এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > দলীয় কর্মী থেকে প্রাক্তন মন্ত্রী – বিদ্রোহ সর্বস্তরে! ‘সমঝোতার’ বার্তা তৃণমূল নেত্রীর

দলীয় কর্মী থেকে প্রাক্তন মন্ত্রী – বিদ্রোহ সর্বস্তরে! ‘সমঝোতার’ বার্তা তৃণমূল নেত্রীর


সম্প্রতি বেশকিছু ইস্যু নিয়ে দ্বিধা-বিভক্ত মালদহ জেলা তৃণমূল পরিবার। প্রথমে ব্লক মনিটরিং কমিটি গঠন নিয়ে বিদ্রোহ এবং তার তিন সপ্তাহের মধ্যেই ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে পরপর দুই পৌরসভায় অনাস্থা নিয়ে কার্যত চরম সঙ্কট তৈরি হয় মালদহে। শুধু তাই নয়, মালদার ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যেভাবে তৃণমূলের কাউন্সিলররা অনাস্থা এনেছে, তা সামাল দিতে মৌসম নূরের ভূমিকার সমালোচনা করতেও দেখা গেছে জেলায় দলের অনেক প্রবীণ নেতা নেত্রীদের।

আর এমতাবস্থায় সঙ্কট দূরীকরণে দলের সব শ্রেণীর নেতানেত্রীদের বিভেদ ভুলে ঐক্যের আবেদন জানালেন মৌসম বেনজির নূর। তাঁর দাবি, ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে অচিরেই মালদহে তৃণমূলের শক্তি বহুগুণ বাড়বে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে মালদহের দু’টি কেন্দ্রেই তৃণমূলের বিপুল ব্যবধানে পরাজয় ঘটেছে।

আর এরপরই দলীয় স্তরে তীব্র অনৈক্য দেখা দিতে শুরু করে। জেলা তৃণমূলের নেতাকর্মীরা কি কারণে দলের এই বিপর্যয় হল, তার ব্যাপারে মুখ খুলতে শুরু করেন। এহেন একটা পরিস্থিতিতে মালদহে দলকে নতুনভাবে চালাতে নতুন পর্যবেক্ষক হিসাবে যৌথ দায়িত্ব দেওয়া হয় দুই মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে ও গোলাম রাব্বানিকে। জেলা সভাপতির পদ থেকে মোয়াজ্জেম হোসেনকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয় মৌসম নুরকে। যার পরিবর্তে মোয়াজ্জেম হোসেন হন জেলায় দলের চেয়ারম্যান।

কিন্তু এত সব পরিবর্তন করেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টে সমস্যা আরও বেড়েছে। জেলা সভানেত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই মৌসম নুর জেলার বিভিন্ন ব্লকের মনিটরিং কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করলে অনেকেই জানান যে নতুন মনিটরিং কমিটি তাঁরা কোনোমতেই মেনে নেবেন না। আর এই ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেই মৌসম নূরের ঘোষিত কমিটি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখে রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু এক সমস্যা মিটে না মিটতেই তৈরি হয় আরেক সমস্যা।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

মালদা জেলার দুই পৌরসভায় দুই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দলীয় কাউন্সিলররা অনাস্থা আনলে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয় ঘাসফুল শিবিরের অন্দরমহলে।কিন্তু তাও সেভাবে কঠোর হাতে সেই সমস্যার সমাধান মৌসম নূর করতে না পারায় তাকে যখন অনেকেই সমালোচনায় বিদ্ধ করছে, ঠিক তখনই ফের আরেক দফা সমালোচনার মুখে পড়েন দলের জেলা সভানেত্রী। অনেকেই নিজেদের মধ্যে মৌসমের কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও, স্পষ্ট ভাষায় নিজেদের তীব্র বিরক্তি প্রকাশ করেন প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, আইএনটিটিইউসি’র জেলা সভাপতি মানব বন্দ্যোপাধ্যায় সহ প্রবীণ নেতৃত্বরা।

জানা গেছে, এই সমালোচনার পাল্টা জবাব দিতে চেয়েছেন মৌসম নূরের অনুগামী বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী তৃণমূল নেতানেত্রী। কিন্তু তাঁদের নিরস্ত করে মৌসম বেনজির নূর বলেন, দলের মধ্যে কিছু সমস্যা রয়েছে। এখন সমালোচনা, বাগযুদ্ধের সময় নয়। সকলকেই ধীরস্থির হয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। সমস্যা হলে দোষারোপ না করে নিজেদের মধ্যে কথা বলেই সমাধান করতে হবে।”

জেলা তৃণমূলের সভানেত্রীর অনুগামীদের বক্তব্য, জেলায় দলকে একসূত্রে বেঁধে রাখার ক্ষমতা একমাত্র মৌসমেরই রয়েছে। পরিকূল এই পরিস্থিতিতে দলের আপন-পর চিহ্নিত হয়ে যাবে। এদিন এই প্রসঙ্গে মৌসম নূর বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষ বিজেপি, সিপিএম সহ অন্যান্য বিরোধী দল। তাঁদের বিরুদ্ধে আমাদের আক্রমণ শাণাতে হবে।পাশাপাশি জনসংযোগ বাড়াতে হবে। মালদহ তৃণমূলে অনেক অভিজ্ঞ নেতানেত্রী রয়েছেন। জেলা কার্যালয়ে তাঁরা সর্বদাই স্বাগত। তাঁদের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকী তাঁরা প্রয়োজনে ফোন করেও পরামর্শ দিতে পারেন।”

এদিকে তৃণমূলের মধ্যে এরুপ অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে পাল্টা ময়দানে নেমেছে গেরুয়া শিবির। এদিন এই প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মণ্ডল বলেন, “সাম্প্রতিক ঘটনাবলী থেকেই বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের মধ্যে প্রথম মালদহেই তৃণমূলের নৌকার ভরাডুবি হবে। ওঁদের নেতাকর্মীরাও তা বুঝে গিয়েছেন। তাই এখন পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে দলনেত্রী সকলেই এখন অনাস্থার পাত্র-পাত্রী।” সব মিলিয়ে দলীয় কর্মী থেকে প্রাক্তন মন্ত্রী, মালদহ জেলা তৃণমূলের অন্দরে যত দিন যাচ্ছে, ততই যেন বিদ্রোহ বাড়ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!