এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিপ্লবে আস্থা নেই মমতার, হেরে গিয়েও আস্থাভাজন অর্পিতা – বালুরঘাট নিয়ে জোর শোরগোল রাজ্যে

বিপ্লবে আস্থা নেই মমতার, হেরে গিয়েও আস্থাভাজন অর্পিতা – বালুরঘাট নিয়ে জোর শোরগোল রাজ্যে


উত্তরবঙ্গের তৃণমূলের সেফসিট হিসেবে পরিচিত বালুরঘাট লোকসভা আসনে এবার পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়েছে সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে। আর হেরে যাবার পরই বালুরঘাটের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের এই হারের পেছনে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র ও তার অনুগামীদের একাংশের হাত রয়েছে বলে দাবি করতে থাকেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই।

আর এবার শনিবার বিকেলে রাজ্যের সমস্ত জেলার নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠকে সেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিপ্লব মিত্রের ডানা ছেটে দিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এদিন বিপ্লব মিত্রের কাছ থেকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব কেড়ে নিয়ে বালুরঘাটের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের উপর সেই দায়িত্ব দেন তৃণমূল নেত্রী। এই ঘটনার পরই জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে প্রবল চাঞ্চল্য।

বস্তুত, এর আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে গত 2016 সালের বিধানসভা ভোটের কিছুদিন আগে জেলা তৃণমূল সভাপতি পদ থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে সেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বালুরঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীকে। কিন্তু তারপরও বিগত বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ছয়টি বিধানসভার মধ্যে চারটি বিধানসভাতেই পরাজিত হতে হয় তৃণমূলকে।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

আর এর কিছুদিন পরে ফের বিপ্লব মিত্রকে জেলা তৃণমূল সভাপতি পদে ফিরিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার লোকসভা ভোটে সেই বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর হারের পরই অর্পিতা ঘোষকে জেলা তৃণমূলের সভাপতির দায়িত্ব দিল তৃণমূল।

সূত্রের খবর, গতকাল দলীয় বৈঠকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্রের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, “আপনি তৃণমূলে নাকি বিজেপিতে থেকে রাজনীতি করতে চান, তা আপনাকেই স্থির করতে হবে।” আর এরপরই জেলা সভাপতি পদ থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে সেখানে অর্পিতা ঘোষকে বসানো হল বলে ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এইভাবে বারে বারে জেলার সংগঠন বদলানোয় ক্ষুব্ধ দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের একাংশ।

এদিন এই প্রসঙ্গে বিপ্লব মিত্র ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, “গঙ্গারামপুরে বিজেপি 22 হাজার ভোট পেল, আর বালুরঘাটে 39 হাজার ভোটে লিড পেল, তপনে 23 হাজার ভোট আমরা পিছিয়ে গেলাম। অথচ এইসবের জন্য শুধুমাত্র বিপ্লবদাকেই দায়ী করা হল।” অন্যদিকে জেলা সভাপতির দায়িত্ব অর্পিতা ঘোষকে দেওয়া প্রসঙ্গে এদিন তপনের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাসদা বলেন, “সভাপতি বদলে নতুন করে সংগঠন তৈরি করা কঠিন কাজ। তবে আমরা এই ব্যাপারে চেষ্টা করব।”

এদিকে এই প্রসঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। আমার নামে মমতাকে মিথ্যে কথা বলা হয়েছে। উনি যেটা ভালো বুঝেছেন, করেছেন। সভাপতি বদল করে জেলার সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে বলেই হয়তো এই কাজ করা হয়েছে। কিন্তু আমি যদি দলীয় প্রার্থীকে হারিয়েই থাকি, তাহলে অর্পিতা 5 লক্ষের ওপরে ভোট পেল কি করে!”

এদিকে সোমবার জেলায় ফিরেই দলের সমস্ত জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন বলে জানিয়ে দেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের নব্য সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। তবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূলের দায়িত্ব থেকে বিপ্লব মিত্রকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে দলের অন্দরে নানা সমালোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকে বলছেন, এবার হয়ত বা বিপ্লব মিত্রের খাসতালুক গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের শাখা সংগঠনের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের অনেকেই দল বদল করতে পারেন।

পাশাপাশি জেলা জুড়েও তৃণমূলের সংগঠনে ধ্বস নামতে পারে। আর যদি এটাই সত্যি হয়, তবে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের নব্য সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া অর্পিতা ঘোষ জেলার সংগঠনকে ঘুরে দাঁড় করাতে কতটা সক্ষম হবেন এবং প্রকৃত ভালো ছেলেদের সংগঠনের নেতৃত্ব দানের জন্য নিয়ে এসে তিনি কতটা অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবেন তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!