বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার আদিবাসী সমাজে গেরুয়া ঝড় তুলতে আসরে স্বামী অসীমানন্দ! বের করে দিল প্রশাসন? পুরুলিয়া-ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া বিশেষ খবর রাজ্য July 25, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – 2021 এর বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই পারদ চড়ছে রাজ্যের রাজনৈতিক আবহাওয়ার। একদিকে গেরুয়া শিবির এবং অন্যদিকে তৃণমূল শিবির। রাজ্যের মসনদ দখলের লড়াইতে এই দুই দলকেই বৃহৎ আকারে দেখা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও রাজ্যে কংগ্রেস, সিপিএমও পিছিয়ে নেই। অন্যদিকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া অঞ্চল অর্থাৎ জঙ্গলমহল জুড়ে 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই বিজেপি ঘাঁটি গেড়েছে। তৃণমূল শিবির এলাকার জনমত হারিয়ে রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছিল সেই সময়। আবার নতুন করে বিধানসভার লড়াইতে নেমে তৃণমূল শিবির জঙ্গলমহলের ওপর নজর দিয়েছে। আর এবার তৃণমূল শিবিরকে পিছু হটানার জন্য মনে করা হচ্ছে আসরে নামছেন এবার স্বামী অসীমানন্দ। কে এই অসীমানন্দ? অসীমানন্দ হলেন পুলিশের খাতায় নাম ওঠা একজন অপরাধী। যিনি এক সময় সমঝোতা এক্সপ্রেস, হায়দ্রাবাদ মক্কা মসজিদ এবং আজমীর শরীফ দরগা বিস্ফোরণে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। যদিও তিনি সমস্ত মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়ে যান। যা নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক রয়েছে এখনও। এরপরে তিনি চলে যান আন্দামান। সেখান থেকে ফিরে আসেন এবং অযোধ্যা পাহাড়ের ওপরে একটি মন্দিরে জুলাই মাস থেকে ছিলেন। খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে প্রশাসনের শীর্ষ মহল। এরপর নবান্নের নির্দেশে গত একুশে জুলাই রাতে বাগমুন্ডি থানার পুলিশ রীতিমত জোর করেই রাঁচি পাঠিয়ে দেন স্বামী অসীমানন্দকে। এ প্রসঙ্গে রাঁচীর একটি আদিবাসী আশ্রম থেকে বৃহস্পতিবার স্বামী অসীমানন্দ জানিয়েছেন, বাগমুন্ডি থানার অফিসার তাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দেন প্রথমে। এরপর একুশে জুলাই রাতে পুলিশ গাড়ির ব্যবস্থা করে এবং স্থানীয় এক বিজেপি নেতার সঙ্গে তাকে রাঁচি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যদিও বাগমুন্ডি থানার পুলিশ অসীমানন্দকে রাঁচি পাঠানোর কথা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার সেলভামুরুগান জানিয়েছেন, রাজ্যের যেকোনো জায়গায় যে কেউ যখন ইচ্ছা আসতেই পারেন বা চলেও যেতে পারেন। যদিও অসীমানন্দের দাবি প্রসঙ্গে তিনি খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - অন্যদিকে রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কোনো উত্তর দেননি। নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি থেকে পাঁচ মাস আন্দামান ঘুরে বেড়ান অসীমানন্দ। এরপর গত 5 ই জুন তিনি বিমানে দমদম আসেন এবং সোজা বাগমুন্ডি চলে যান। সেখানে 14 দিন নির্ভৃতে থাকেন। তারপর বিভিন্ন আদিবাসী এলাকায় ঘুরতে থাকেন কারণ আদিবাসীদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খুবই ভালো। এরপর তিনি অযোধ্যা পাহাড়ের মাথায় রাম মন্দির সংলগ্ন একটি আশ্রমে থাকা শুরু করেন। আর তখনই গোয়েন্দাদের নজরে আসেন তিনি। তড়িঘড়ি গোয়েন্দারা রাজ্য পুলিশকে সচেতন করেন। অন্যদিকে সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের এক গোয়েন্দা কর্তা জানিয়েছেন, অসীমানন্দের সঙ্গে পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার আদিবাসী সমাজের যোগ অত্যন্ত নিবিড়। সে ক্ষেত্রে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর উপস্থিতিকে কাজে লাগাতে পারে গেরুয়া শিবির। এবং সে কথা মাথায় রেখেই শাসকদলের পক্ষ থেকেও অসীমানন্দের বাগমুন্ডিতে থাকা নিয়ে আপত্তি আসছিল। অন্যদিকে নবান্নের এক কর্তা জানিয়েছেন, যদি কারোর উপস্থিতি সামাজিক সদ্ভাব নষ্ট করে তাহলে প্রশাসন যেকোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। একই কারণে একসময় প্রাক্তন বিশ্ব হিন্দু পরিষদ নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়াকেও রাজ্যে প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুলিয়া অঞ্চলে অসীমানন্দকে কাজে লাগাতে গেরুয়া শিবির যথেষ্ট তৎপর হতেই পারে। কারণ ইতিমধ্যে জঙ্গলমহলের জমি পুনরুদ্ধার এর কাজে তৃণমূল শিবির ছত্রধর মাহাতোকে নামিয়ে দিয়েছে। যদিও অসীমানন্দকে নিয়ে এখনো পর্যন্ত গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। আপাতত অসীমানন্দ কি সত্যিই গেরুয়া শিবিরের হয়ে কাজ করতে চলেছেন? নাকি শুধুই সন্দেহের বশবর্তী হয়ে পুলিশ তাঁকে রাঁচি পাঠিয়ে দিল? এই উত্তর সময় দেবে। আপনার মতামত জানান -