এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > উপনির্বাচনে ভরাডুবি হতেই জেলায় জেলায় বিজেপির দুর্নীতি, স্বজনপোষন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্রতর

উপনির্বাচনে ভরাডুবি হতেই জেলায় জেলায় বিজেপির দুর্নীতি, স্বজনপোষন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তীব্রতর

লোকসভা নির্বাচনে ভালো ফলাফলের পর বিজেপিকে চরম আত্মপ্রত্যয়ী হতে দেখা গিয়েছিল। 18 টি আসন পেয়ে গেরুয়া শিবির নিজেদের সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটাতে শুরু করে। তবে লোকসভায় 6 মাস আগে শুরু হওয়া বিজেপির বিজয়রথ আটকে গিয়েছে সদ্যসমাপ্ত রাজ্যের 3 বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলে। করিমপুর, খড়গপুর এবং কালিয়াগঞ্জে ব্যাপক ভোটে পরাজিত হয়েছে বিজেপি প্রার্থীরা। আর বিজেপির এই পরাজয়ের পেছনে তাদের আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব যেমন দায়ী, ঠিক তেমনই পদ পাওয়ার জন্য দুই গোষ্ঠীর নেতাদের সংঘর্ষও দায়ী বলে মনে করছেন একাংশ।

কেননা লোকসভায় বিজেপি ভালো ফল করলেও আগামী 2021 এর বিধানসভায় সংগঠনের জোরেই যে তাদেরকে জিততে হবে, তা অনুধাবন করেছিল বিজেপির অনেক নেতৃত্ব। আর তাইতো সম্প্রতি জেলায় জেলায় শুরু হয়েছিল বিজেপির মন্ডল সভাপতি নির্বাচন। কিন্তু সেই মন্ডল সভাপতি নির্বাচন নিয়ে যেভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে, তা রীতিমতো অস্বস্থিতে ফেলেছে নেতৃত্বকে। আর এই পরিস্থিতিতে গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের ফলে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আরও প্রকাশ্যে চলে এল।

সূত্রের খবর, শুক্রবার উত্তরপাড়ার বিজেপি নেতা প্রণব চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ তুলে তার অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। যে ঘটনা নিয়ে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। এলাকায় মন্ডল সভাপতি সহ ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে নানা পোস্টারও মারা হয়। আর উপনির্বাচনের পর বিজেপি কর্মী সমর্থকদের দলীয় নেতার বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলছে বিজেপি নেতৃত্বকে। এদিন এই প্রসঙ্গে সেই প্রণব চক্রবর্তী বলেন, “32 বছর ধরে জল করছি। দলের কেউ আমার বিরুদ্ধে এমন করতে পারে না। এটা তৃণমূলীদের খেলা।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিকে উত্তরপাড়ার পাশাপাশি উপ-নির্বাচনের ফল প্রকাশের সাথে সাথেই বৃহস্পতিবার রাতে খড়দহের বোদাই ঘোষপাড়া এলাকায় বিজেপির নতুন বনাম পুরনো কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা সামনে এল। অভিযোগ, বিজেপির আদি এবং নব্য নেতাকর্মীদের দ্বন্দ্বে দলের একটি কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। আক্রান্ত হন দুই গোষ্ঠীর নেতাকর্মীরাই। যদিও বা এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে গেরুয়া শিবির।

এদিন এই প্রসঙ্গে কলকাতা উত্তর শহরতলী জেলা বিজেপির সভাপতি কিশোর কর বলেন, “তৃণমূলীরা আমাদের পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছে। ওদের হামলায় আমাদের বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। আমাদের দলীয় কর্মী অভিক দাসকে মারধর করা হয়েছে।” তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এদিন এই প্রসঙ্গে খড়দহ ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুকুর আলী বলেন, “সিপিএম থেকে আসা নব্য এবং পুরনো বিজেপি কর্মীদের মধ্যে গন্ডগোল বাঁধে। তাতেই ওদের পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়েছে।”

এদিকে শুক্রবার সিউড়ির জেলা বিজেপির কার্যালয়ে মন্ডল সভাপতি নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রবল বিক্ষোভ দেখাতে দেখা যায় বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের। যা নিয়ে সেখানেও উত্তেজনা ছড়ায়। রুপো নির্বাচনের ফলাফলের পর একের পর এক জেলা বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসায় এখন প্রবল অস্বস্তিতে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এইভাবে যদি বিজেপির দ্বন্দ্ব চলতে থাকে, তাহলে রাজ্য জয় তো দূর অস্ত, তাদের দলীয় শৃঙ্খলা নিয়েই এবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে।

তাই মন্ডল সভাপতি নিয়োগের পরে সাংগঠনিক শক্তি উদয়ের স্বপ্ন দেখা বিজেপি নেতৃত্ব এখন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রোধ করতে কি পদক্ষেপ নেয়, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। ফলে, গেরুয়া শিবিরে লোকসভা নির্বাচনের পরে যে ফুরফুরে মেজাজ শুরু হয়ে ছিল – উপনির্বাচনে ধরাশায়ী হতেই তা কার্যত উধাও। চারিদিক থেকেই তীব্র গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছবি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ফলে পুরভোট ও বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই অন্তর্দ্বন্দ্ব সামলে গেরুয়া শিবির কতটা ভালো ফল করতে পারে সেদিকেই আপাতত তাকিয়ে সকলে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!