এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > উত্তরবঙ্গ > বিজেপির দাপটে নাভিঃশ্বাস উঠতেই কি সিপিএমের গালভরা প্রশংসা তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রীর গলায়?

বিজেপির দাপটে নাভিঃশ্বাস উঠতেই কি সিপিএমের গালভরা প্রশংসা তৃণমূলের হেভিওয়েট মন্ত্রীর গলায়?


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – কথায় আছে, শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু‌। কিন্তু যে শত্রুকে দমন করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার জন্ম হয়, সেই শত্রুকে কাছে টেনে নেওয়া কি সত্যিই ন্যায় সঙ্গত! বঙ্গ রাজনীতিতে এই প্রশ্নই এখন ক্রমাগত মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। যত দিন যাচ্ছে, ততই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। 2011 সালের আগে সিপিএমের অস্বস্তি বাড়িয়ে দেওয়ায় প্রধান টার্গেট ছিল রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সিপিএম বিরোধীতাই যে তাদের প্রধান রাজনৈতিক অস্ত্র, তা বুঝিয়ে দিয়েছিল ঘাসফুল শিবির।

কিন্তু এবার কি বিজেপির চাপে সেই সিপিএমকে হালকা হিসেবে নিতে শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস! যেখানে এককালে সিপিএম বিরোধিতা তাদের প্রধান অঙ্গ হলেও, এবার কি সেই সিপিএমকে কাছে টেনে নেওয়ার উদ্যোগ নিলেন হেভিওয়েট তৃণমূলী মন্ত্রী! কিছু কিছু রাজনৈতিক পদক্ষেপ অন্তত সেই জল্পনাকে ক্রমশ বাড়িয়ে দিতে শুরু করেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শিলিগুড়িতে দীর্ঘদিনের শক্ত ঘাঁটি সিপিএমের।

বর্তমানেও এই শিলিগুড়ি সিপিএমের থেকে নিজেদের দখলে রাখতে প্রায়শই অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বিবাদ তৈরি হতে দেখা যায় তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের। কিন্তু দিনকে দিন বিজেপির শক্তি বাড়তে শুরু করেছে। তাই এই পরিস্থিতিতে বামপন্থীদের কিছুটা হলেও প্রশংসা করে বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট পার্টি বলে আক্রমণ করতে দেখা গেল উত্তরবঙ্গ তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবকে।

স্বাভাবিকভাবেই যে গৌতম দেব উঠতে-বসতে এতদিন অশোক ভট্টাচার্য এবং তার দল মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করতেন, তার গলায় এখন বামপন্থীদের ছাড় দিয়ে বিজেপি ফ্যাসিস্ট পার্টি বলে অভিহিত করায় রাজনৈতিক মহলে ক্রমশ গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, শিলিগুড়িতে বুথস্তরে বামফ্রন্টের পতাকা উত্তোলন কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম দেব।

জানা গেছে, আগামী 17 জানুয়ারি পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুথে বুথে দলীয় ঝান্ডা লাগানোর কর্মসূচি নিয়েছে মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি। এদিন বামফ্রন্টের এই কর্মসূচির প্রশংসা করেছেন তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, “শুধু রাজ্য নয়। দেশের সামনে বড় বিপদ বিজেপি। কাজেই বামপন্থী নয়, বিজেপি এখন ভয়ঙ্কর নতুন ফ্যাসিস্ট পার্টি। এদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। কাজেই বামপন্থীরা লড়াইয়ে নামায় ভালো লাগছে। বুথে বুথে লাল ঝান্ডা লাগিয়ে ওরা নিজেদের ভোট পুনরুদ্ধার করতে পারলে তো ভালোই। তাই ওরা লড়াই করছে লড়াই করুক।”

তবে গত লোকসভা নির্বাচনে বামেদের ভোট বিজেপিতে যাওয়ার কারণে যে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে, এদিন সেই ব্যাপারেও মন্তব্য করেন গৌতম দেব। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্যকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “লোকসভা ভোটে ওরা এডজাস্ট করেছে। লোকসভা ভোট ছেড়ে দিলেও পৌরসভা ও বিধানসভা ভোটে টিকে যায়। একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ওদের ভোট বিজেপিতে গিয়েছে।”

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে গৌতম দেবের মত পুরোনো দিনের তৃণমূল সৈনিক তথা রাজ্যের মন্ত্রীর গলায় এককালে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করা সত্ত্বেও, এখন সেই সিপিএমকে ছাড় দিয়ে বিজেপিকে ফ্যাসিস্ট বলায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অনেকে বলছেন, ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না। এককালে সিপিএম বিরোধীতা তৃণমূলের প্রধান অস্ত্র ছিল। কিন্তু এখন কালের নিয়মে যখন বিজেপি তৃণমূলের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে, তখন রীতিমত 180 ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে সিপিএম কর্মসূচি করায় কার্যত স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের মন্ত্রীকে।

পর্যবেক্ষকদের দাবি, গত লোকসভা ভোটে সিপিএমের তথা বামফ্রন্টের অনেক ভোট বিজেপিতে যাওয়ার কারণেই তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরতে শুরু করেছিল। সেদিক থেকে বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের অনেক নেতা মন্ত্রীদের গলায় শোনা গেছে সিপিএমের নিজেদের ভোট নিজেদের দিকে রাখার কথা। বিধানসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে, তার আগে ক্রমাগত চাপ বাড়ছে তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর।

আর এই পরিস্থিতিতে শিলিগুড়িতে যে সিপিএম অতীতে কোনো কর্মসূচি করতে গেলে তাদেরকে একচুল জায়গা ছাড়ত না তৃণমূল কংগ্রেস, সেই সিপিএম কর্মসূচি করায় এখন তাদের পাশেই দাঁড়াতে দেখা গেল তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম দেবকে। যদিও বা গৌতম দেব এই ধরনের মন্তব্য করলেও, তাকে পাল্টা আক্রমণ করেছে সিপিএম এবং বিজেপি।

এদিন এই প্রসঙ্গে সিপিএমের অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “সমগ্র তৃণমূল পার্টিটাই বিজেপিতে রূপান্তরিত হয়ে আছে। তাছাড়া পশ্চিমবঙ্গকে বিজেপিকে হাতে ধরে নিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিজেপির মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। সুতরাং সাম্প্রদায়িকতা এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে বামপন্থীদের সম্পর্কে যত কম কথা বলবেন, ততই ভালো।”

অন্যদিকে এই ব্যাপারে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজু সাহা বলেন, “ওদের পায়ের তলার জমি আলগা হয়ে গিয়েছে। ভোটের ময়দানে হার বুঝতে পেরেই ওরা এমন আবোল-তাবোল বকছেন।” সব মিলিয়ে গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!