এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > মেদিনীপুর > তৃণমূলের থেকে দিলীপ ঘোষের “ভাইকে” ছিনিয়ে নিয়ে উপনির্বাচনের আগে মহাচমক গেরুয়া শিবিরের

তৃণমূলের থেকে দিলীপ ঘোষের “ভাইকে” ছিনিয়ে নিয়ে উপনির্বাচনের আগে মহাচমক গেরুয়া শিবিরের


মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় বিজেপির ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে দাবি করে যখন তৃণমূল বাংলার তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই সেই তৃণমূলকে প্রবল অস্বস্তিতে ফেলে চমক দিল গেরুয়া শিবির। একসময় দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ নেতা বলে পরিচিত সুশীল ঘোষ তৃণমূলে যোগ দেন। যা নিয়ে প্রবল অস্বস্তিতে পরে গেরুয়া শিবির – কেননা শাসকদলের তরফে প্রচার করা হয়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ‘ভাইকে’ নাকি যোগদান করানো হয়েছে দলে।

আর, এবার সেই সুশীল ঘোষকে ফের গেরুয়া শিবিরে যোগদান করিয়ে এবার যেন মাস্টারস্ট্রোক দিল বিজেপি নেতৃত্ব বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বস্তুত, একসময় ঝাড়গ্রাম জেলায় বিজেপির অন্যতম নেতা ছিলেন এই সুশীল ঘোষ। গত 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে গোপীবল্লভপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির হয়ে দাঁড়ালেও তৃণমূলের কাছে হেরে যেতে হয় তাঁকে। আর এর পর দলের সঙ্গে নানা কারণে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় এবং অন্য দল থেকে আসা কাউকেই বাছাই না করে যেভাবে বিজেপিতে নেওয়া হচ্ছে, তার প্রতিবাদ করে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে দেন সুশীলবাবু।

প্রসঙ্গত, গত বছর জুলাই মাসে এই সুশীল ঘোষকে বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে নিয়ে যান ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদা। আর সেখানেই পার্থবাবুর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন সুশীল ঘোষ। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সুশীলবাবুকে তৃণমূলে যোগদান করানোর সময় তাকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভাই বলে দাবি করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক শোরগোলের সৃষ্টি হয়। পরে অবশ্য খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, সুশীল ঘোষ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নিজের ভাই নন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

একই সম্প্রদায়ের দুই পরিবারের পাশাপাশি বাড়ি হওয়ার কারণে দিলীপ ঘোষের মাকে “মাসি” বলে ডাকেন এই সুশীলবাবু। আর তা থেকেই দুজনের মধ্যে সখ্যতা। কিন্তু সম্পর্কের গভীরতা হালকা হলেও তৃণমূল এই সম্পর্কের গভীরতা খুঁজে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে বিন্দুমাত্র সময় নেয়নি। কেননা তৃণমূল সেই সময়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ভাই বলে সুশীল ঘোষের পরিচয় দিয়ে সুশীলবাবুকে নিজেদের দলে যোগদান করিয়ে বিজেপির অন্দরে দিলীপবাবুর নেতৃত্বকে প্রশ্নের মুখে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু তৃণমূলের সেই চেষ্টা বেশিদিন টেকসই হল না। সূত্রের খবর, এবার তৃণমূল ছেড়ে ফের বিজেপিতে ফিরে এলেন সুশীল ঘোষ। জানা যায়, গত 29 সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরে দিলীপ ঘোষের হাত থেকেই বিজেপির পতাকা নিয়ে ফের বিজেপিতে যোগ দেন সুশীলবাবু। আর এতেই এবার চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। খড়্গপুর বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলে গিয়েও ফের সুশীল ঘোষ বিজেপিতে ফিরে আসায় এই অঞ্চলে তৃণমূলের সংগঠনে অনেকটাই ফাটল ধরল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কিন্তু কেন তিনি হঠাৎ আবার তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন?

এই প্রসঙ্গে সুশীল ঘোষ বলেন, “তৃণমূলে গিয়ে সম্মান পাইনি। উল্টে বিজেপিতে থেকে যাওয়ার জন্য সন্দেহ করা হত। ভুল করেছিলাম। দিলীপদা ভুল সংশোধনের সুযোগ করে দিয়েছেন।” এদিকে সুশীলবাবুকে এর আগে তৃণমূল ভুল বুঝিয়ে নিজেদের দিকে টেনেছিল বলে এখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাল্টা সরব হতে শুরু করেছেন ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সভাপতি সুখময় শতপথী। কিন্তু এর ফলে কি তারা চাপে পড়লেন না! এদিন এই প্রসঙ্গে সুশীল ঘোষকে বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘরে নিয়ে যাওয়া ঝাড়গ্রামের তৃণমূল বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা মুখ খোলেন।

সুকুমারবাবুর কথায়, “আমার উদ্যোগেই দিলীপ ঘোষের সম্পর্কিত ভাই সুশীলবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি বিজেপিতে ফিরে গিয়েছেন এমন খবর আমার জানা নেই।” অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের সভাপতি বীরবাহা সোরেন বলেন, “মমতা বন্দোপাধ্যায়ের আদর্শ মেনে চলতে না পারলে কেউ যদি ফিরে যান, তো যেতেই পারেন।” তবে তৃণমূল নিজেদের মুখে বা সংবাদমাধ্যমের সামনে গোটা ব্যাপারটিকে গুরুত্বহীন বলে প্রতিস্থাপিত করার চেষ্টা করলেও, খড়্গপুর উপনির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবির যে এই নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালাবে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত গোটা রাজনৈতিক মহল।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!