দীর্ঘ আড়াই-তিন দশকের নেতারা এবার পদ হারাতে চলেছেন! তীব্র জল্পনা শুরু শাসকশিবিরে কলকাতা রাজ্য May 18, 2020 একজন 30 বছর ধরে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। অপরজনের চেয়ারম্যান দায়িত্ব সামলানোর মেয়াদ প্রায় 25 বছরের। দীর্ঘদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানো দুজনেই বেশ অভিজ্ঞ। কিন্তু চলতি মাসেই তারা তাদের পদ হারাতে চলেছেন। এতদিন তাদের “বর্তমান চেয়ারম্যান” বলে উল্লেখ করা হলেও, আর কিছু দিনের অপেক্ষা। তারপরেই তাদের নামের আগে জুড়ে যাবে “প্রাক্তন” নামক শব্দটি। বস্তুত, রানাঘাট এবং শান্তিপুর পৌরসভার মেয়াদ আর কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হতে চলেছে। শুধু এই দুটি পৌরসভা নয়, নদীয়া জেলার আটটি পৌরসভার মেয়াদ মে মাসের শেষ হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে করোনা ভাইরাসের কারণে এবার নির্বাচন না হওয়ায় সেখানে বসে যাবে প্রশাসক। ফলে সেখানকার চেয়ারম্যানরা প্রাক্তন হয়ে যাবেন এটাই স্বাভাবিক। প্রসঙ্গত, কুপার্স, বীরনগর, কৃষ্ণনগরের মত রানাঘাট মহকুমার এই দুই শহরেও একসময় বাম আমলেও মাথা তুলে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছিল কংগ্রেসকে। গত 1990 সালে শান্তিপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান হন অজয় দে। পরের বছরই তিনি বিধায়ক হয়ে যান। তবে টানা আড়াই বছর কংগ্রেসের চেয়ারম্যান এবং বিধায়ক থাকার পর গত 2013 সালের শেষের দিকে এই অজয় দে যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। পরবর্তীতে গত 2014 সালে নিজের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে জয়লাভ করেন অজয়বাবু। এরপর 2015 সালের পৌরভোটে আবার জয় লাভ করেন তিনি। কিন্তু 2016 সাল থেকেই ধাক্কা খেতে হয় এই অজয় দেকে। যেখানে কংগ্রেস প্রার্থী অরিন্দম ভট্টাচার্যের কাছে হেরে যান তিনি। কিন্তু বিধায়ক পদ চলে গেলেও পৌরসভার চেয়ারম্যান পদ ছিল তার। কিন্তু এবার দীর্ঘ 30 বছর চেয়ারম্যান পদ সামলানো সেই অজয় দে কে পদ ছেড়ে দিতে হচ্ছে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - কেননা শান্তিপুর পৌরসভার বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ এবার শেষ হতে চলেছে। যার ফলে তার নামের আগে এখন জুড়ে যাচ্ছে প্রাক্তন শব্দটি। অন্যদিকে রানাঘাট পৌরসভা নিয়েও অনেক ইতিহাস রয়েছে বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। গত 1995 সালে রানাঘাট পৌরসভা কংগ্রেসের দখলে আসে। পৌরসভার চেয়ারম্যান হন পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তীতে গত বিধানসভা নির্বাচনে রানাঘাট উত্তর পশ্চিম বিধানসভা কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন শংকর সিংহ। তবে 2006 সালের বিধানসভা ভোটে তিনি হেরে যান। আর এরপরই 2009 সালের শেষের দিকে একাধিক কাউন্সিলার নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। পরবর্তীতে 2011 সালে তিনি তৃণমূলের বিধায়ক হন। শুধু তাই নয়, চেয়ারম্যানের দায়িত্বও সামলাতে দেখা যায় পার্থবাবুকে। তবে অজয়বাবুর মত পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় এতটা সময় পৌরসভা সামলাননি। আর এখানেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি এই দুই পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যানকেই প্রশাসক করা হবে? এদিন এই প্রসঙ্গে পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাজ করতে গিয়ে অনেকের ভালোবাসা পেয়েছি। তবে সবাইকে তো খুশি করা যায় না। আমাদের শহরে যা সমস্যা ছিল, সেগুলো সাধ্যমত মেটানোর চেষ্টা করেছি। এখন আমাকে যা দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা পালন করব।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শান্তিপুরে কংগ্রেস বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য আর রানাঘাট পশ্চিমের কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর সিংহ এখন তৃণমূলে রয়েছেন। ফলে তারাই কি এবার তৃনমূলের টিকিট পাবেন! আর যদি এই সম্ভাবনাই তৈরি হয়, তাহলে অজয় দে এবং পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়েও চূড়ান্ত জল্পনা তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, যদি অজয় দে এবং পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় টিকিট না পায়, তবে তাদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে ময়দানে নামতে পারে বিজেপি। এক্ষেত্রে তৃনমূলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে মাত দিয়ে বিজেপি তৃণমূলকে অনেকটাই চাপে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -