এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > ইন্দ্রপতন – প্রয়াত অরুন জেটলি! একনজরে তাঁর ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবন

ইন্দ্রপতন – প্রয়াত অরুন জেটলি! একনজরে তাঁর ঘটনাবহুল রাজনৈতিক জীবন

শরীরের সঙ্গে অনেকদিন ধরেই যুদ্ধ করতে হচ্ছিল তাঁকে, তবে শেষপর্যন্ত হেরে যেতে হল তাঁকে। প্রয়াত হলেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। বিগত বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির এইমস হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন ছিলেন তিনি। আর দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর এই প্রয়াণে শোক প্রকাশ করতে শুরু করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরা। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি সহ সকলেই তার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন।

বস্তুত, গত ৯ আগস্ট থেকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে অরুন জেটলি ভর্তি হলে, সেখানে ধীরে ধীরে তাঁর শারিরীক অবস্থার চরম অবনতি হতে থাকে। চিকিত্‍সকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল ডায়লিসিস করার প্রস্তুতি করা হচ্ছে। তবে অরুন জেটলির লাইফ সাপোর্ট তখনও সরিয়ে নেওয়া হয়নি। আর তারপর থেকে হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন তিনি। তবে শুক্রবার সকাল থেকেই তাঁর শারীরিক ফের অবনতি হতে শুরু করে। আর এরপরই শনিবার দুপুর ১২টা ৭ মিনিট নাগাদ প্রয়াত হন ৬৮ বছর বয়সী দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ বিজেপি নেতা।

ইতিমধ্যেই তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বহু ব্যক্তি। অরুণ জেটলির মৃত্যুর খবর পেয়ে হায়দরাবাদ থেকে নিজের সফর কাঁটছাট করে দিল্লিতে ফিরছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জানা যায়, ১৯৫২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বাবা মহারাজ কিষেন জেটলি, মা রতনপ্রভা জেটলির সন্তান হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন অরুণ জেটলি। স্কুলজীবন কাটে দিল্লির সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। দিল্লিরই শ্রীরাম কলেজ অফ কমার্স থেকে বানিজ্য বিভাগে স্নাতক হন। তারপর 1977 সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে আইনের স্নাতক হন।

আর শিক্ষায় চূড়ান্ত সাফল্য পাওয়ার মাঝেই শুরু হয়ে যায় তাঁর রাজনীতিতে অভিষেক। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা হিসেবে উঠে আসেন তিনি। এরপর, 1974 সালে ছাত্র সংসদের সভাপতি হন। এরপর জরুরি অবস্থার সময় ১৯ মাসের জন্য কারাবাসেও যেতে হয় তাঁকে। জানা যায়, জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং রাজ নারায়ণের নেতৃত্বে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। আর জেল থেকে বেরিয়েই তিনি যোগ দেন জনসঙ্ঘে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

পরবর্তীতে 1977 সালে লোকতান্ত্রিক যুবমোর্চার আহ্বায়ক এবং তারপর এবিভিপি-‌র সর্বভারতীয় সম্পাদক হন। আর 1980 সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই দলের যুবমোর্চার সভাপতি হন প্রয়াত এই বর্ষীয়ান নেতা। তবে আইনবীদ হিসেবেও প্রবল সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন অরুণ জেটলি। 1987 সাল থেকে দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে এবং সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। 1989 সালে বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংয়ের সরকার তাঁকে অতিরিক্ত সলিসিটর হিসেবে নিয়োগ করে।

আর এরপর বোফর্স কেলেঙ্কারির যাবতীয় নথিপত্র তদন্তের ভার তাঁর ওপর পরে। বলা বাহুল্য, জেডিইউয়ের শরদ যাদব থেকে কংগ্রেসের মাধবরাও সিন্ধিয়া, বিজেপি-‌র লালকৃষ্ণ আদবানি বিভিন্ন সময়ে অরুন জেটলিকেই তাঁদের আইনজীবী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। গত 1991 সালে বিজেপি-‌র জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হয়ে 1999 সালে বাজপেয়ী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। পরের বছরই তাঁকে আইন, ন্যায় এবং কোম্পানি বিষয়ক মন্ত্রকের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর 2000 সালে রাম জেঠমালানি আইনমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করার পর অরুণ জেটলি ক্যাবিনেট মন্ত্রী হন। রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পর 2009 এ তিনি আইন ব্যবসা থেকে সরে আসেন। কিন্তু তিনি 1980 সাল থেকে বিজেপি নেতৃত্বের অংশ হলেও 2014 সালের আগে পর্যন্ত কখনও কোনও নির্বাচনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি অরুন জেটলি। গত ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে অমৃতসর লোকসভা কেন্দ্রে প্রথমবার লড়ে পরাজিত হন। তবে শেষবার ২০১৮ সালে রাজ্যসভায় জিতে আসেন উত্তরপ্রদেশ থেকে।

রাজ্যসভায় তাঁর বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় জেটলির অংশগ্রহণ, বাগ্মিতা এবং যুক্তিবিন্যাস বিরোধী সাংসদদেরও মোহিত করত। গত ২০১৪ সালের ২৬ মে নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলে অরুন জেটলি অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বও সামলেছেন। আর অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রী থাকার সময় মোদি সরকার ভারতবর্ষের অর্থনীতিতে একগুচ্ছ সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়। আর এহেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তথা জাতীয় রাজনীতিতে মাইলস্টোন হিসেবে পরিচিত অরুণ জেটলির চলে যাওয়া সত্যিই “নক্ষত্রপতন” বলেই মনে করছেন সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!