কেন্দ্রীয় বাজেটে রাজ্যের প্রাপ্তি প্রায় শূন্য! বিজেপির নবান্ন দখলের স্বপ্নে বড়সড় ধাক্কা? কলকাতা জাতীয় রাজ্য February 2, 2020 অনেকে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন তিনি বাংলার জন্য অনেক রেল প্রকল্পের ঘোষণা করেছিলেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনমুখী ঘোষণাতেই বিগত বাম সরকারের অস্বস্তি বৃদ্ধি পেয়েছিল। আর তার ফলেই ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তৃণমূল নেত্রী। যার ফলস্বরুপ আরও অনেক কারণের মধ্যে এটাও একটা কারণ যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লাগাতার বাংলার জন্য রেল প্রকল্প ঘোষণার জন্যই তিনি পরবর্তীতে বাংলার ক্ষমতা দখল করেছেন। কিন্তু বর্তমানে ভারতীয় জনতা পার্টি সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে বাংলার ক্ষমতা দখল করার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাংলা দখলের জন্য বিজেপি চেষ্টা করলেও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাজেট, কোথাও বাংলার জন্য বিশেষ কোনো ঘোষণা না থাকায়, সেই বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই এই বাজেট নিয়ে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো কেন্দ্রের শাসক দলের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিতে শুরু করেছে। কংগ্রেস থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস, এমনকি বামফ্রন্টও এই বাজেটকে হতাশাজনক বাজেট বলে ব্যাখ্যা করেছেন। শুধু তাই নয়, কর্পোরেটদের জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার এবারের বাজেট করেছে বলে দাবি করেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। যা নিঃসন্দেহে বিজেপিকে কিছুটা হলেও বিপাকে ফেলেছে। তবে বিরোধীরা এই দাবি করলেও, বঙ্গ বিজেপির তরফ থেকে এই বাজেটকে সাধারণ মানুষের বাজেট বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এদিন বিরোধীদের কটাক্ষের মাঝেই বাজেটের প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজেপির সম্পাদক রহুল সিনহা বলেন, “বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে। আয়করেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু বিরোধীদের দাবি, যেভাবে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের সময় এলআইসি বিক্রি করে দেওয়ার কথা শোনা গেল, তাতে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, “কোনো বেসরকারিকরণ হচ্ছে না। বরং এর ফলে এলআইসিতে পুঁজি আসবে। ভিত আরও মজবুত হবে।” কিন্তু বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক নেতা বিজেপির বাংলা দখল নিয়ে এই বাজেট পেশের পর আরও বেশি করে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। তৃণমূলের একাংশ বলছেন, যখন বাংলা থেকে বিজেপি 18 জন সাংসদ পেল, তখন কেন্দ্রীয় বাজেটে কেন বাংলার জন্য তাদের কোনো বিশেষ ঘোষণা নেই! এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার বলেন, “আলাদা করে কোনো রাজ্যের বিষয় নয়।” তিনি জানান, “সারাদেশের মতো বাংলাও এই বাজেটের সুফল পাবে। তৃণমূলের সরকার আয়ুষ্মান ভারত এবং কৃষক সম্মাননিধির মত কেন্দ্রীয় প্রকল্প বাংলায় চালু করতে দেয়নি। ফলে সারাদেশ এর সুফল পেলেও, বাংলার মানুষ পাচ্ছে না।” তবে সুভাষবাবু নিজের মত ব্যাটিং করে বিরোধীদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করলেও, কেন্দ্রীয় বাজেট নিয়ে বাংলার বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যে বেশি করে সোচ্চার হবে এবং বিজেপিকে কোণঠাসা করবে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই। বিশেষ করে বাংলা থেকে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা বেড়ে ১৮ হওয়ার পর, সকলেই আশা করেছিলেন – বাংলার অর্থনীতি থেকে শুরু করে শিল্প বা কর্মসংস্থান নিয়ে বিশেষ দিশা দেখাবে গেরুয়া শিবির। বিশেষ করে বাংলার রুগ্ন শিল্প নিয়ে থাকবে কোনো সুদূরপ্রসারী দিশা। কিন্তু, সেই অর্থে বাংলার প্রাপ্তিযোগ শূন্য। আর, এখানেই প্রশ্ন উঠছে – এই প্রাপ্তিহীন বাজেট কি বিজেপির নবান্ন দখলের স্বপ্নে কার্যত জল ঢেলে দিল? এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -