এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > বাঁকুড়ার গেরুয়া মাটিতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তৃণমূল! বিজেপি শিবিরে লাগল বড়সড় ভাঙন

বাঁকুড়ার গেরুয়া মাটিতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে তৃণমূল! বিজেপি শিবিরে লাগল বড়সড় ভাঙন

 

লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া জেলায় অত্যন্ত ভালো ফল করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এই জেলার দুটি লোকসভা আসন বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুরে পদ্ম ফুল ফুটেছে। শুধু তাই নয়, জেলার অধিকাংশ পৌরসভা আসন থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত স্তরে প্রায় সবকটি জায়গাতেই শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তুলনায় লোকসভা ভোটে এগিয়ে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু লোকসভা ভোট শেষ হওয়ার বেশ কিছুদিন কেটে গেছে।

ইতিমধ্যেই রাজ্যের উপনির্বাচনে ভালো ফল করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। আর এবার সেই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে শামিল হতে চলেছে বাঁকুড়া জেলা বলে খবর। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বাঁকুড়া জেলার ওন্দা, রতনপুর, তালডাংরা, সাতমৌলি অঞ্চলের ব্যাপক পরিমাণে বিজেপি কর্মী শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে বলে খবর।

ইতিপূর্বেই লক্ষ্য করা গেছে, বাঁকুড়া জেলাতে লোকসভা নির্বাচনে সফলতা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গ্রাম পঞ্চায়েত ভারতীয় জনতা পার্টি দখল করে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছ থেকে। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের কিছু আঞ্চলিক স্তরের ছোট, বড় নেতারা যোগ দিয়েছিল ভারতীয় জনতা পার্টিতে। ফলে সাংগঠনিক দিক থেকে ব্যাকফুটে চলে যাওয়াকে পুনরুদ্ধার করতে রাজনৈতিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে সাংগঠনিকভাবে জেলাকে দুই ভাগে ভাগ করে পূর্ববর্তী জেলা সভাপতি অরূপ খাকে পদ থেকে সরিয়ে সেই জায়গায় বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার শুভাশিস বটব্যাল এবং বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার শ্যামল সাঁতরাকে দায়িত্ব দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

জানা যাচ্ছে, নতুন নতুন দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরেই তৃণমূলের পক্ষে হাওয়া ফেরাতে শুরু করেন নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, বহু পুরাতন বিজেপি কর্মীরা শাসক দলের ছত্রছায়ায় আসতে শুরু করে। সেরকমই সম্প্রতি ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চা সহ-সভাপতি বীণা দাসের নেতৃত্বে রতনপুর এলাকায় 11 জন ও ওন্দা এলাকায় বিশ্বজিৎ মাহাতর নেতৃত্বে আটজন ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মী যোগ দিয়েছেন তৃণমূল শিবিরে।

এদিনের অনুষ্ঠানে যোগদানকারী ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যদের হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পতাকা তুলে দেন বাঁকুড়া জেলার প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক অরূপ খাঁ। এর থেকেও বড় সফলতা এসেছে তালডাঙ্গা, সাতমৌলি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। যেখানে ভারতীয় জনতা পার্টির জেলা সম্পাদক তোতন লায়েকের নেতৃত্বে সুকুমার লায়েক সহ বেশ কিছু বিজেপি কর্মী সমর্থক তৃণমূল নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলায় ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি পিনাক দাস যোগদান করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসে।

এদিন দল পরিবর্তন করার সময় ভারতীয় জনতা পার্টির অন্যতম নেতা মুকুল রায়ের নাম না করে পিনাক দাস বলেন, “দল পরিবর্তনের নায়ক ইতিমধ্যে হ্যাটট্রিক করে ভারতীয় জনতা পার্টিতে চলে এসে এখন বলেন, তিনি পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছেন। কিন্তু আমি কোনো পাপ করিনি। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। রতনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ভারতীয় জনতা পার্টি দখল নেওয়ার সাথে সাথেই মোরাম থেকে আম বাগানের টাকা ওই দলের নেতারা চুরি করতে শুরু করেন।”

তাই এদিনের বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ভারতীয় জনতা পার্টির থেকে মোহভঙ্গ হয়ে রাজ্যের উন্নয়নের মূর্ত প্রতীক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে লোকসভা নির্বাচনের পরে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁকুড়া জেলা। যেখানে শুধুমাত্র লোকসভার নিরিখে নয়, পৌরসভাগুলির মধ্যে অধিকাংশ আসনেই এগিয়ে ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি।

এমত অবস্থায় যদি দলের হাল ফেরানো সম্ভব হয়, তাহলে আগামী দিনে বাঁকুড়া জেলা থেকে বড়সড় ধাক্কা খেতে হতে পারে রাজ্যের শাসক দলকে। এই কথা অনুমান করতে পেরেই সাংগঠনিক রদবদলের মাধ্যমে এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠনকে চাঙ্গা করতে উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী। আর নেত্রীর সেই উদ্যোগ যে ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হতে শুরু করেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি এখন কোন রাস্তায় নিজেদের সংগঠন ধরে রাখে! সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!