এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > বাংলায় উন্নয়ন! অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে গেল তৃণমূলের গড়ে!

বাংলায় উন্নয়ন! অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে গেল তৃণমূলের গড়ে!

প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – রাজ্যের একাধিক রাস্তার, বিশেষত গ্রামীণ রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। এরপরই রাজ্যের বিভিন্ন বেহাল রাস্তার মেরামত ও নতুন রাস্তার নির্মাণ করতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের ঘোষণা করা হয়েছিল।যার উদ্বোধন করেছিলেন গতমাসের শেষদিকে মুখ্যমন্ত্রী। এরপর থেকেই এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল রাজ্যজুড়ে। পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের এক বেহাল রাস্তার কাজ এই প্রকল্পের মাধ্যমে শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু এই রাস্তার কাজ এতটাই নিম্নমানের হয়েছে যে, গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের কারণে, পুজোর মধ্যেই রাস্তা তৈরির কাজ বন্ধ করে দিতে হলো পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদকে। বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে, হাত দিয়ে টানলেই রাস্তার পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। এতটা খারাপ হয়েছে এই রাস্তার কাজ। এই জেলার গলসির ১ ব্লকের শিল্ল্যা রোডের রাইপুর সেতু থেকে লোয়াপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তার কাজও অত্যন্ত নিম্মানের হয়েছে বলে বিক্ষভ দেখালেন গ্রামবাসীরা।

প্রসঙ্গত রায়নার দেরিয়াপুর থেকে জামালপুরের বেরুগ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তার জন্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। সেই মতো শুরু হয় রাস্তার কাজ। কিন্তু অষ্টমীর দিনে এই রাস্তার কাজ নিয়ে অভিযোগ করলেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভ করে তাঁরা রাস্তার কাজ বন্ধ করে দিলেন। তারা অভিযোগ করেছেন যে, রাস্তা দিয়ে সাইকেল গেলেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ।

এ প্রসঙ্গে মাঠনশীপুরের বাসিন্দা হারুণ মল্লিক, শেখ সামসুল হুদা প্রমুখরা জানালেন যে, কয়েকদিন ধরেই এই রাস্তায় পিচ ঢালা শুরু হয়েছিল। কিন্তু গাড়ি গেলেই উঠে যাচ্ছে সমস্ত পিচ, পাথর। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর পথশ্রী প্রকল্পের আওতায় থেকেও রাস্তার এই অবস্থা হলো কি করে? জেলা পরিষদের মেন্টর ও সেইসঙ্গে জেলা তৃণমূলের কো অর্ডিনেটর উজ্জ্বল প্রামাণিক তাঁদের অভিযোগ সত্য বলে মেনে নিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত জানালেন, গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বিক্ষোভের খবর পেয়ে জেলা পরিষদের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। এই রাস্তার কাজ এখন বন্ধ করে রাখা হয়েছে। জেলা ইঞ্জিনিয়ারকে (ডিই) এই বিষয়ে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সভাধিপতি শম্পা ধাড়া জানিয়েছেন যে, এর রিপোর্ট পেলেই প্রকৃত ঘটনাটি পরিষ্কার হবে। যদি কোন বেনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়, তবে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার গলসির বামুনাড়া, রাইপুরের বেশকিছু বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, রাস্তার নিম্নমানের কাজ নিয়ে। সম্প্রতি লোয়াপুর থেকে বামুনাড়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। বামুনপাড়া থেকে রাইপুর সেতু পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার অংশের কাজ চলছে। তাদের অভিযোগ, ঠিকাদারকে বারবার বলার পরেও কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, এই রাস্তা দিয়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষ ও বালি বোঝাই ট্রাক ক্রমাগত চলাচল করে। তাঁরা হুমকি দিয়েছেন, প্রশাসনের কর্তারা যদি ঠিকঠাক কাজের তদারকি না করেন। তবে তাঁরা এই কাজ বন্ধ করে দেবেন।

এ প্রসঙ্গে রায়পুরের বাসিন্দা শেখ সালামউদ্দিন, চন্দন চৌধুরী প্রমুখরা জানালেন যে, অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি করছেন ঠিকাদাররা। হাঁটতে চলতে উঠে যাচ্ছে রাস্তার পিচ। এ কথা স্বীকার করেছেন গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ফজিলা বেগম। তিনি জানিয়েছেন, এখানে অত্যন্ত নিম্নমানের পিচ দিয়ে রাস্তা মেরামতের কাজ চলছে। ঠিকাদারকে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন, কিন্তু সমস্যার সমাধান হয় নি। তবে, এ প্রসঙ্গে ঠিকাদার রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন যে, সমস্ত রকম সরকারি নিয়ম মেনেই এই কাজ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে গলসি ১ বিডিও বিনয়কুমার মন্ডল জানিয়েছেন যে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির অভিযোগ তিনি পাননি। কাজ বন্ধ করার বিষয়টিও তাঁর জানা নেই। অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল বৈঠকে এই জেলার একাধিক রাস্তার দুরাবস্থা লক্ষ্য করে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তারপর থেকেই দ্রুত রাস্তার অবস্থা পর্যবেক্ষন শুরু করেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে পরিকল্পনা মাফিক জেলার সাতশো রাস্তার নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু অনেকে অভিযোগ করেছেন যে, উপযুক্ত নজরদারির অভাবে রাস্তার কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না অধিকাংশ স্থানেই। খোদ শাসকদলের গড়েই রাস্তা মেরামতে নিম্নমানের কাজ নিয়ে অভিযোগ উঠায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়তে হলো শাসকদল তৃণমূলকে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!