গুরুদেব সহায় – ( লাভ স্টোরি ) – কলমে-অপরাজিতা -পর্ব- ৪ অন্যান্য অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় February 8, 2020 আর ভালো লাগছে না রাজর্ষির জানে ও মাকে , এগুলো যে করবে সেটা স্বাভাবিক মায়ের জন্য। মা নিজের চাওয়াকে প্রাধান্য দিতে এগুলো করে.ইচ্ছা করে নাকি এমনটাই স্বভাবে জানে না রাজর্ষি। মায়ের এই সব কান্ড কারখানাকে ভয় খেত রাজর্ষি। কিন্তু আজ শ্রীপর্ণার ওই ম্যাসেজ টা ” ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে” – এই কথাটাকে মায়ের ভয়য়ের থেকেও বেশি ভয় পেয়েছে রাজর্ষি। আর তাই মায়ের ভয়কে ছাপিয়ে শ্রীপর্ণার কথাটা বলেছে বাড়িতে। কি হবে জেনেও বলেছে। এবার কি করবে সেটাও জানে না। যেমন শ্রীপর্ণা চাই তেমন ভাবে বিয়ে করবে হয়তো কিন্তু তারপর কি ? জানে না। চলে গেলো ঘরে। শ্রীপর্ণাকে কল করলো , ফোন তুলল না শ্রীপর্ণা। দেখবে না জেনেও মনে একটা ছোট্ট আশা নিয়ে একটা ম্যাসেজ করলো – মাকে তোমার কথা বলেছি। বলেছি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না। মা রাজি হয়নি। কিন্তু আমি বলেছি মা রাজি না হলেও তোমাকেই বিয়ে করবো। তার জন্য যা করতে হয় করবো। প্লিজ কথা বলো। দেখা করতে চাই তোমার সাথে।প্লিজ ফোনটা ধরো। ফের কল করলো রাজর্ষি না এবারেও ফোন ধরলো না শ্রীপর্ণা। কিছুক্ষন পর ফোনটা বেজে উঠলো। শ্রীপর্ণা কল করেছে ওকে। ফোন ধরলো রাজর্ষি। কেন ফোন ধরছিলে না, পাগলের মতো দিনগুলো কাটিয়েছি আমি, মরে যাবো তোমাকে ছাড়া। হ্যালো, শুনছো? আছো? শ্রীপর্ণা? ওপাশ থেকে উত্তর এলো -শুনছি। কিন্তু কি হবে আর ?এদিকে আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সামনের রবিবার দিন ঠিক করতে ছেলেদের বাড়ি যাবে আমাদের বাড়ি থেকে। আর ওদিকে তোমার বাড়ি থেকে আমাকে মানবে না। রাজর্ষি – তুমি রাজি হলে অনেক কিছু হবে। তুমি চাও না আমার হতে? চাওনা আমাকে?ভালোবাসোনা আমাকে? চুপ করে আছো কেন? বলো। শ্রীপর্ণা ? শ্রীপর্ণা – বাসি। খুব ভালোবাসি। এই কদিন আমিও তোমার মতো পাগলের মতো ওয়েট করেছি তোমার ম্যাসেজের জন্য। তুমি তোমার মাকে বলেছো নাকি ? তিনি কি বলেছেন সে সবের জন্য। কিন্তু রাজর্ষি – কিন্তু কিছু নেই। তুমি এবার তোমার বাড়িতে আমার কথা বলো। বলো তুমি আমাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না। তারপর তোমার বাড়ির লোক কি বলে জানাও। আমাকে তো তারা আগেই দেখেছেন ,জানেন ও আমাদের সম্পর্কে। রাজি না হবে কারণ নেই। আর যদি রাজি হয় সামনে যে বিয়ের দিন আছে সেদিনেই বিয়ে হবে। বাবা পাশে থাকবে আমি জানি। শ্রীপর্ণা – ঠিক আছে বলছি। কি করছো? আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - রাজর্ষি – তোমার কথা ভাবছি। খুব দেখতে ইচ্ছা করছে কাল দেখা করবে প্লিজ। শ্রীপর্ণা – আচ্ছা, বলো কোথায় যাবো রাজর্ষি – যেখানে সেদিন ব্যাঙ্ক থেকে বেরিয়ে কফি খেলাম সেখানে। শ্রীপর্ণা – আচ্ছা ১০ টায় পৌঁছাবো, ঠিক আছে। রাজর্ষি – ঠিক আছে। দরজা বন্ধ করে বাইরের বারান্দায় কথা বলছে রাজর্ষি। সেখান থেকে বাড়ির লোকজন কথা শুনতে পাবে না ,.বাবা দরজায় টোকা দিয়ে ডাকলো। ফোন রাখলো রাজর্ষি। দরজা খুলে বাইরে এলো। রাজর্ষির মা এতক্ষনে যারা তাঁর হিতাকাঙ্খী সকলকে ফোনে দুঃসংবাদটা জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁরাও অনেক স্বান্তনা দিয়েছে। কাল সকালেই অনেকে আসছে রাজর্ষিকে বোঝাতে। প্রিয়াঙ্কা পারলে এখুনিই আসতো কিন্তু ছেলের পরীক্ষা আছে কাল তাই কাল সন্ধ্যেয় আসবে। কমলবাবু – খেতে এস। অনেক রাত হয়েছে। আমি আসছি ওষুধ খেয়ে বলে ঘরে গেলো রাজর্ষির বাবা। রাজর্ষি খেতে বসলো টেবিলে। মা নেই। রাখি খেতে দিচ্ছে। রাখি লক্ষীদির মেয়ে। ওদের বাড়ির কাজের লোক। সে অন্যবাড়িতে কাজ নিয়েছে তাই মেয়েকে এদের বাড়িতে রেখে দিয়েছে। এখানেই থাকে, বাড়ির মেয়ে হয়ে গেছে।রাজর্ষি কে দাদা মানে। রাজর্ষির বিয়ে নিয়ে তারও কম শখ নেই। সেও জেঠিমাকে বলে রেখেছে দাদার বিয়েতে একটা ভালো শাড়ী আর একটা ভালো চুড়িদার,নাহলে ঘাগড়া চাই। জেঠিমা বলেওছে দেবে। রাজর্ষির সাথে তার সম্পক ঝগড়ার। কিছু কাজ করতে বললে করবে আগে বলবে তুমি করে নাও আমি পারবো না। আবার পরে করবে। রাজর্ষি ওকে কথায় কথায় রাগায়, বকে। তাই দাদাকে ভালোবাসলেও খুব একটা পছন্দের নয়। জেঠিমা তার সব চেয়ে প্রিয় এই বাড়িতে।রাত্রে রাজর্ষির বাবা তাড়াতাড়ি খেয়ে নেন. কেননা তাঁকে ওষুধ খেতে হয়। আর মা ছেলে আর রাখি পরে বসে খেতে। বাবা তখন টেবিলে বসে গল্প করে ওদের সাথে। আজ মা নেই টেবিলে। রাজর্ষি জিজ্ঞাসা করলো মা কোথায়? খাবে না ? রাখি – না খাবে না , রাগ করে বসে আছে। আমি কতবার বললাম খাবে না। জেঠু বোধ হয় ডাকতে গেছে। রাজর্ষি – না খাবার মতো কি হলো ? রাখি – কি আবার হবে ? তুমি কাকে না কাকে বিয়ে করবে আর জেঠিমা রাগ করবে না।সিরিয়ালটাও দেখা হলো না। মাথা গরম হয়ে গেলো রাজর্ষির। কানটা কস কস করে মুলে দেব। পাকা মেয়ে কোথাকার। খেতে দিচ্ছিস খেতে দিয়ে চলে যা। একদম বড়দের মাঝে নাক গলাবি না। দমবার মেয়ে নয় রাখি। সে বললো – আমার কান মুলে কি হবে ? একবার গিয়ে মাকে ডাকতে পারছো না। বলে মাছের লেজা তুলে দিলো রাজর্ষির পাতে। এটাই করে ও। যার উপর রাগ হয় তাকে বেছে বেছে সেই জিনিসটাই দেবে যেটা সে খেতে পছন্দ করে না। অন্যদিন হলে খেয়াল করতো আজ করলো না। মনে হলো এই কথাটা ঠিকই বলেছে রাখি। মাকে ডাকতে মায়ের ঘরে গেলো। দেখলো বাবা মোবাইল এ কি একটা করছে। মাথায় হাত দিয়ে মা শুয়ে আছে। মা খাবে চলো – ডাকলো রাজর্ষি। বাবা তাকালো দরজার দিকে। ফের মোবাইল নিয়ে বসলো। মা এজ এক্সপেকটেড সাড়া দিলো না। মায়ের কাছে গিয়ে ফের ডাকলো – মা খাবে চলো , কি হচ্ছে এগুলো ? মা এবার মুখ খুললো – বললো – আমার কথা তোমাকে ভাবতে হবে না। আমি খাবো না। খওয়ার ইচ্ছা নেই। রাজর্ষি- খুব আছে ,চলো, আমার খিদে পেয়েছে। মা – রাখি। বলে ডাক দিলো। রাখি ইতিমধ্যেই দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে। সাড়া দিলো কি হয়েছে ? মা – দাদার খিদে পেয়েছে দাদাকে খেতে দে। আর তুইও খেয়ে শুয়ে পর। রাখি – দিয়েছি। আমি সেরিয়াল দেখে একটু পরে খাবো। মা – যাও খেয়ে নাও আমি খাবো না। রাজর্ষি – খাবে , তুমিও খাবে চলো। রাখি মায়ের জন্যও খাবার বের কর। মা – বললাম তো আমি খাবো না। রাজর্ষি – ঠিক আছে তাহলে আমিও খাবো না। মা – কেন খাবে না ? মায়ের অপছন্দের মেয়েকে বিয়ে যখন করবে বলে ঠিক করেছো তখন এ তো সামান্য খাওয়া খেয়ে নাও। রাজর্ষি – তোমার শ্রীপর্ণাকে নিয়ে আপত্তিটা কিসের? আমি পছন্দ করেছি বলে? মা – ওরা ভালো লোক নয় , আর তাছাড়া ওই মেয়েও ভালো নয়। রাজর্ষি – তুমি কি করে জানলে ? ওরা ভালো লোক নয়, শ্রীপর্ণা খারাপ মেয়ে ? কে বললো তোমাকে ? মা – ভালো হলে মেয়ের রং নিয়ে মিথ্যা বলতো না , আর যে মেয়েকে না করা হয়েছে সে আবার কেন তোর সাথে দেখা করে কথা বলে এত কান্ড করলো। সব থেকে বড় কথা আমি লোকের কাছে মুখ দেখাবো কি করে ? আমি বলেছি সবার কাছে আমি লাল টুকটুকে বৌ আনবো। একখানা হবে আমার বৌমা। তা নয় হবে না আমি মানব না। রাজর্ষি – আমি ওকেই বিয়ে করবো। তুমি চাওনা যে আমি খাই ছাড়ো। বলে ঘর থেকে চলে গেলো। আপনার মতামত জানান -