এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > কেন বিজেপি বাংলায় ভালো ফল করতে পারে? কি বলছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা?

কেন বিজেপি বাংলায় ভালো ফল করতে পারে? কি বলছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা?


আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই রাজ্যকেই পাখির চোখ পড়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বাংলার 42 টি লোকসভা আসনের মধ্যে 22 টি আসন তাঁরা নিজেদের দখলে রাখবে বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ মোদি-শাহ জুটি।

কিন্তু পাল্টা রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল অবশ্য বিজেপির সেই দাবিকে নস্যাৎ করে বলেছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের 42 টি মধ্যে 42 টি আসনই তাঁরা নিজেদের দখলে রাখবে।কিন্তু বিনা যুদ্ধে সূচাগ্র মেদিনী দিতে রাজি নন পদ্ম শিবিরের নেতারা। কিন্তু ঠিক কোন ম্যাজিকে তৃণমূল কংগ্রেসের গড় হিসেবে পরিচিত এই বাংলার 22 টি আসন দখল করবে বিজেপি?

গেরুয়া শিবিরের মতে, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের সন্ত্রাস সহ একাধিক ইস্যুতে সেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষনা করে লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্য থেকে রেকর্ড সংখ্যক আসুন নিজেদের ঝুলিতে পুড়বে তাঁরা। তবে মূলত পাঁচটি কারণ দেখিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধেই লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ঝাঁপাতে চাইছে পদ্ম শিবির।

যার মধ্যে রয়েছে- ১) সরকারি কর্মচারীদের ডিএ ও পে কমিশন না পাওয়া নিয়ে তৈরি হওয়া ক্ষোভ: প্রসঙ্গত রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়া না নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন। আর পশ্চিমবঙ্গে যখন সরকারি কর্মচারীদের এহেন অবস্থা ঠিক তখনই কেন্দ্রের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দিয়ে অনেকটাই মন যুগিয়ে চলেছে দেশের বিজেপি সরকার। আর সেই দিক থেকে রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আরও দিনকে দিন ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের। এবার সরকারি কর্মচারীদের সেই সেন্টিমেন্টকে হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসক দলকে চাপে ফেলে লোকসভা নির্বাচনে নামতে চায় বিজেপি।

২) শিক্ষকদের পিআরটি স্কেল না পাওয়া নিয়ে তৈরি ক্ষোভ: শুধু সরকারি কর্মচারীরাই নয় শিক্ষকদের পিআরটি স্কেল নিয়ে তৈরি হওয়া ক্ষোভকে আরো চাগাড় দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে সেই শিক্ষকদেরও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে পাশে পেতে চায় গেরুয়া শিবির।

৩: রাজ্যজুড়ে তোলাবাজি সিন্ডিকেট এবং ছাত্র ভর্তিতে দুর্নীতি: দীর্ঘদিন ধরেই এই রাজ্যের বিরোধীরা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে, এই রাজ্যে শাসক দলের নেতাকর্মীদের বদান্যতায় দিনকে দিন তোলাবাজ ও সিন্ডিকেট রাজ বেড়েই চলেছে। এমনকি বিরোধীদের সেই অভিযোগকে সত্যি করে বিভিন্ন জায়গায় সেই তোলাবাজ এবং সিন্ডিকেট রাজ আটকাতে সাধারণ মানুষকে হেনস্থার শিকারও হতে হয়েছে। আর যেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

অন্যদিকে কলেজে ছাত্র ভর্তিতে মেধা গুরুত্ব পাবে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বার্তা দিলেও শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের দ্বারাই ভর্তি অর্থ নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলছেন অনেকে। আর যা নিয়ে কলেজে কলেজে বিরোধী ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকেও সেই শাসক দল তথা শেষ শাসক দলের ছাত্রসংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা গেছে বিরোধীদের। আর এবারের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে সেই রাজ্যজুড়ে তোলাবাজ, সিন্ডিকেট রাজ এবং কলেজে ভর্তিতে তোলাবাজিতে শাসকদলের ইন্ধনের ঘটনাকে তুলে ধরেই সাধারণ মানুষের পাশে থেকে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বাড়াতে পারে বিজেপি।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

৪) তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব: রাজ্যের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করে আগামী লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শাসক দলের দলীয় সংগঠনে ধাক্কা দিতেও মরিয়া বিজেপি। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় শাসক দলের দলীয় গোষ্ঠী কোন্দল দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আর এবারে শাসকের সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শাসকদলকে ভাঙিয়ে তৃনমূলের বিরুদ্ধে তীব্র বিষোদগার করে নিজেদের সংগঠন বৃদ্ধি করতে চাইছেন বঙ্গ বিজেপির দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়রা।

৫) মুকুল ম্যাজিক: প্রায় এক বছর হয়ে গেল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা প্রিয় ছায়াসঙ্গী হিসেবে পরিচিত মুকুল রায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। আর মুকুলবাবু বিজেপিতে যোগদান পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন সময় দাবি করেছেন যে তাঁর হাত ধরে তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রী-সাংসদেরা বিজেপিতে যোগদান করবেন। কিন্তু এই ব্যাপারে তেমন কোনো হেভিওয়েট তৃণমূল নেতাকে বিজেপিতে যোগদান করাতে না পারলেও সম্প্রতি তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে বিজেপির পতাকা হাতে ধরিয়ে রাজ্যের শাসকদলের অস্বস্তি বাড়িয়ে দিয়েছেন মুকুলবাবু।

এমনকি আগামী 19 জানুয়ারি তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশের দিন এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসকদলের অনিক হেভিওয়েট নেতা, মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়করা বিজেপিতে যোগদান করবে বলে জল্পনা উসকে দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সদর দপ্তর মুরলীধর লেনের কর্তারা। যা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলকে অনেকটাই চাপে ফেলে দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

তবে সামগ্রিকভাবে এই পাঁচটি কারণকে হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসকদলের ভোটব্যাংক ভাঙ্গার চেষ্টা করলেও বিজেপির সেই চেষ্টা আদৌ কতটা কাজে লাগে তার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে আগামী লোকসভা নির্বাচনের ভোটের বাক্স খোলা পর্যন্ত।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!