বিজেপিকে নিয়ে এবার বড়সড় দ্বন্দ্বে নামল তৃণমূল- সিপিআইএম, শুরু একে অপরকে তীক্ষ্ণ আক্রমণ কলকাতা রাজ্য October 12, 2019 বঙ্গ রাজনীতিতে এখন বিজেপি যেন সকলের মধ্যমণি হয়ে গিয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে, সিপিএমের জন্যই রাজ্যে বিজেপির এই বাড়বাড়ন্ত। অন্যদিকে একই ভাবে বামেদের তরফে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে আক্রমন করা হচ্ছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণনীতির কারণেই রাজ্যে সাম্প্রদায়িক শক্তি বিজেপির এই উত্থান ঘটেছে। আর বিজেপিকে মাঝখানে রেখে তৃণমূল বনাম সিপিআইএমের এই রাজনৈতিক লড়াই এখন চরম আকার ধারণ করেছে বঙ্গ রাজনীতিতে। বস্তুত, সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস 42 এ 42 স্লোগান তুললেও 22 টি আসনেই আটকে যেতে হয়েছে তাদের। অপরদিকে বিজেপি শাসক দলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে দুই থেকে নিজেদের আসনসংখ্যা 18 করে নিয়েছে। আর বাংলায় বিজেপির এই উত্থানের জন্য সিপিএমের ভোটব্যাঙ্ক বিজেপিতে ট্রান্সফার হয়েছে বলে অভিযোগ করতে দেখা গেছে তৃনমূল কংগ্রেসকে। সম্প্রতি তৃণমূলের মুখপত্র “জাগো বাংলা” শারদ সংখ্যায় “কিছু কথা, কিছু ব্যথা” শীর্ষক প্রবন্ধে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ত্রিপুরার কথা তুলে ধরে সিপিএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। যেখানে তিনি বলেন, “ত্রিপুরায় গণতন্ত্র কাঁদছে। সাধারণ মানুষের সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ এই সময় সিপিএমের বন্ধুদের দেখে আমি বিস্মিত। তারা ত্রিপুরা নিয়ে নীরব। রাজ্যটা বিজেপির হাতে তুলে দিয়ে চুপ করে বসে আছে। কোনো প্রতিবাদ নেই। যত রাগ আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকারের ওপর। যাদের “ত্রিপুরা অভিযান” করার কথা তারা “নবান্ন অভিযান” করছে।” আর তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা ভোটে বাংলায় নিজেদের দলের খারাপ ফলাফল নিয়ে এবং ত্রিপুরার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বাম-বিজেপি সমঝোতার অভিযোগ করলেও তা নিয়ে পাল্টা মহম্মদ সেলিমকে খাড়া করে নিজেদের দলীয় মুখপত্র “গণশক্তিতে” সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হতে চলেছে বামেরা। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - সিপিএমের জাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের সঙ্গে মিথ্যাচারিতা করছেন। ত্রিপুরার গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির তেমন কোনো অস্তিত্ব ছিল না। কিন্তু নির্বাচনের আগে একাধিক বিধায়ক সহ সেই রাজ্যের প্রায় গোটা তৃণমূল দলটাই বিজেপি দলে নাম লিখিয়েছে। এমনকি তৃণমূলের রাজ্য দপ্তর বিজেপির হাতে চলে গিয়েছে। সব্যসাচী দত্তের মত সোনার টুকরো তৃণমূলীরা সেই আশঙ্কা প্রবল করে তুলেছেন। পাশাপাশি ত্রিপুরার বর্তমান বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে সিপিএম নেতারা বলেন, “ত্রিপুরায় গত 19 মাস ধরে একটা নৈরাজ্যের সরকার চলছে। কিভাবে সেই রাজ্যের সিপিএমকে খতম করা যায়, তার জন্য সমস্ত চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ বিভিন্ন নেতারা রেহাই পাচ্ছেন না। একমাত্র সিপিএম শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন চালাচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে নিজের গোয়েন্দা দপ্তর থেকে সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট চোখ বোলালেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসল সত্যটা বুঝে যাবেন।” পাশাপাশি বামেদের তরফে সারদা – নারদার মত কান্ডগুলি নিয়েও তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে সমঝোতা হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছে। আর বিজেপিকে নিয়ে তৃণমূল বনাম বামেদের এই রাজনৈতিক চর্চার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, যেভাবে বিজেপির বাড়বাড়ন্তের তৃণমূল এবং বাম একে অপরকে দোষারোপ করতে শুরু করেছে, তাতে তাদের দোষারোপের মাঝখানে দিনকে দিন উত্থান ঘটতে শুরু করবে গেরুয়া শিবিরের। তাই নিজেদের মত করে রাজনৈতিকভাবে তারা যদি বিজেপিকে প্রতিহত করতে না পারে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বাম ও তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে সামনের সারিতে এগিয়ে আসবে সেই বিজেপি বলে মত বিশ্লেষকদের। আপনার মতামত জানান -