প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – সোমবার কথা ছিল বিজেপির মিছিলে তিনি উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছিল জল্পনা। আর এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে সেই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে উপস্থিত হতে দেখা গেল ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার এবং দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য আবু তাহেরকে। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।

হঠাৎ করেই বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে তৃণমূল বিধায়ক এবং তৃণমূলের এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তাহলে কি তৃণমূলের এই সমস্ত হেভিওয়েট জনপ্রতিনিধিরা এবার ভারতীয় জনতা পার্টিতে পা বাড়াবেন, নাকি শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপির মিছিলে অনুপস্থিত থেকে বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন! এই রকমই নানা গুঞ্জন তৈরি হয়েছে রাজনীতিতে।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে উপস্থিত হন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার। যেখানে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা পরিষদের সদস্য আবু তাহের। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তিনজনের মধ্যে বিস্তর আলোচনা হয় বলে খবর। আর এখানেই তৈরি হয়েছে জল্পনা। বেশ কিছুদিন ধরেই ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল বিধায়ক গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে সরব হয়েছিলেন। এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাতে তাকে দায়সারাভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি।

আর এই পরিস্থিতিতে সেই তৃণমূল বিধায়কের বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে উপস্থিতি কার্যত জল্পনাকে অনেকাংশেই বাড়িয়ে দিল বলে মত বিশেষজ্ঞদের। ইতিমধ্যেই বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, খুব তাড়াতাড়ি তৃণমূলে বড় ভাঙ্গন ধরবে। আর এই পরিস্থিতিতে যদি ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল বিধায়ক বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার মত আলোচনা করেন, তাহলে তা যে তৃণমূলের কাছে বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।হঠাৎ করে কেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে উপস্থিত হলেন তিনি?

এদিন এই প্রসঙ্গে ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল বিধায়ক দীপক হালদার বলেন, “কলকাতায় ব্যক্তিগত কাজে ওনার বাড়ির কাছে গিয়েছিলাম। অনেক দিন দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। তাই দেখা করে এলাম‌। নিতান্ত ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ। রাজনীতির বিষয়ে কিছু আলোচনা হয়নি। ব্যক্তিগত আলোচনার মাঝে শোভনদাকে জানিয়েছি, এখন আপাতত এসব কিছু নিয়ে ভাবছি না।” তবে দীপকবাবু যে কথাই বলুক না কেন, দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হল, অথচ সেখানে রাজনীতি থাকবে না, তা মানতে নারাজ বিশ্লেষকরা।

বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন রাজনীতির অন্যতম বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে, তখন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তৃণমূল বিধায়কের উপস্থিতি যে রাজ্য রাজনীতিতে ব্যাপক শোরগোল ফেলে দিল, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত বিশ্লেষকরা। তবে অনেকে বলছেন, এদিন বিজেপির কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত অনুপস্থিত ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। স্বাভাবিকভাবেই দলের সঙ্গে তার দূরত্ব আরও বৃদ্ধি করবে বলেই দাবি করা হচ্ছে।

আর এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল বিধায়কের তার বাড়িতে উপস্থিতি তাকে কি তৃণমূলের আনার কৌশল, তা নিয়েও জল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও বা সেই সমস্ত সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন অনেকে। কেননা যে তৃণমূল বিধায়ক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন, তার সঙ্গেও তৃণমূল নেতৃত্বের সম্পর্কের দিনকে দিন অধঃপতন হতে শুরু করেছে বলে গুঞ্জন তৈরি হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল বিধায়কের বেশ কিছুক্ষণ ধরে বৈঠক রাজ্য রাজনীতিতে কোন সমীকরণের সৃষ্টি করে, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।