প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্কের তিক্ততা কারও অজানা নয়। নতুন রাজ্যপাল হওয়ার পর থেকেই জাগদীপ ধনকর নানা বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেন। আইন-শৃঙ্খলা থেকে শুরু করে শিক্ষা, নানা বিষয় তুলে ধরে প্রতিনিয়ত রাজ্য সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। যার ফলে ক্রমাগত রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের দূরত্ব বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। বর্তমানে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, এই রাজ্যপাল বিজেপির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন।

আর এই পরিস্থিতিতে এবার রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কথা জানালেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। সূত্রের খবর, এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক থেকে একথা জানিয়ে দেন তৃণমূলের এই হেভিওয়েট সাংসদ। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলাজুড়ে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজ্য সরকারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব হতে দেখা যায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে। তার জেলা সফর থেকে শুরু করে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। তৃণমূলের অনেকেই দাবি করেন, রাজ্যপাল সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে কাজ করছেন না। তিনি আসলে পদ্মপাল হিসেবে কাজ করছেন। এমনকি রাজ্যপালের অফিস বিজেপির অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন শাসক দলের নেতাকর্মীরা। আর এই পরিস্থিতিতে ক্রমাগত রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে রাজ্য সরকারের দূরত্ব বাড়তে শুরু করে।

রাজ্যের সার্বভৌমত্ব নিয়ে উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। আর এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন বিজেপি ক্রমাগত তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াতে তৎপর, ঠিক তখনই সেই রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে উদ্যোগ গ্রহণ করলেন হেভিওয়েট তৃণমূল সাংসদ। যা বর্তমান রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন একাংশ। জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে অপসারণ দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের আইন মোতাবেক রাজ্যপাল কাজ করছেন না।

অনেকে বলতে শুরু করেছেন, আসলে রাজ্যের নানা জ্বলন্ত বিষয় নিয়ে রাজ্যপাল নাক গলানোর কারণে কার্যত অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্য সরকার। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে একদিকে বিরোধীদের চাপ এবং অন্যদিকে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান নানা বিষয়ে প্রশ্ন করায় কার্যত অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল সরকারের। যার ফলে শাসকদলের নানা নেতাকর্মীরা প্রকাশ্য সভায় থেকে অনেক ক্ষেত্রে সেই রাজ্যপালকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন। যা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই পরিস্থিতিতে সেই রাজ্যপালকে অপসারণের দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে তৃণমূল সাংসদের এই দরবার বলে দাবি একাংশের। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, আসলে রাজ্য সরকারের বিরোধীতা করলেই বিরোধীদলকে কণ্ঠরোধ করা হয়।

কিন্তু সাংবিধানিক প্রধান প্রশ্ন করায় তার কণ্ঠরোধ করতে পারে না সরকার। আর তাই এখন নির্লজ্জভাবে তৃণমূল সাংসদ সেই রাজ্যপালকে সরানোর জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করতে শুরু করেছেন। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে বলে দাবি করছেন বিরোধীদের অনেকে। তবে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখররায় রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করলেও এই ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের