তৃণমূলের ‘বাধায়’ করা যাচ্ছে না ঘোষিত কর্মসূচি! ‘অবাক’ অভিযোগ বিজেপির জেলা নেতৃত্বের! উত্তরবঙ্গ কলকাতা রাজ্য September 3, 2019 দীর্ঘদিন ধরেই কোচবিহারের তৃণমূল বনাম বিজেপির মধ্যে নানা ইস্যুতে তরজা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি সেই তরজা এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে যে তা হাতাহাতিতেও চলে যাচ্ছে। আর এমতাবস্থায় এবার তৃণমূলের বাধায় তারা দলীয় কোনও কর্মসূচি করতে পারছে না বলে দাবি করতে শুরু করল গেরুয়া শিবির। জানা গেছে, বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মোতাবেক আগস্ট মাসের মধ্যেই প্রতিটি বুথ এলাকায় কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের স্বপক্ষে মিটিং, মিছিল, পথসভা করতে হত। কিন্তু কোচবিহারে তা করতে সক্ষম হয়নি তারা। সে ক্ষেত্রে শাসক দলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তৃণমূলের বাঁধার জন্য বিজেপি তা করতে পারেনি বলে অভিযোগ জানাতে শুরু করলেন পদ্ম শিবিরের নেতারা। বিজেপির বক্তব্য, প্রকাশ্যে কর্মসূচি করতে না পেরে তারা ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে সাধারণ মানুষের কাছে লিফলেট বিলি করবে। যদিও তৃণমূলের দাবি, বিজেপির জেলা নেতৃত্ব গত একমাস ধরে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। ওরা লোক খুঁজে না পেয়ে দোষ চাপাচ্ছে। এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতী রাভা রায় বলেন, “জেলাজুড়ে তৃণমূল কি পরিস্থিতি করে রেখেছে! তা সকলেই জানে। একমাসের বেশি সময় ধরে জেলাজুড়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাতের বেলায় বোমাবাজি করছে। আমাদের কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে মারধর, ভাঙচুর, লুটপাট করছে। আমরা থানায় সব ঘটনারই অভিযোগ করছি। রাজ্য কমিটির ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে পারছি না।” অন্যদিকে বিজেপির এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ রুপে অস্বীকার করেছে জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। এদিন তিনি বলেন, “বিজেপির আসল উদ্দেশ্য মানুষ গত কয়েক মাসে বুঝে গিয়েছে। ফলে বিজেপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তাঁরা। ওরা এখন কর্মসূচি করার জন্য লোকজন খুঁজে পাচ্ছে না। তাই নিজেদের মুখ বাঁচাতে আমাদের নামে মিথ্যা প্রচার করছে।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর কেন্দ্রীয় সরকারের কৃতিত্ব গ্রাম বাংলায় সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে রাজ্য বিজেপি জনজাগরণ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছিল। যার জন্য জেলা থেকে প্রতিটি বুথ পর্যন্ত পথসভা, মিটিং, মিছিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। রাজ্য থেকে জেলাকে আগস্ট মাসের মধ্যে এই কর্মসূচি শেষ করতে বলা হলেও কোচবিহার জেলায় এখনও এনিয়ে কোনও কর্মসূচিই গেরুয়া শিবির পালন করতে পারেনি। জানা যায়, গত আগস্ট মাসে যুব মোর্চা জেলা পার্টি অফিসের সামনে থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের স্বপক্ষে মোটর বাইক রালির আয়োজন করলেও সেই রালি বের হতেই তা আটকে দেয় পুলিশ। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - পুলিস যুব মোর্চার কর্মীদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তবে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি দখল করার পর থেকেই তৃণমূল দাবি করে আসছে যে, বিজেপি অশান্তি পাকানো চেষ্টা করছে। তাদের মিটিং, মিছিল ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছে। কয়েক দিন আগে মাথাভাঙায় তাদের শিক্ষক সংগঠনের কর্মিসভায় হামলা চালায় বিজেপি। কিন্তু বরাবরই বিজেপির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। তারা পাল্টা দাবি করেছে, তৃণমূল বহিরাগতদের এলাকায় এনে বোমা, বন্দুক দেখিয়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে। এমন অবস্থায় তারা কোনও কর্মসূচি নিতে পারছে না। গোটা বিষয়টি সম্প্রতি জেলা থেকে রাজ্যকে জানানো হয়। আর এরপরই রাজ্য থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রাসঙ্গিকতা বোঝাতে লিফলেট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই লিফলেট গেরুয়া শিবির বিলি করবে। তবে কবে থেকে তা বিলি করা হবে তা এখনও জানা যায়নি। কিন্তু যেখানে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে কোচবিহার জেলায় তৃণমূলকে দাপিয়ে বিজেপিকে সামনের সারিতে আসতে দেখা গেছে, সেখানে হঠাৎ করেই বিজেপি কর্মসূচি করতে পারছে না বলে তৃণমূলের ঘাড়ে সমস্ত দোষ চাপানোর পেছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি, নাকি অন্য কোনো ব্যাপার রয়েছে, তা নিয়ে ধন্দ থেকেই যাচ্ছে। আপনার মতামত জানান -