এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ঐতিহাসিক পদক্ষেপ মোদী সরকারের! গোটা দেশেই বদলে যাচ্ছে শিক্ষা নীতি, কার্যত ঝড় শুরু দেশ জুড়ে

ঐতিহাসিক পদক্ষেপ মোদী সরকারের! গোটা দেশেই বদলে যাচ্ছে শিক্ষা নীতি, কার্যত ঝড় শুরু দেশ জুড়ে


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – দেশ স্বাধীন হবার পর সত্তর বছরেরও বেশি সময় অতিক্রান্ত হলেও, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার তেমন একটা বদল ঘটেনি, বরং ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যাবস্থাই দেশে এখনো পুরোদমে চালু আছে, যদিও সামান্য বদল ঘটেছে তার। ইংরেজরা নিজের সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থ অটুট রাখতে দেশে যে শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছিল, আজও দেশে তা বহাল, এমন কথাও বলতে শোনা গেছে অনেককে। তবে বিগত ১৯৮৬ সালে দেশের শিক্ষাব্যাবস্থায় বেশ কিছুটা বদল এনেছিল কেন্দ্রীয় সরকার, তারপর সামান্য বদল আসে গত ১৯৯২ সালে।

কিন্তু এবার কেন্দ্রীয় সরকারের হাত ধরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বিরাট বদল আসতে চলেছে। আর এই মর্মে ঘোষিত হলো এক নতুন শিক্ষানীতির প্রস্তাব কেন্দ্রের তরফ থেকে, গতকাল তাতে সিলমোহরও দিয়ে দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।কেন্দ্রের এই নতুন শিক্ষানীতিতে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নাম ও বদলে যাচ্ছে, মন্ত্রক ফিরে পাচ্ছে পুরোনো নাম ‘শিক্ষা মন্ত্রক’।সমগ্র দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় দেখা দেবে আমূল পরিবর্তন। বিদ্যালয়ের শিক্ষাকে অধিকার হিসেবে তুলে ধরে ৩ বছর বয়স থেকে শুরু করে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে আনা হবে স্কুলের প্রাঙ্গনে।

এতদিনের চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী মুখস্ত করা, সিলেবাসের চাপ কমিয়ে দিয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে জীবনের ব্যবহার যোগ্য শিক্ষার উপরে।যেমন, ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই কম্পিউটার কোডিং শেখানো হবে, স্নাতক পর্যায়কে চার বছর ব্যাপী ও গবেষণামুখী করা হবে, তেমনি আবার পঞ্চম বা অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাসে মাতৃভাষা বা স্থানীয় ভাষা পড়ানো হবে। তবে সিলেবাস থেকে ইংরেজি বিদায় নিচ্ছে না।

কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক কেন্দ্রের এই নতুন শিক্ষানীতিকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে দাবি করেছেন। কিন্তু বিরোধী নেতা-নেত্রীরা অনেকেই কেন্দ্রের এই শিক্ষানীতিকে শিক্ষার কেন্দ্রীকরণের চেষ্টা বলে অভিযোগ করেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতিকে ব্যবহার করে কেন্দ্র যেমন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ ও বিলগ্নিকরণের মতো বেশ কিছু সিদ্ধান্ত একতরফা ভাবে চাপিয়ে দিয়েছে, শিক্ষার ক্ষেত্রেও কেন্দ্র অনুরূপ পথেই পা বাড়ালো।

সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি কেন্দ্রকে নিশানা করে প্রশ্ন রেখেছেন যে, সংবিধান অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ বিষয়, সেখানে রাজ্যগুলির সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা ছাড়াই কেন্দ্র কিভাবে এই ‘একতরফা শিক্ষা নীতি’ ঘোষণা করলো? কেন্দ্রের এই শিক্ষানীতির মধ্যে তিনি শিক্ষার কেন্দ্রীকরণ, গৈরিকীকরণ এবং বাণিজ্যকরণের চিত্র দেখতে পেয়েছেন। এসএফআই, এআইএসএ-র মতো বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলির কণ্ঠেও একই অভিযোগ শোনা গেছে।

তবে গতকাল মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ নিশঙ্ক ও কেন্দ্রীয় শিক্ষাসচিব অমিত খার জানিয়েছে যে, এই শিক্ষানীতি চূড়ান্ত করার পূর্বে সংসদ, রাজ্য, শিক্ষামহল সহ সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষের সঙ্গে যথেষ্ট চর্চা করা হয়েছে। এমনটাও নয় যে, আগামী কাল থেকেই এই ব্যবস্থা বলপূর্বক কার্যকরী করা হবে। প্রকৃতপক্ষে এই নীতি নিয়ে কেন্দ্রসরকার আজ-কালের মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও, এই ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে প্রয়োগের জন্য কেন্দ্রকে এখনো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। কারণ, উচ্চশিক্ষার বিষয়ে কেন্দ্রের ক্ষমতা বেশি থাকলেও, উচ্চশিক্ষায় ব্যাপক বদল আনতে গেলে প্রচলিত আইনের সংশোধন প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন রাজ্যের সাহচর্য।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

সেক্ষেত্রে রাজ্যগুলির শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গেও আলোচনা চালাতে হবে কেন্দ্রকে।আর এটা নিয়েই বিরোধীদের অভিযোগ।তাদের দাবি, শিক্ষাব্যাবস্থার পরিবর্তন আনতে রাজ্যের সঙ্গে যখন কেন্দ্রকে আলোচনা করতেই হবে, তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বেই কেন্দ্র কেন নিজের নীতি ঘোষণা করে দিল? সংসদ খোলা পর্যন্ত কেন অপেক্ষা করেনি কেন্দ্র? কেন্দ্রের এই নতুন শিক্ষানীতিতে শিক্ষার বাণিজ্যকরণ কতটা হবে, কতটা ব্যয়বহুল হবে শিক্ষাব্যবস্থা , উচ্চ শিক্ষার এই ব্যবস্থায় গুরুত্ব কতটা থাকবে – এই সবদিক বিচার করেই তাঁদের মতামত জানাবেন বিরোধীরা।এ প্রসঙ্গে কেন্দ্র জানিয়েছে, গত পাঁচ বছর ধরে আলোচনা চালানো হচ্ছে এ ব্যাপারে। কোন রাজ্য চাইলে এ ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানাতেই পারে।

কেন্দ্রের নতুন এই শিক্ষানীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের মনেও দেখা দিচ্ছে বিস্তর প্রশ্ন। যেমন, দেশের সমস্ত স্কুলেই যদি পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত স্থানীয় ভাষায় শিক্ষাদান করা হয়, তবে ভিন রাজ্য থেকে বদলি হয়ে আসা কোন ব্যক্তির পুত্র বা কন্যা নতুন জায়গায় নতুন স্কুলে এসে ক্লাসের পড়া বুঝবে কি করে? অন্যদিকে এ বছর থেকে কি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এম. ফিলে ভর্তি নেওয়া বন্ধ করে দেবে? আবার স্থানীয় ভাষার নাম করে কি কেন্দ্র শিক্ষা ব্যবস্থায় কৌশলে হিন্দির আধিপত্য কায়েম করবে না তো ? তাছাড়া কবে থেকে এই নতুন শিক্ষাব্যবস্থা চালু হবে তও স্পষ্ট করেনি কেন্দ্র। বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলেছেন যে, এক দেশ, এক ধর্ম, এক ভাষার মতো কেন্দ্র এবার রাজ্যগুলির নিজস্ব মতামতকে দমন করে দেশজুড়ে এক শিক্ষার ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!