বিজেপি বাংলাকে ‘অতিস্পর্শকাতর’ আর্জি জানাতেই ক্ষোভে ফুঁসছে মমতা সহ তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব কলকাতা বিশেষ খবর রাজ্য March 14, 2019 পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত বুথকেই অতিস্পর্শকাতর দাবী করে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের উদাহরণ টেনে বলে এসেছে বাংলায় আইনশৃঙ্খলা অবস্থা শোচনীয়। আর সেজন্যেই লোকসভা নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠুভাবে করতে প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েত করার দাবী জানিয়ে এসেছে তাঁরা। পাশাপাশি বাংলার সংবাদমাধ্যমকে শাসকদলের চাপমুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে দেওয়ার জন্যে মিডিয়া অবজারভার নিয়োগ করার দাবীও জানিয়ে এসেছে বিজেপির রাজ্য এবং কেন্দ্রের নেতারা। লোকসভা ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশিত হওয়ার পর বিজেপির এধরণের অভিযোগ সামনে আসায় সমালোচনায় সরব হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটের তৃণমূলের কার্যালয় থেকে সরাসরি গেরুয়া শিবিরকে তোপ দাগলেন তৃণমূল নেত্রী। লোকসভা ভোটের মনোনীত তৃণমূল প্রার্থীদের নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে বিশেষ বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি দাবী করলেন বিজেপি বাংলার মানুষ এবং পশ্চিমবঙ্গকে অপমান করেছে। পাশাপাশি এটাও জানান, এর জবাব বাংলার মানুষ ভোটবাক্সে দেবে। বাংলার প্রতিটি ভোট মোদীর বিরুদ্ধে যাবে। বিজেপি সরকারকে ‘মেয়াদ ফুরানো’ সরকার বলে দাবী করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। বিজেপি মিথ্যা কথা বলছে।’ এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরার ভোটকে কটাক্ষ করেন। বিজেপি শাসিত রাজ্য ত্রিপুরার ভোটে কীভাবে ৯৮% আসনে বিজেপি ভোট পায় সে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পাশাপাশি রাজস্থানে বিজেপির শাসনকালে ভোটের পরিস্থিতি নিয়েও সরব হন তিনি। বলেন, ‘বেছে বেছে বাংলাকেই টার্গেট করা হয় অপমান করার জন্য। মোদী-অমিত শাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই এই আক্রমণ চলছে। কিন্তু আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। ওঁদের কোনও রাজনৈতিক দল বলেই মনে করি না।’ আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এছাড়া বাংলার সংবাদমাধ্যমের উপরও পর্যবেক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টির বিরোধীতা করে এর বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা উচিৎ প্রেস ক্লাবগুলোর। তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য, ভোটের আগে সাংবাদিকদের ভয় দেখাচ্ছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি কোলকাতার মেয়র তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও বিজেপির এই দাবীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন। নেত্রীর কথায় সুর মিলিয়ে তিনিও বলেন, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অপমান করেছে। পশ্চিমবঙ্গে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয় বলেই দাবী করলেন তিনি। দলনেত্রীর দেখানো পথেই রীতিমত ক্ষোভে ফুঁসছেন তৃণমূল নেত্রীর একান্ত অনুগত সৈনিক। বিজেপিকে পাল্টা দিতে আরো জানালেন, আসলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির সংগঠন পোক্ত নয়। তাই ভয় পেয়ে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করে ফায়দা লুটতে চাইছে তাঁরা। কমিশনের কাছে গিয়ে স্পর্শকাতর বুথের কথা বলে এসেছে। কিন্তু বিজেপির এ অভিসন্ধি সফল হবে না বলেও জানিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, এবারের লোকসভা ভোটেই কেন্দ্র থেকে বিজেপি সরকার উৎখাত হবে। পুরমন্ত্রীর কটাক্ষ, ”বিজেপি নিজেই স্পর্শকাতর হয়ে গিয়েছে। তাকে দেখলে এখন লোকেরা ভয় পাচ্ছে।” সেই কারণেই তিনি প্রশ্ন তুলেছেন যে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে অপমান করার অধিকার বিজেপিকে কে দিল? মন্ত্রী জানালেন, ”আমরা এখানে ভালো আছি, সুখে আছি।” একইসঙ্গে, নির্বাচন কমিশনকেও সতর্ক বার্তা দিয়েও বললেন, নির্বাচন কমিশন যদি বিজেপির কথায় প্রভাবিত হয় তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। এই প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটা নিয়েই ভোটের আবহে বাড়তি গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। আপনার মতামত জানান -