প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কথা ছিল সোমবারের মিছিলে তারা অংশগ্রহণ করবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেখানে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনার পর থেকেই বিজেপির পক্ষ থেকে আর শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে তেমনভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণের জন্য জোরাজুরি করা হবে না বলেই নানা মহলের তরফের খবর আসতে শুরু করে।

স্বাভাবিক ভাবেই যদি রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যান তারা, তাহলে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত আদ্যপ্রান্ত রাজনৈতিক মানুষ কিভাবে থাকবেন, তা নিয়ে তৈরি হয় প্রশ্ন। আর এই পরিস্থিতিতে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে এবার ময়দানে নামতে দেখা গেল সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যেখানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সামনে এসে মিছিলে না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে দেখা গেল তাকে। মূলত শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি এই মিছিলে উপস্থিত থাকতে পারেননি বলে জানিয়ে দেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তার এই বক্তব্য কতটা সত্যি, তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছে জল্পনা।

সূত্রের খবর, এদিন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কালকের মিছিলে যেতে পারলে খুব আনন্দ হত। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে যেতে পারিনি। বিকেল তিনটের সময় চেষ্টা করেছিলাম কোনভাবে যদি রেডি হয়ে বের হওয়া যায়। কিন্তু শোভনবাবুর একশোর মত জ্বর ছিল। তা সত্ত্বেও উনি চেষ্টা করেছিলেন, 10 মিনিটের জন্য যদি যাওয়া যায়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি।” স্বাভাবিকভাবেই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে এবার নতুন করে জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

একাংশ বলতে শুরু করেছেন, বিজেপির পক্ষ থেকে এই কর্মসূচিতে তাদের ডাকা হলেও, শেষ পর্যন্ত তাদের অনুপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে জল্পনা। বিজেপি তাদের এই কর্মসূচিতে ডাকলেও, শেষ পর্যন্ত তারা সেখানে অনুপস্থিত থাকায় পরবর্তীতে আর কোনো কর্মসূচিতে শোভন চট্টোপাধ্যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেভাবে ডাকা হবে কিনা, তা অবশ্যই ব্যাপক সংশয় তৈরি হয়েছিল। আর এই পরিস্থিতিতে গুরুত্ব পেতে এবং ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে অসুস্থতার কারণ সামনে নিয়ে আসলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দাবি একাংশের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, এই শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগদান করার পর কলকাতা শহরে তাঁর হাত ধরেই তৃণমূলে ভাঙন ধরাবে বলে মনে করেছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু নানা কারণে বিজেপিতে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় গুরুত্ব না পেলে তিনি রাজনীতিতে সেভাবে সক্রিয় হবেন না, তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন শোভনবাবু। পরবর্তীতে তাকে সক্রিয় করার জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি।

তবে সাম্প্রতিক কালে সেই শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুরুত্ব দেয় ভারতীয় জনতা পার্টি। চেষ্টা করা হয়েছিল তাদেরকে সামনের সারিতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। কিন্তু সেই মিছিলেও শোভনবাবু এবং তার বান্ধবী অনুপস্থিত থাকায় তাদেরকে আর বেশি জোর করবে না বিজেপি বলেই শোনা যেতে শুরু করেছে। আর এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির কর্মসূচি তেমনভাবে অনুপস্থিত থাকেন তারা, তাতে তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তাই এমতাবস্থায় অসুস্থতার কারণকে সামনে এনে তারা সেই জন্য উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানিয়ে দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বিজেপির পক্ষ থেকে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই ধরনের যুক্তি কতটা মানা হয়, কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় গোটা পরিস্থিতি, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।