এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > অত্যাচারের শেষ হোক! আগুন জ্বলল সন্দেশখালিতে, চরম জব্দ তৃণমূল!

অত্যাচারের শেষ হোক! আগুন জ্বলল সন্দেশখালিতে, চরম জব্দ তৃণমূল!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- দীর্ঘদিন ধরে এই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের গায়ের জোরে, সংখ্যার জোরে ভয় দেখিয়ে প্রচুর অত্যাচার করেছেন তৃণমূলের নেতারা। কিন্তু যারা অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন, এবার তাদের সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। মানুষের জনজাগরণ বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, তৃণমূল আর মস্তানি করতে পারবে না। আর তৃণমূল যদি মস্তানি করে, তাহলে তার পাল্টা কি করে জবাব দিতে হয়, সেটাও দেখিয়ে দিচ্ছে সন্দেশখালি। গত দুইদিন ধরে এই সন্দেশখালীর মানুষ রাস্তায় বেড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কখনও লাঠি হাতে, কখনও বা পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে তারা বুঝিয়ে দিচ্ছে, তারা কোনো কিছুকে ভয় পান না। তারা চান, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক এই সন্দেশখালীর মত এলাকায়। এতদিন শেখ শাহজাহান নিজেকে বাঘ বলে এই এলাকাকে নিজের হাতের মুঠোয় রাখার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এবার মানুষ জাগতে শুরু করেছে। তাই যে সমস্ত তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, তারই মধ্যে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে আছড়ে পড়লো জনরোষ। আর সেই জনরোষ এমন পর্যায়ে চলে গেল যে, তৃণমূল ভাবতেও পারেনি, তাদের এত বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। মানুষের প্রতিবাদ তাদের এত বড় ক্ষতির মুখোমুখি নিয়ে গিয়ে দাঁড় করাবে। কিন্তু কি হলো এদিন সন্দেশখালিতে?

প্রসঙ্গত, শেখ শাহজাহান তো বটেই, তার পাশাপাশি শিবু হাজরা এবং উত্তম সর্দারকেও গ্রেপ্তার করার দাবি তুলছেন সন্দেশখালির মানুষ। তারা পুলিশের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তারা বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে, তারাও তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। তারাও তৃণমূল কংগ্রেসটা করেন‌। কিন্তু এই এলাকাকে অশান্ত করছেন তৃণমূলের এই তিন নেতা। সন্দেশখালিকে উপদ্রুত অঞ্চল হিসেবে পরিণত করেছেন এই তিন নেতা। তাই তাদের গ্রেফতার করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক। অর্থাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের পক্ষ থেকেই কিন্তু তার দলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবার আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে। যার ফল এমন মারাত্মক হলো যে, শেষ পর্যন্ত আগুন জ্বালানো হলো সেই তৃণমূল নেতা শিবু হাজরার পোল্ট্রি ফার্মে। অনেকে বলছেন, শাসক যদি নিজেরাই অশান্তি করে, তাহলে কি করে তাদের শায়েস্তা করতে হয়, কি করে তাদের সোজা করতে হয়, সেটা সাধারণ মানুষ দেখিয়ে দিচ্ছেন। তাই আগামী দিনেও যদি তৃণমূল কংগ্রেস তাদের দুষ্কৃতীদের দিয়ে ক্ষমতা দখল করার চেষ্টা করে, তাহলে এর ফল আরও মারাত্মক হতে পারে। তাহলে সন্দেশখালীর ঘটনা থেকে এই ফ্যাসিস্ট রাজ্য সরকারের শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেই দাবি একাংশের।

ইতিমধ্যেই গোটা বিষয়কে কেন্দ্র করে কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। তাদের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার অন্তত নিরপেক্ষ হওয়ার চেষ্টা করুন। বাংলাকে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত করেছে এই সরকার। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকেই এখন প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। সন্দেশখালি গোটা বাংলাকে পথ দেখাচ্ছে। আগামী দিনে যেখানেই তৃণমূল বাড়াবাড়ি করতে যাবে এবং আইন নিজেদের হাতে তুলে নেবে, সেখানেই সাধারণ মানুষ জেগে উঠবে। সন্দেশখালির এই পরিস্থিতি বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, আগামী দিনে কত বড় পতনের মুখে পড়তে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সন্দেশখালি, বসিরহাট, হিঙ্গলগঞ্জের মত এলাকাকে তৃণমূল নিজেদের পৈতৃক সম্পত্তি ভেবেছিল। এখানে তারা একের পর এক নেতা সন্ত্রাস করে মানুষকে ভয় দেখাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাদের দিন এবার শেষ হয়ে এসেছে। অন্যান্য জায়গায় ক্ষমতা পেয়ে নিজেদের বড় মনে করা তৃণমূল নেতারা এবার অন্তত শুধরে যান। তা না হলে মানুষের যে প্রতিরোধ হবে, তা কিন্তু তারা সামলাতে পারবেন না। এই শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা নিজেদের অনেক বড় নেতা ভেবেছিলেন। কিন্তু অত্যাচারীর শেষ পরিণতি কি হয়, বাঘ বলে এলাকায় পরিচিত থাকা নেতারা এখন গুটিসুটি মেরে কোথাও একটা গা ঢাকা দিয়ে পড়ে আছেন। শুধুমাত্র রাজ্য পুলিশ আছে বলে তারা বেঁচে যাচ্ছেন। তা না হলে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ এমন জায়গায় পৌঁছে যেত যে, সেই সমস্ত নেতারা যত অপরাধ করেছেন, তাতে পুলিশ নিরপেক্ষ থাকলে তারা এতক্ষণে জেলের ভেতরে থাকতেন। কিন্তু মানুষ যেভাবে বিক্ষোভ করছে, যেভাবে তৃণমূল নেতার পোল্ট্রি ফার্ম পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে বোঝাই যাচ্ছে যে, তৃণমূলের হাত থেকে এবার পরিস্থিতি বেরিয়ে যাচ্ছে। মানুষ নিজেদের নিরাপত্তা নিজেরাই বুঝে নিতে শিখে গিয়েছে। সেক্ষেত্রে তারা আর শাসকের চোখ রাঙানি এবং পুলিশের হুমকি, কোনো কিছুতেই ভয় পায় না। দিনের শেষে তেমনটাই বলছেন রাজনৈতিক সমালোচকরা।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!