অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ২ অন্যান্য অপরাজিতা গল্পে-আড্ডায় March 16, 2020 দীপশিখা অভ্রর সাথে কথা বলে বুঝেছে ছেলেটা মজা করে ঠিকই তবে খারাপ নয়। কিন্তু দীপশিখা কিছুতে বুঝতে দেবে না যে ও অভ্রকে পছন্দ করে, ভালোলাগে ওর কথা শুনতে ,ওর সাথে কথা বলতে। এখন তো দীপশিখাও অভ্রর ম্যাসেজের জন্য ওয়েট করে থাকে। বৃহস্পতিবার – সকালে – অভ্র – হাই, মর্নিং – রাতে ঘুম হয়নি না ? দীপশিখা – কেন? ঘুম হবে না কেন? অভ্র – ওই যে আমার কথা ভাবছিলে সারারাত দীপশিখা – কি? অভ্র – না লজ্জা পাবার কিছু নেই , মি টু দীপশিখা – বলছি বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে না কি ? অভ্র – একেবারে না। আচ্ছা একটা হেল্প করবে ? দীপশিখা- কি? অভ্র -একটা এনসার দেবে? দীপশিখা- কি? অভ্র – ধরো তোমার দুটো বেবি, আমার দুটো – কত হলো দীপশিখা ইচ্ছা করেই কিছু বলেনি , কেননা ও জানে আনসারটা কি, যদি ও বলে চার , অভ্র বলবে না দুটো , আর কারণ জিজ্ঞাসা করলেই আবার জ্বালাবে , ফের বলবে তোমার আমার বেবি, আমরা বিয়ে করবো এইসব আরো অনেক কিছু বলতে পারে সো স্টপ করা ভালো। বললো – জানিনা অভ্র – ম্যাথসে খুব কাঁচা ? দীপশিখা- হুম অভ্র – আমি বলবো দীপশিখা – না অভ্র – আচ্ছা ভাব রাত্রে উত্তর দিও। বাই, বেরোবো। ——————————————————- রাত্রে – অভ্র – এনসার প্লিজ দীপশিখা – বললাম তো জানিনা। অভ্র- আমি বলি দীপশিখা – নট ইন্টারেস্টেড অভ্র- বাট আমি ইন্টারেস্টেড খুব দীপশিখা – আমি কিন্তু ব্লক করে দেব অভ্র – কোন অপরাধে? আমি অংকে একটু কাঁচা তাই একটা প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছি। তাতে ব্লক করার মতো কি হলো। দীপশিখা – সত্যি কিন্তু ব্লক করে দেব অভ্র – আশ্চর্য অপরাধী জানলো না তার অপরাধ সাজা ঘোষণা হয়ে গেলোর মতো ব্যাপার। দীপশিখা – আচ্ছা, অংকে কাঁচা তো কি করে এনসার দেবে ? অভ্র – চেষ্টা করতাম আর কি ! দীপশিখা – জাস্ট শাট আপ, লজ্জা করে না ফেসবুক থেকে মিম ঝেড়ে একটা মেয়ের সাথে চ্যাট করতে? অভ্র – ওটাও একটা আর্ট, ঠিক জায়গায় ঠিক জিনিস এপ্লাই করা। এনসার দিলে না কিন্তু দীপশিখা – জানিনা বললাম , অন্য কিছু বলার আছে। অভ্র – আচ্ছা শোনো, একটা লেখা পাঠাচ্ছি খুব মন দিয়ে পরবে দীপশিখা- ?? অভ্র – ওয়েট দীপশিখা – ওকে অভ্র একটা পোস্ট পাঠালো সেটা এইরকম – “যদিদং হৃদয়ং মম তদিদং হৃদয়ং তব” দীপশিখা -এটা তো বিয়ের মন্ত্র! বিয়ের মন্ত্র পাঠালে কেন? সত্যি পারো তুমি ! অভ্র – পড়লে কি ? দীপশিখা – হ্যাঁ ,তো? অভ্র – এবার বলো কবে আমার ফ্ল্যাটে শিফট করছো ? দীপশিখা – মাথা খারাপ হয়ে গেছে ? অভ্র – মাথা খারাপ হবে কেন ? বিয়ের পর কেউ আলাদা থাকে ? দীপশিখা -বিয়ে ? অভ্র – এই যে তুমি বিয়ের মন্ত্রটা পড়লে সো আমার সাথে তোমার বিয়ে হয়ে গেলো। দীপশিখা – হা হা ,গুড জোক, এইভাবে বিয়ে হয় না অভ্র – কেন? এটা বিয়ের সময় পড়তে হয় না? দীপশিখা – হুম হয়, তবে সিঁদুরদান না হলে বিয়ে হয় না। অভ্র – ওহ আচ্ছা , দীপশিখা দেখলো কিছুক্ষন অফ। গেলো কোথায় ?আবার মাথায় কিছু ঘুরছে নিশ্চই? অভ্র এবার একটা সিঁদুরদানের পিকচার পাঠালো তাতে কেউ কাউকে সিঁদুর পড়াচ্ছে শুধু সেটা দেখা যাচ্ছে। দীপশিখা – এটা আবার কি? অভ্র – ওই যে সিঁদুরদান, এবার বিয়ে কমপ্লিট, দীপশিখা – এইভাবে বিয়ে হয়না! অভ্র – , এখন সব ডিজিটাল, বিয়েটাও। সো তোমার আমার বিয়ে হয়ে গেলো। দীপশিখা – ফের শুরু করলে? এটাও ফেসবুকের একটা মিম। সিরিয়াসলি তুমি একটা অভ্র – একটা কি? দীপশিখা – এইভাবে মিম নিয়ে একটা মেয়েকে ফ্লার্ট করতে লজ্জা করে না? অভ্র – ফ্লার্ট কোথায়? দীপশিখা – এটা কি হচ্ছে ? অভ্র – তোমাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রপোজ করছি। দীপশিখা – ঘুমাতে যাও, বাই। অভ্র – আচ্ছা শোনো না , তোমার হোয়াটস্যাপ নাম্বারটা দাও না। প্লিজ দীপশিখা – নো অভ্র – প্লিজ. দীপশিখা – বাই অভ্র – আমাকে একটুকুও বিশ্বাস করো না ? দীপশিখা – না, বাই কেমন যেন অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে দীপশিখার। এক সপ্তাহ আগেও কোথাও ছিল না অভ্র। নিজের মতো টুকিটাকি ফেসবুক ঘেঁটে দু চারটে লাইক করে সময় কেটে যেত, আর আজ শুধু অপেক্ষা করে ও অভ্রর জন্য। শুক্রবার – সকালে – অভ্র – হাই, কি করছো? দীপশিখা – তেমন কিছু না অভ্র – একটা প্রশ্ন ছিল ! দীপশিখা- বকো অভ্র – যা তোমাকে বকবো কেন শুধুমুধু দীপশিখা – বকো, মিন বলো। এখুনি তো ফালতু বকতে শুরু করবে তাই। অভ্র -ও আচ্ছা, তাহলে একটা সিরিয়াস কথা বলি ? দীপশিখা – বলো। অভ্র – হোয়াটস্যাপ প্লিজ, দীপশিখা – নো অভ্র – বলছি এই যে আমি তোমার হোয়াটস্যাপ এ নেই তোমার হোয়াটস্যাপ টা খালি খালি লাগে না ? দীপশিখা – না অভ্র – আমার লাগে ভীষণ। দাও না প্লিজ। দীপশিখা – না,রাখো বেরোবো ক্লাস আছে। সকালে দীপশিখা বার বার ফেসবুক খুলে দেখে অনলাইন আছে কিনা অভ্র, অনলাইন রয়েছে দেখে খুব রাগ হয়েছে, মনে হয়েছে কেন ওকে ম্যাসেজ করছে না , নিশ্চই অন্য কারুর সাথে কথা বলছে। অনেক ফ্রেন্ড আছে অভ্রর সত্যি। তাদের সাথে কথাও হয়। কিন্তু কয়েকজনের সাথে মজা করতো ঠিক কিন্তু দীপশিখাকে দেখার পর ওর সাথে কথা বলার পর থেকে আর কাউকে নিয়ে ভাবতেই পারেনা।ও সত্যি সিরিয়াস দীপশিখাকে নিয়ে। দীপশিখার সাথে সবসময় কথা বলতে ইচ্ছা করে কিন্তু অনলাইন থাকে না যে অন্য সময়। না দীপশিখা ও থাকে তবে হিসাবটা গোলমেলে হওয়ায় যোগাযোগটা হয়না। কখনো ক্লাসের ফাঁকে দীপশিখা ফেইসবুক খুলে দেখে নেয়, তখন অভ্র কাজে ব্যাস্ত, আবার অভ্র যখন দেখে তখন দীপশিখা ক্লাস করতে ব্যাস্ত।মাত্র দুদিনের আলাপ, তাতেও কেমন যেন দীপশিখা জড়িয়ে যাচ্ছে, না জোর করে মানতে চাইছে না। মানলে হবে না,শক্ত হতে হবে। আজ কি হয়েছে কে জানে ? রাত্রে ফেসবুক খুলে অনলাইন হবার সাথে সাথেই ম্যাসেজ আসে অভ্রর থাকে। কিন্তু আজ কিছু নেই অথচ অনলাইন রয়েছে অভ্র। কেন? কি হলো ওর? কেন কোনো ম্যাসেজ করছে না ও ? অন্য কাউকে পেয়ে গেছে, মনের মতো তাই ভুলে গেলো দীপশিখাকে ? এইটুকুসময়ের মধ্যেই ভুলে গেলো। একবার দীপশিখাই ম্যাসেজ করবে ? না থাকে কি দরকার ?জড়িয়ে লাভ কি ?তার থেকে। ……………. কিন্তু খুব কষ্ট হচ্ছে দীপশিখার, দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে যেন! অভ্রকে অনলাইন দেখে বুকের ভেতরটা মোচড় দিচ্ছে। বার বার মনে হচ্ছে ভুলে গেলে এত তাড়াতড়ি, ও নিশ্চই অন্য মেয়ের সাথে গল্প করছে।ভুলে যাবে ও, একটু একটু করে ভুলে যাবে। অফলাইন হয়ে গেল দীপশিখা। না পারেনি বেশিক্ষন অফলাইন থাকতে পারেনি,ফের খুলেছে ফেসবুক , না এখনো অনলাইন দেখাচ্ছে কিন্তু কোনো ম্যাসেজ করেনি কেন? কেন কথা বলছে না। সত্যি ভুলে গেলো? ভীষণ কান্না পাচ্ছে দীপশিখার। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ঘটনা হলো অভ্র কারুর সাথে চ্যাট করছে না। ওদের যে ফেসবুকে গ্রুপটা আছে সেখানে মোহনবাগানের খেলা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে আর অভ্র সেই আলোচনায় এত মগ্ন যে খেয়াল করেনি কটা বাজছে।পাগলের মতো ভালোবাসে অভ্র ফুটবল, সব কিছু তার পরে। দীপশিখা আগে না পরে জানে না সেইভাবে মাপেনি।আজ খেলা ছিল মোহনবাগানের ,জিতেছে কিন্তু তাতে কি ভুল হয়েছে কি ঠিক সেই নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ, কথাবার্তা হতে হতে ১১.৩০ টা যে কখন বেজে গেছে বোঝেনি অভ্র। এক দাদার কমেন্টে হুশ ফিরলো অনিন্দ – আচ্ছা রাত ১১.৩০ এবার অফ হচ্ছি, ছেলেকে ঘুম পাড়াতে হবে, কাল সকালে বেরোতে হবে না উঠতে পারলে আমাকে বৌ উদম পেটাবে। হুশ ফিরেছে ১১.৩০ দীপশিখা ? সর্বনাশ , কিন্তু এটা ঠিক নয় ও কেন ম্যাসেজ করেনি। যাকগে অভ্রই ম্যাসেজ করবে। অভ্র – বলছি মরলাম না বেঁচে আছি একটু খোঁজ নেওয়া যায়না? দীপশিখা হা করে বসে ছিল। টুং করে ম্যাসেজ আসার সঙ্গে সঙ্গেই দেখলো। লিখলো – যার সাথে এতক্ষন চ্যাট করছিলে সে তো খবর নিয়েছে আমি আবার কেন? অভ্র – কারুর সাথে চ্যাট করিনি সত্যি! দীপশিখা – হুম সেই জন্যই ফেসবুকে অনেক্ষন থেকে অন দেখাচ্ছিল। অভ্র – আমাদের একটা গ্রুপে আলোচনা হচ্ছিলো। বই দ্যা ওয়ে কিছু ভাবলে? দীপশিখা – কি নিয়ে ? অভ্র – ওই হোয়াটস্যাপ নাম্বার দেওয়া নিয়ে। দীপশিখা – না অভ্র – এই যে আমার মতো এত ভালো একটা ছেলে তোমার হোয়াটস্যাপ এ নেই তোমার ফাঁকা ফাঁকা লাগে না? দীপশিখা – সকালে হয়ে গেছে এটা।অন্য কিছু ট্রাই করো অভ্র – ও আচ্ছা, তাহলে – যখনি হোয়াটস্যাপ খুলবে দেখবে আমার অনেক ম্যাসেজ , ভালো লাগবে না ? নাম্বার প্লিজ দীপশিখা – একেবারেই না। অভ্র – বলছি তোমার বাড়ি থেকে ছেলে খুঁজছে ? দীপশিখা – ?? অভ্র – তোমার বিয়ের জন্য ছেলে খুঁজছে ? দীপশিখা – কেন? অভ্র – জানে ? দীপশিখা -কি? অভ্র – এই যে তুমি আমার মতো একটা ভালো ছেলেকে বার বার না বলছো দীপশিখা – আবার ? অভ্র -আবার কিসের? যেটা সত্যি সেটা বলছি , এখনো বলছি হ্যাঁ বলো। যদি জানতে পারে আমার মতো একটা এত ভালো ছেলেকে না করেছো বাড়িতে খুব বকা খাবে। দীপশিখা – আচ্ছা? অভ্র – হ্যাঁ আমার মতো ছেলে লাখে মেলে না,ওই ১০০ এ একটা দীপশিখা – শুধু ফালতু কথা, অভ্র – ভেবে দেখো, দীপশিখা – ও শোনো আজ রাখছি একটু কাজ আছে কাল সকালেই বেরোতে হবে। অভ্র – বলছি যাবো? দীপশিখা – কোথায়? অভ্র – ওই তুমি যেখানে যাবে দীপশিখা – আর কিছু ? অভ্র – হ্যাঁ – হোয়াটস্যাপ নাম্বার দাও নাহলে ফলো করে পৌঁছে যাবো। দীপশিখা – প্লিজ ট্রাই। বাই অভ্র -ওকে এড্রেস দাও পৌঁছে যাবো দীপশিখা – বাই আচ্ছা ওকি সত্যি বলছিলো, অন্য কারুর সাথে চ্যাট করছিলোনা , নাকি অনেক মিথ্যা বললো ? দূর এসব কেন ভাবছে , ভালো লাগছে খুব, ভালো বন্ধু হতে চায় দীপশিখা ,এর বেশি কিছু ওর পক্ষে সম্ভব নয়, কিছুতেই নয়। আগের পর্ব – এনসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ১ পরের পর্ব -এনসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ৩ আপনার মতামত জানান -