এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > বাংলার “ভয়াবহ” পরিস্থিতি বঙ্গ-বিজেপি বর্ণনা করতেই রাষ্ট্রপতি “উদ্বেগ” প্রকাশ করলেন!

বাংলার “ভয়াবহ” পরিস্থিতি বঙ্গ-বিজেপি বর্ণনা করতেই রাষ্ট্রপতি “উদ্বেগ” প্রকাশ করলেন!


কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল রাজীব কুমারকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধরনায় বসে যাওয়ার সময়ই অনেকে আঁচ করেছিলেন, এবার হয়তো বা রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে। তবে সেই সময় এই ব্যাপারে নানা জল্পনা-কল্পনা চললেও তা নিয়ে কোনো স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে রাজ্যের আইন শৃংখলার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে দিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যের বিজেপি নেতারা পরোক্ষে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষেই সওয়াল করেছেন।

“বাংলায় গণতন্ত্র নেই” বলে বারেবারেই বাংলার শাসনের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি গভীর চাপ সৃষ্টি করে সরব হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান বঙ্গ বিজেপির চাণক্য মুকুল রায়। কিন্তু এতদিন এই ব্যাপারে রাজভবন, থানা, পুলিশ নানাক্ষেত্রে বিজেপি তাদের অভিযোগ জানালেও রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে দেখা যায়নি তাদের।

তবে জিয়াগঞ্জে এক শিক্ষক, তার সন্তান সম্ভবা স্ত্রী এবং তার ছোট্ট বাচ্চা শিশুকে কুপিয়ে খুনের ঘটনার পরেই যখন রাজ্য রাজনীতি প্রবল পরিমাণে উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে, ঠিক তখনই এক প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে নানা অভিযোগ জানালেন।

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, বাংলার বিজেপি সাংসদ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া, রাজু বিস্তা, অর্জুন সিংহ, বঙ্গ বিজেপি নেতা মুকুল রায় এবং পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। আর বাংলা থেকে জয়ী বিজেপি সংসদ তথা বিজেপি নেতাদের রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা নিয়ে প্রথম থেকেই ব্যাপক জল্পনা তৈরি হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে।

কেননা বর্তমানে যেভাবে প্রায়শই বিজেপির পক্ষ থেকে রাজ্যের আইনশৃংখলার ব্যাপারে অভিযোগ করে তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করা হচ্ছে, ঠিক সেইসময় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে বিজেপি নেতৃত্বের এই দরবার রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জন্যই কি অনুরোধ! তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল একাংশ। তবে তারা রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে কোনো দরবার করেননি বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্বরা।

কিন্তু বাংলার বিজেপি সাংসদ এবং নেতৃত্বরা রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়ে বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। কিন্তু ঠিক কি কি পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুযোগ জানালেন তারা! সূত্রের খবর, জিয়াগঞ্জের সাম্প্রতিককালে যে নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে, এদিন রাষ্ট্রপতিকে সেই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেছেন বিজেপির প্রতিনিধিদল। আর তা শুনে রীতিমতো হতবাক বনে গেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ বলে খবর।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার পর বাইরে বেরিয়ে এসে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী বলেন, “বাংলার পরিস্থিতি ভয়াবহ। জিয়াগঞ্জে যেভাবে খুনের ঘটনা ঘটেছে, তা শুনে রাষ্ট্রপতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত নয় দিনে আমাদের কর্মীরা খুন হয়েছেন। নানা মিথ্যে মামলায় বিজেপির 28 হাজার কর্মীকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। রাজ্যে তৃণমূলের কোনো ক্যাডার নেই।

পুলিশই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যাডার হয়ে কাজ করছে। 1972 সালে বাংলায় যে পরিস্থিতি হয়েছিল, সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মানুষ বাড়ি থেকে বেরোলে আর বাড়িতে ঢুকতে পারবে কিনা তা নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তাই আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি বাংলার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হোক।”

তবে রাষ্ট্রপতি শাসনের ব্যাপারে তারা কোনো দাবি জানিয়েছেন কিনা! তা নিয়ে দেবশ্রী চৌধুরীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন যে, না। তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই বাংলার মানুষ উপযুক্ত সময়ে এই তৃণমূলকে গণতান্ত্রিক উপায়ে জবাব দেবে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি খুব ভালো মতো করেই জানে, বাংলায় এখন তারা অত্যন্ত ভালো জায়গায় রয়েছে। তাই এখন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পক্ষে তারা সওয়াল করলে তা তাদের ক্ষেত্রেই হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই গণতান্ত্রিক উপায়ে তারা জবাব দেবে বলে রাষ্ট্রপতির দরবারে গিয়ে বাংলার পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ বলে অনুযোগ করে রাজ্যপালের কাছ থেকে রাষ্ট্রপতি যাতে রিপোর্ট চান, তার আর্জি জানালেন।

কেননা বর্তমানে জগদীপ ধনকার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই তার সাথে একাধিক ব্যাপারে রাজ্য সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। প্রায়শই নবান্ন বনাম রাজভবনের দ্বৈরথ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আর এই পরিস্থিতিতে জিয়াগঞ্জের নৃশংস খুনের ঘটনা সহ বিজেপির পক্ষ থেকে রাস্ট্রপতির কাছে যে সমস্ত ব্যাপারে অভিযোগ করা হয়েছে, সেই সমস্ত ব্যাপার নিয়ে যদি রাষ্ট্রপতি রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট চান, তাহলে রাজ্যপাল যে রাজ্য সম্পর্কে খুব একটা ভালো রিপোর্ট দেবে না, তা বুঝতে পেরেই এবার রাস্ট্রপতির দরবারে গিয়ে কৌশলী অভিযোগ জানাল বিজেপির প্রতিনিধিদল বলে মত বিশ্লেষকদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!