প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – আশা করা হয়েছিল, 16 তম অধিবেশনের শেষ দিনে হয়ত বা শাসক-বিরোধী সৌজন্যের মধ্যে দিয়েই সমাপ্ত হবে অধিবেশন। কিন্তু শেষটা যে খুব একটা ভালো হল না, তা বলাই যায়। আজ 16 তম অধিবেশনের শেষ দিন ছিল। যেখানে বাজেট বিতর্কের উপর জবাবি ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

কিন্তু সেই ভাষণ দিতে গিয়ে একদিকে যেমন বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব দিতে হল তাকে, ঠিক তেমনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর করা অভিযোগকেও খণ্ডন করলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান। যেখানে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে “মিথ্যাবাদী” বলে আক্রমণ করতে দেখা গেল তাকে। স্বাভাবিকভাবেই 2016 সালে গঠিত বিধানসভার শেষ অধিবেশনেও যে তিক্ততা চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

হাতে আর মাত্র কিছুদিন। তারপরই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যাবে। 2016 সালে গঠিত হয়েছিল 16 তম বিধানসভা। সামনে নির্বাচন। তাই তার আগে আজ সেই অধিবেশনের শেষ দিন ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই এই অধিবেশনের শেষ দিন কেমন হয়, তার দিকে নজর ছিল সকলেরই। অবশেষে এদিন বক্তব্য রাখতে উঠে প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর করা মন্তব্যের জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মোদীর মিথ্যা বলা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন বলছে, কৃষকরা পাচ্ছে না। ডেটা দাওনি, তাই করতে পারিনি। ডেটা দাও, ভেরিফাই করে দেব। তুমি টাকা দাও। আমি চাই ভাগ চাষীরাও পাক।” বলা বাহুল্য, রবিবার হলদিয়ায় এসে রাজনৈতিক সভার মধ্যে দিয়ে তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবারের নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যেই যে প্রধান লড়াই হতে চলেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সেক্ষেত্রে কৃষকদের জন্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে প্রকল্প করা হলেও, রাজ্য সরকার তা লাগু করছে না বলে অভিযোগ ছিল বিজেপির। প্রধানমন্ত্রী গতকাল রাজ্যে এসে সেই বিষয় তুলে ধরেছেন। কিন্তু এদিন বিধানসভার শেষ অধিবেশনে সেই কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে কার্যত “মিথ্যেবাদী” বলে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাকে কেন্দ্র করে বিজেপি বনাম তৃণমূলের দ্বৈরথ আরও চরম পর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

পর্যবেক্ষকদের একাংশ বলছেন, আগামী নির্বাচনে কাদের মধ্যে প্রধান লড়াই হতে চলেছে, তা অধিবেশনের শেষ দিনেই কার্যত পরিষ্কার হয়ে গেল। বাম এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তৃণমূলের যতই বিরোধিতা করা হোক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিজেপিই প্রধান শত্রুপক্ষ বলে বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। এক্ষেত্রে তার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে “মিথ্যেবাদী” বলায় বিজেপিকে নিয়ে যে কিছুটা হলেও চিন্তিত তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব, সেই ব্যাপারে একপ্রকার নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা।

আর সেই কারণে বিধানসভার অধিবেশনের শেষ দিনে খাতায়-কলমে বর্তমান বিরোধী দল বাম এবং কংগ্রেসকে সেভাবে পাত্তা না দিয়ে বিজেপির বিরোধিতায় সরব হতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যার ফলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে এসে তৃণমূল সরকারকে আক্রমণ করায় কিছুটা হলেও চাপে পড়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তাই তার পাল্টা বিধানসভার অধিবেশন শেষদিনকে বেছে নিয়ে জবাবী ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে “মিথ্যেবাদী” বলে শোরগোল তুলে দিলেন বাংলার প্রশাসনিক প্রধান। স্বাভাবিক ভাবেই গোটা পরিস্থিতি এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।