তৃণমূল কংগ্রেসের হেভিওয়েট জেলা সভাপতিকে দল নতুন ভূমিকা দিতেই তীব্র অসন্তোষ দলের অন্দরেই উত্তরবঙ্গ রাজ্য January 4, 2019 ফের দলীয় অস্বস্তিকে বাড়িয়ে তৃণমূলের আভ্যন্তরীন মনোমালিন্য প্রকাশ্যে আসলো। আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি মোহন শর্মাকে জেলা পরিষদের মেন্টর করার উদ্যোগকে কেন্দ্র করে শাসকদলের অন্দরেই বিক্ষোভ ছড়িয়েছে সম্প্রতি। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু মন্তব্য না করলেও ঘটনাটি নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে জেলা তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে,এমনটাই খবর। এই বিষয়টি নিয়ে দলের অন্দরেই মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে। এক গোষ্ঠী মোহন শর্মার জেলা পরিষদের মেন্টর হওয়ার বিরুদ্ধে সওয়াল করলেও অন্য এক গোষ্ঠী তাঁর মেন্টর হওয়াকেই সমর্থন করেছেন। তবে এ ব্যাপারে দলীয় কর্মীদের অসন্তোষের কথা অস্বীকার করেছেন জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্য তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি মোহনবাবু। তিনি এখনো পরিষদের মেন্টর হওয়ার বিষয়ে কোনো চিঠি পাননি বলেই বক্তব্যে জানালেন। বললেন,’আগে সরকারিভাবে এবিষয়ে চিঠি পাই তারপরে এনিয়ে কথা বলব। এনিয়ে দলের মধ্যে কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভ আছে বলে আমার জানা নেই।’ মোহন শর্মা উক্ত বিষয়ে বিতর্ককে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও এটাকে ইস্যু করে জেলা তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদের একাংশের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। অনেকেই অভিযোগে জানিয়েছেন,সংরক্ষণের কোপে পড়ে মোহনবাবু এবার পরিষদের সভাধিপতি হতে পারেননি। তাই পরিষদের মেন্টর হয়ে দলের উপর ছড়ি ঘোরানোর সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বর্তমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শীলা দাস সরকার বলেন,এ বিষয়ে অন্যান্যদের ক্ষোভ থাকলেও তিনি মনে করেন মোহন বাবু মেন্টর হলে জেলা পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজে আরো গতি আসবে। এটাকেই আরো একটু ঘুরিয়ে বলেন ফালাকাটা থেকে নির্বাচিত পরিষদের এক সদস্য সন্তোষ বর্মন। তিনি বলেন,মোহনবাবুর মেন্টর হওয়া নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে রাজ্যসরকারের। যতক্ষণ না তিনি মেন্টর হচ্ছেন ততক্ষণ এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করবেন না বলেই জানালেন তিনি। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তবে দলের জেলা কোর কমিটির সদস্য মৃদুল গোস্বামী আবার মোহন শর্মার আলিপুুরদুয়ার জেলা পরিষদের মেন্টর হওয়ার স্বপক্ষেই সওয়াল করলেন। বললেন,’পৃথক জেলা হওয়ার পর সাবেক জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদে আলিপুরদুয়ারের সদস্যদের নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ গঠনে মোহনবাবুর বিরাট ভূমিকা আছে। পাশাপাশি পরিষদের কাজে তাঁর বিশাল অভিজ্ঞতা রয়েছে। জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্যরা সবাই নবাগত। তাই পরিষদের উন্নয়নের কাজকে গতিশীল করতে রাজ্য সরকার মোহনবাবুকে পরিষদের মেন্টর করার ভাবনা নিয়েছে।’ অন্যদিকে,দলের জেলা কোর কমিটির সদস্য জহর মজুমদার বলেন,মোহনবাবুকে মেন্টর করা নিয়ে অনেকের আপত্তি থাকলেও এটা মানতেই হবে মোহন বাবু দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাজনীতিক। প্রসঙ্গত,সাবেক জলপাইগুড়ি জেলা পারিষদে থাকার সময় আলিপুরদুয়ারের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে মোহনবাবু কংগ্রেসের হয়ে ভোটে লড়ে কালচিনি আসন থেকে জিতেছিলেন। পরে আলিপুরদুয়ার পৃথক জেলা হওয়ার পর তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। এবং পরবর্তীকালে বিরোধীদের ঘরে ভেঙে জেলা পরিষদও গঠন করে তৃণমূল। সেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচিত হন মোহন শর্মা। তবে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংরক্ষণের জেরে মোহনবাবু এবার সভাধিপতি হতে পারেননি।এরপর তাকে জেলা পরিষদের মেন্টর করার উদ্যোগকে কেন্দ্র করে দলের অন্দরেই তীব্র অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। লোকসভা ভোটের দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে হেভিওয়েট জেলা সভাপতিকে নতুন দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়কে নিয়ে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যেভাবে প্রকাশ্যে এসেছে তাতে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ কর্তারা। এই প্রেক্ষিতে কীভাবে লোকসভা ভোটের আগে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে রোখা সম্ভব হবে তা নিয়েই তীব্র চর্চা শুরু হয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস শিবিরে। আপনার মতামত জানান -