এখন পড়ছেন
হোম > বিশেষ খবর > দলের মধ্যে দুর্নীতি ও ‘বেনোজলের’ অভিযোগ তুলে বিজেপির পথে তৃণমূলের দাপুটে নেত্রী

দলের মধ্যে দুর্নীতি ও ‘বেনোজলের’ অভিযোগ তুলে বিজেপির পথে তৃণমূলের দাপুটে নেত্রী

ডাবগ্রাম ফুলবাড়ী মানেই তৃণমূলের দাপুটে মন্ত্রী গৌতম দেবের এলাকা। কিন্তু সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে তথা তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে নেত্রী মমতা ব্যানার্জীর অনুপ্রেরণায় দলকে এলাকায় পরিচিতি করিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল কাণ্ডারি ছিলেন দাপুটে তৃণমূল নেত্রী তথা রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিখা চ্যাটার্জী। কিন্তু দলের মধ্যে দুর্নীতি এবং বেনোজল নিয়ে মুখ খুলে শাসকদলের অস্বস্তি তীব্র বাড়িয়ে দল ও পঞ্চায়েত সমিতি থেকে পদত্যাগ করলেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই তিনি রাজগঞ্জের বিডিওর কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন, এমনকি সেই চিঠির কপি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও তৃণমূলের জেলা সভাপতির কাছেও পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।
শারীরিক কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেও নেত্রী শিখা চ্যাটার্জী জানান, বিভিন্ন দলকে ডুবিয়ে যাঁরা তৃণমূলে এসেছেন তাঁদেরকেই প্রধান্য দিচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। প্রবীণ ও দলের কাজ থেকে যাঁরা বসে গিয়েছেন তাঁদের কোনও গুরুত্বই দিচ্ছেন না তাঁরা, শুধু টাকাকেই প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে। এই দল মমতা ব্যনার্জী তৈরি করতে চাননি, আর তাই মনোকষ্ট হলেও দলের মধ্যে এই নোংরামি সহ্য করতে না পেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন। দিদি যে আদর্শ নিয়ে দল তৈরী করেছিলেন, সেই দলকে নোংরা করছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা কর্মীরা। টাকার নেশায় তারা দলে নামমাত্র থেকে কুলষিত করছে তৃণমূলকে আর তাদের মদত দিচ্ছেন দলের নেতা ও মন্ত্রীরা। তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন দল থেকেই তৃণমূলে যোগদান করে অনেকেই। আর এদের মধ্যে বেশীর ভাগই রয়েছে জমি মাফিয়া বা জমি দালালরা। নতুনরা দলের প্রবীণ নেতৃত্বের কোন কথাতেই কর্নপাত করে না।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই অবৈধ নির্মাণ নিয়ে বিরোধিতা করায় তাঁকে বেধরক মারধোর করে স্থানীয় কিছু জমির দালাল। এই ঘটনায় ভক্তিনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু, শিখা চ্যাটার্জীর অভিযোগ, দল ওই দালালদের বহিস্কার না করে জামিনের ব্যবস্থা করে দেয়। এর ফলেই তিনি অত্যন্ত অপমানিত বোধ করেন এবং দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে এদিন পদত্যাগ করলেও, তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক গন্তব্য নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি নেত্রী। তবে আজ কিছুদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা মুকুল রায়ের উত্তরবঙ্গ সফর শুরু হচ্ছে, আর তার আগেই বিস্ফোরক সব অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগ রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট অর্থবহ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে নেত্রী স্পষ্ট করে কিছু না বললেও, প্রত্যক্ষভাবে না হলেও এদিন পরোক্ষে দলবল নিয়ে বিজেপিতে যোগদানের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই চিত্রটা স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞমহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!