ভাঙড় কি ক্রমশ তৃণমূলের হাতের বাইরে? শাসকদলের পার্টি অফিসে ঢুকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল বিরোধীরা! তৃণমূল নদীয়া-২৪ পরগনা রাজনীতি রাজ্য November 1, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – ভাঙ্গরে ক্রমশ বাড়ছে তৃণমূলের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীদের বিরোধ। গত বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে মারামারি, ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে এলো ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামী তথা আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্মীদের বিরুদ্ধে। অকস্মাৎ আক্রমনে ও ভাংচুরের ঘটনায় আহত হলেন চারজন তৃণমূল কর্মী। আলামত মোল্লা নামের কর্তব্যরত এক সিভিক ভলেন্টিয়ার এই ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও রেকর্ড করতে গেলে, তাঁকেও প্রচণ্ডভাবে মারধর করা হলো। প্রচন্ড মারের চোটে তাঁর মাথা ফেটে যায়। সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাঙড় থানার বোদরা বাস স্ট্যান্ডের কাছে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা এক বৈঠকের আয়োজন করে। বৈঠক শেষ হয়ে গেল কয়েক জন তৃণমূল কর্মী নিমতলার পার্টি অফিসে বসে ছিলেন। এই সময় আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্মী-সমর্থকরা অকস্মাৎ সেখানে এসে উপস্থিত হয়। অভিযোগ উঠেছে, লাঠি, বাঁশ, রড নিয়ে তারা ভাঙচুর চালায়। তৃণমূল কর্মীরা তাদের বাধা দিলে তাদেরকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়। এই ঘটনায় আহত ইলিয়াস মোল্লা নামের জনৈক তৃণমূল কর্মীকে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই গন্ডগোলের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়। পুলিশের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন জন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে সেদিন। প্রসঙ্গত তৃণমূলের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীদের বিরোধ চরমে উঠেছে। আব্বাস সিদ্দিকী বেশ কিছু আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। ভাঙড় ও ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা এলাকায় দলের সংগঠনকে মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি।গত বুধবার চাঁদপুরে আব্বাস সিদ্দিকীর এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছে, এই সভায় তার দলের কর্মীদের আসতে বাধা দেয়, তৃণমূলের বেশ কিছু কর্মী। তারপর থেকেই তৃনমূলের সঙ্গে আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীদের বিরোধ ও গন্ডগোল চলছিল। আব্বাস অনুগামীরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ এনে পথ অবরোধও করেছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে তৃণমূল পার্টি অফিসে হামলা চালালেন আব্বাস সিদ্দিকীর অনুগামীরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সেদিন রাতেই ভাঙচুর হওয়া তৃণমূলের পার্টি অফিস দেখতে গিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান যে, তাঁরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছেন। এই ঘটনার রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবেন তাঁরা।এই ঘটনার বিষয়টি তাঁরা শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে ভাঙড় ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শাজাহান মোল্লা জানান যে, আব্বাস সিদ্দিকী বিধান সভা ভোটে সিপিএম ও বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে, ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে বিভাজন করতে চাইছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, এলাকার পরিবেশকে অশান্ত করে দিতেই তৃণমূল কর্মীদের আক্রমণ করেছে তারা। তবে, এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভাবে অস্বীকার করলেন আহলে সুন্নাতুল জামাতের ভাঙড় ১ ব্লকের সভাপতি শরিফুল মোল্লা। এ প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, ” ওরা বুঝে গিয়েছে, মানুষ ওদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সে কারণেই চক্রান্ত করে আমাদের ফাঁসাতে চাইছে। ওরা নিজেরাই নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আমাদের বদনাম করতে চাইছে। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’ গত শুক্রবার বিকেলে এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শওকত মোল্লার নেতৃত্বে নিমতলা থেকে শাঁকশহর বাজার পর্যন্ত এক প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনো পর্যন্ত তিন জনকে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, ভাঙ্গড় ক্রমশ শাসক দলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ক্রমশ শাসক দলের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ভাঙ্গড়। আপনার মতামত জানান -