তৃণমূলের নয়নের মনি হলেও সংসদীয় এলাকায় ক্রমশ ক্ষোভ বাড়ছে সাংসদকে নিয়ে – চাপ বাড়ছে শাসকদলের কলকাতা রাজ্য August 13, 2019 লোকসভা নির্বাচনে সারা রাজ্যে মোদি ঝড় বইলেও এবং প্রাক ফলাফলের সমীক্ষায় কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র বিজেপির দখলে যাবে বলে দেখানো হলেও শেষ পর্যন্ত নিজের কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন মহুয়া মৈত্র। তারপর কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে থেকে তিনি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে গেলে একাধিক বিষয় নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তার বক্তব্য গোটা তৃণমূল পরিবারকে অক্সিজেন যুগিয়েছে। এমনকি তার তথ্যমূলক বক্তব্য জাতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে যেমন শিরোনাম হয়েছে, ঠিক তেমনই একটা আলাদা ফ্যান ক্লাবও তৈরি হয়েছে সেই মহুয়াদেবীর। তবে সাংসদ হওয়ার পর থেকে এলাকায় সেইভাবে এই মহুয়া মৈত্রকে দেখতে পাওয়া না যাওয়ায় দলের নেতাকর্মীরাই এখন তার ওপর বিরক্তি প্রকাশ করতে শুরু করেছেন। বস্তুত, ভোটের আগে তৃণমূলের যে সমস্ত প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী এবং নুসরাত জাহান নিয়ে ট্রোল হচ্ছিল, ভোটের পরে তারা সাংসদ হওয়ার পর তাদের প্রায়ই সংসদ এলাকায় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সেইখানে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়েও মহুয়া মৈত্র নিজের সংসদীয় ক্ষেত্রে এহেন অনুপস্থিতি অনেকটাই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে বলে মনে করছে তৃণমূলের একাংশ। এদিন এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের এক ব্লক নেতা বলেন, “এই রকম চললে দিল্লি সামলাতে গিয়ে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নদীয়া সামলানো মুশকিল হবে। এখন তো আমাদের মহুয়ার দর্শন পেতে ‘কোথায় খুঁজে পাব তারে’ বলে বেড়াতে হচ্ছে।” তবে শুধু দেখা পাওয়াই নয়, কোনো সমস্যা হলে ফোন করলেও তাকে ঠিকমতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ দলীয় নেতৃত্বদের একাংশের। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন এই প্রসঙ্গে পলাশীপাড়ার বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, “সেই যে উনি সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি গেলেন, তারপর থেকে আর কোনভাবেই ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ফোন করলে ধরছেন না। সাধারণ মানুষের সমস্যার পাশাপাশি বিভিন্ন সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিতেও সমস্যা হচ্ছে।” অন্যদিকে নাকাশিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক কল্লোল খাঁ বলেন, “যে কর্মীদের ওপর ভরসা করে তিনি ভোটে জিতলেন, সেই কর্মীরাই এখন তাকে পাচ্ছেন না। বিষয়টি আমি নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” অন্যদিকে এই ব্যাপারে নদীয়া জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তকে জিজ্ঞাসা করলেও তিনি এর কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে সাংসদের পাশাপাশি মহুয়া মৈত্র কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতিও। ফলে তিনি যদি দলে সময় না দেন, তাহলে দলের সংগঠনেও তো অনেকটাই তার প্রভাব পড়বে। এদিন এই প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, “উনি সংসদে ব্যস্ত থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে। ফিরলে পুরোদমে কর্মসূচি নেওয়া হবে। তবে সংসদের অধিবেশন চলাকালীন মহুয়া দিল্লিতে থাকলে যাতে সাংগঠনিক সমস্যা না হয়, তার জন্য একটি শক্তিশালি জেলা কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে।” এদিকে জেলার সিংহভাগ নেতাদের অভিযোগ অনুযায়ী মহুয়াদেবী ফোন ধরেন না বলে জানা গেলেও এদিন এই সমস্ত বিষয় নিয়ে মহুয়া মৈত্রকে ফোন করলেও তিনি সত্যি সত্যিই তার ফোনটি ধরেননি। সব মিলিয়ে বিপুল ভোটে সাংসদ হয়ে সংসদে যাওয়ার পর থেকে এলাকায় দেখাই মিলছে না কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের। যা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে। আপনার মতামত জানান -