পচা গলা দেহ টেনে নিয়ে সরকারের নিষ্ঠুর প্রচেষ্টা খোদ কলকাতার বুকেই! বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চরমে কলকাতা রাজ্য June 12, 2020 করোনা সংকটকালে গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে একটি ভিডিও সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায় যে, গড়িয়া বরাল মহাশ্মশান চত্বরে একটি বিকৃত দেহ আকশিতে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর এই ঘটনা রীতিমতো এখন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে সর্বত্র। বিরোধী দল থেকে শুরু করে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান গোটা ঘটনায় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছেন। জানা যায়, বুধবার দুপুরে কলকাতা পৌরসভার একটি গাড়িতে করে 13 টি গলিত প্রায় দেহ সৎকারের জন্য এই শ্মশানে আনা হয়। আর এরপর এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বাম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য। কেন এভাবে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় দেহ সৎকার করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সাধারণ বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে শ্মশানের গেট আটকে দেওয়া হয়। সত্যিই তো তাই! কেন এভাবে মৃতদেহ সৎকার করা হবে? কলকাতা পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মে মাসের শেষের দিকে নির্দেশিকা অনুযায়ী, দাবীদারহীন যে কোনো মৃতদেহ গড়িয়া শ্মশানে দাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই ব্যাপারে রাজ্যপাল থেকে শুরু করে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে রাজ্যের শাসক দলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে। যাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে সর্বত্র। এদিন এই প্রসঙ্গে একটি টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। যেখানে তিনি বলেন, “মৃতদেহ সৎকারে অবর্ননীয় হৃদয়হীন সংবেদনশীলতায় আমি মর্মাহত। মৃতদেহ আমাদের সমাজের সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী। পরম্পরা মেনেই সৎকারের আচার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।” তবে এই মৃতদেহগুলো যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদেরই, এদিন সেই দাবি করে বসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - তিনি বলেন, “এই দেহগুলো কোভিড রোগীদেরই লাশ। নন্দীগ্রামে সিপিএম লাশ চুরি করেছিল। এখন তৃণমূল করোনার মৃতদেহ চুরি করছে।” অন্যদিকে এই গোটা বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা গেছে বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীকেও। এদিন তিনি বলেন, “লাশগুলি কাদের? করোনা রোগীর সঙ্গে মৃতদেহগুলোর কি কোনো সম্পর্ক আছে? গড়িয়া শশান থেকে ফেরত যাওয়ার পরেও দেহগুলোর কি পরিণতি হয়েছে?” একইভাবে এই বিষয়ে সরব হয়ে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “মৃত্যু যে কারণেই হোক। বাংলার মানুষ মৃতদেহ নিয়ে বর্বরতা সহ্য করবে না।” সত্যিই তো তাই! এতদিন তাহলে মৃতদেহগুলো কোথায় ছিল? কেন সেই পচা-গলা মৃতদেহগুলো এখন বের করে এখন সৎকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে? এদিন এই প্রসঙ্গে কলকাতা পৌরসভার প্রশাসক তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “করোনার মৃতদেহ ধাপাতেই পোড়ানো হয়। তবে কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দেহ আবার গড়িয়ায় দাহ করা হচ্ছে। সেই মত পৌরসভার তরফে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।” তবে কোন দেহ নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল, তা খতিয়ে না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়।” তবে ফিরহাদ হাকিম যে কথাই বলুন না কেন, যেভাবে করোনা সঙ্কটের কালে পচাগলা মৃতদেহ বেরিয়ে আসা নিয়ে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তাতে রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ল গোটা রাজ্যে। এখন এই মৃতদেহ নিয়ে সঠিক তদন্ত আদৌ হয় কিনা এবং তদন্ত হলে সেখান থেকে কি বেরিয়ে আসে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের। আপনার মতামত জানান -