এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > নদীয়া-২৪ পরগনা > তৃণমূলের বাধা পেরিয়ে আমপানে ত্রাণ বিলের মাধ্যমেই ময়দানে কোমর বেঁধে নামছে গেরুয়া শিবির

তৃণমূলের বাধা পেরিয়ে আমপানে ত্রাণ বিলের মাধ্যমেই ময়দানে কোমর বেঁধে নামছে গেরুয়া শিবির


দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোই রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের আসল কাজ হওয়া উচিত। একদিকে করোনা ভাইরাস এবং অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে সম্প্রতি বয়ে গিয়েছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আমপান। আর এই ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে রীতিমত বিধ্বস্ত বিভিন্ন এলাকা। রাস্তায় পড়ে আছে গাছ। আর সেই গাছের ডাল পড়ার কারনে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে অনেক জায়গা আজ বিদ্যুৎহীন।

এখনও পর্যন্ত অনেক এলাকাতেই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল না হওয়ায় সমস্যায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ হতেও দেখা যাচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে একদিকে যেমন সরকারকে কটাক্ষ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি, ঠিক তেমনই এবার ময়দানে নেমে মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। বিপদের দিনে মানুষের কাছে পৌঁছে ত্রাণ দিয়ে সহযোগিতা করতে উদ্যোগী বিজেপি নেতারা।

সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপির কাছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ভয়াবহ দুর্যোগের সময় আর বাড়িতে বসে থাকলে চলবে না। এখন মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। দুর্গতদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হবে। ইতিমধ্যেই বাংলার সমস্ত বিজেপি সাংসদকে নিজের লোকসভা কেন্দ্রের ত্রান বিলির কাজের তদারকি করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বদের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেই নির্দেশ পাওয়া মাত্রই ময়দানে নেমে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ থেকে মুকুল রায়, রাহুল সিনহা থেকে সায়ন্তন বসুর মত নেতৃত্বরা। জানা গেছে, শনিবার দুপুরে রাজ্য বিজেপি দপ্তরে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, রাহুল সিনহা সহ বঙ্গ বিজেপির অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিলি করার উদ্যোগ নিলেও, কখনও পুলিশি বাধা, আবার কখনও বা তৃণমূলের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তবে তৃণমূলের বাধার মুখে পড়েও যে তারা পিছিয়ে যাবেন না, তা নিজেদের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন বিজেপি নেতৃত্বরা। জানা গেছে, শনিবার মেদিনীপুরে ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু পথেই তাকে আটকে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে হুগলিতে গিয়ে আক্রান্তের শিকার হয়েছেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তবে এদিন বিজেপি নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় সদলবলে দক্ষিণ 24 পরগনায় উপস্থিত থেকে ত্রাণ বিলি নিয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আর এরপরই তিনি বলেন, “দলের সর্বস্তরের কর্মীদের ত্রান বিলির কাজে যুক্ত করা হয়েছে। সরকারি ত্রাণ দুর্গতদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে কি না, সে দিকেও আমাদের নজর থাকবে।” অর্থাৎ করোনা ভাইরাসকে আটকাতে দীর্ঘদিন লকডাউন চলার কারণে এমনিতেই সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ ছিল।

তাই আগামী 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সাফল্য পেতে হলে এখন ভয়াবহ দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভাবমূর্তি যে তুলে ধরতে হবে, সেই ব্যাপারে বঙ্গ বিজেপিকে বার্তা দিতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এদিন এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতা বলেন, “করোনার জন্য অনেকটা সময় চলে গিয়েছে। আর বসে থাকলে নতুন করে জনসংযোগ শুরু করতে হবে। আগামী বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে দুর্যোগের আবহে আমরা রাজনীতির চেনা মাঠে গা ঘামাতে শুরু করেছি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাসের সময় লকডাউন চলার কারণে নানা জায়গায় বিজেপির পক্ষ থেকে ত্রাণ বিলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় বিজেপির নানা সাংসদদের। যার ফলে সেভাবে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেনি গেরুয়া শিবির। কিন্তু এবার বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়ার পরই সমস্ত বাধাকে উপেক্ষা করে বিজেপি যে ময়দানে নামবে এবং মানুষের পাশে দাঁড়াবে, তা কার্যত নিশ্চিত হয়ে গেছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মূল লড়াইটা হবে তৃণমূল বনাম বিজেপি। আর সেখানে লড়াইয়ের মাত্রাটা বাঁধা থাকবে মূলত করোনা ও আমপানের উপরেই। আর তাই, বাংলার কুর্শি দখলের লড়াইয়ে একদিকে বিজেপি যেমন এই দুই ক্ষেত্রে তৃণমূলের সার্বিক ব্যর্থতা তুলে ধরবে। অন্যদিকে, তেমনই তৃণমূল ও প্রশাসনের বাধা পেরিয়েও কিভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তাও তুলে ধরবে। আর তাই, এখন এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি তৃণমূলকে কতটা চাপে ফেলে, তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!