিতা ঘোষ। বিনিময়ে তাদের দলে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি বলে জানা গেছে। আর এতেই সেই চারজন আর বিজেপিতে যোগ দিতে যাননি।

কিন্তু যেখানে বিপ্লব মিত্রের মতো সাংগঠনিক, দক্ষ নেতা রয়েছেন, সেখানে অর্পিতা ঘোষ পদের লোভ দেখিয়ে কি জেলা পরিষদের চারজন সদস্যকে আটকাতে পারবেন! বিজেপির দাবি, বিপ্লব বাবু জেলায় ফিরলেই সমস্ত কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। যে 4 জন রয়েছেন তারাও বিজেপিতে যোগ দেবে এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের বিজেপির সদস্য সংখ্যা হবে 14।

অন্যদিকে বিপ্লব মিত্রের ভাই তথা গঙ্গারামপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র এদিন বিজেপিতে যোগ না দেওয়ায় তিনি কি করবেন তা নিয়েও ছড়িয়ে পড়েছে জল্পনা। তবে খুব তাড়াতাড়ি যে গঙ্গারামপুর এবং বুনিয়াদপুর পৌরসভাও বিজেপির দখলে চলে যেতে চলেছে সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই।

অনেকে বলছেন, অর্পিতা ঘোষ চাপে পড়ে এখন দলবদল আটকাতে সবাইকে পদ দেওয়ার কথা বলে তৃণমূলে রাখতে চাইছেন। আর তাইতো জেলা পরিষদের 10 জন সদস্য বিজেপিতে যোগ দিলেও চারজন সদস্যকে তিনি সেই পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিল্লি যেতে দিলেন না। যদিওবা বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের রফিকুল ইসলাম এবং আমজাদ মণ্ডল বলেন, “পদের জন্য নয়, তারা দলের সঙ্গে ছিলেন এবং আছেন।”

অন্যদিকে 10 জন সদস্য নিয়ে জেলা পরিষদ বিজেপি দখল করলেও খুব তাড়াতাড়ি তা তৃণমূলের দখলেই চলে আসবে বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী অর্পিতা ঘোষ। কিন্তু মুখে যতই অর্পিতাদেবী বড় বড় কথা বলুন না কেন, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলকে ঘুরে দাঁড়ানো বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তার পথেরই যে সাথী হবেন জেলা তৃণমূলের অজস্র নেতাকর্মীরা, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞ মহল।

এদিন এই প্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, “পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূল বলে আর কোনো জিনিস থাকবে না। কোনভাবেই তৃণমূলের এই ভাঙ্গন রোখা যাবে না।” সব মিলিয়ে তৃনমূলের অর্পিতা ঘোষ কিছুজনকে পদের লোভ দেখিয়ে বিজেপিতে যাওয়া আটকালেও জেলায় ফিরে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিপ্লব মিত্র সেই তৃণমূলে থাকা নেতাকর্মীদের এখন নিজেদের বাগে এনে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলকে শূন্য করে দিতে পারেন কিনা সেই দিকেই তাকিয়ে সকলে। সমালোচকদের একাংশ বলছেন, জেলায় তৃণমূলকে তৈরি করেছেন বিপ্লব মিত্র। ফলে তার পক্ষে তৃনমূলকে শেষ করে দেওয়া অতটা কঠিন ব্যাপার নয়।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!