বুড়ো হাড়েই ভেল্কি! জনসেবা করতে যে কোন পদ লাগে না প্রতি পদে প্রমান করছেন ক্লান্তিহীন কান্তি নদীয়া-২৪ পরগনা রাজ্য May 28, 2020 কথাতেই আছে দুর্যোগে বা দুঃসময়ে যে সবথেকে বেশী পাশে এসে দাঁড়ায়, সেই হচ্ছে সময়ের বন্ধু। এবং সময়ের বন্ধু আজকাল বোধহয় আর কাউকেই সেইভাবে দেখতে পাওয়া যায়না। কিন্তু বাদাবনের মানুষের কাছে কিন্তু এখনো এরকম বন্ধু আছে, তিনি দুর্যোগের সময়ের বন্ধু। যখনই আয়লা, বুলবুল বা সদ্যসমাপ্ত আমফানের তাণ্ডব দেখা গেছে সুন্দরবনের মানুষের উপর, তখনই বুক দিয়ে আগলাতে এলাকায় পৌঁছে গেছেন বিগত বাম জমানায় প্রাক্তন মন্ত্রী বিধায়ক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। আমফানের তাণ্ডবে ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর ফের একবার ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই সুন্দরবনের। অবশ্য বছরের 365 দিনই বাস করতে হয় তাঁদের লড়াই করেই। কখনো মানুষখেকো পশু, কখনো নদীর ভাঙ্গন, কখনো বা ঘূর্ণিঝড়। কিন্তু প্রত্যেক বারের মতোই এবারের লড়াইতেও তাঁদের সাথে রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গাঙ্গুলি। সুন্দরবনের মানুষও তাঁকেই কাছের মানুষ এবং কাজের মানুষ বলে মনে করেন। মন্ত্রীত্ব বা বিধায়কের আসন কোনটিই নেই আজ, তবু কান্তি গাঙ্গুলি নিজের কর্তব্যে অবিচল। আমফানের তাণ্ডবের পর সব হারানো মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তাঁরই পরিকল্পনায় ভাঙা বাঁধ নতুন করে তৈরীর কাজে নেমেছে রায়দিঘির কুমোরপাড়া গ্রামের শতাধিক মানুষ এবং নদীর তীরে সেই একই ভাবে দাঁড়িয়ে কাজের তদারকিতে ব্যস্ত হাটু পর্যন্ত গোটানো ধুতিতে বৃদ্ধ কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। জানা গেছে যখন তিনি মন্ত্রী ছিলেন বা মথুরাপুরের বিধায়ক ছিলেন, সেই সময়তেও সুন্দরবনের মানুষদের কল্যাণে তিনি অনেক কাজ করেছেন। যখন বিধায়ক ছিলেন না তখনও তিনি গভীর সমুদ্রে ট্রলার ডুবিতে মৃত মৎস্যজীবীদের উদ্ধার করে আনতে পৌঁছে যান। সম্প্রতি একদা কান্তি গাঙ্গুলির বিধানসভা কেন্দ্র মথুরাপুরের রায়দিঘির কুমড়ো পাড়ায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর ভয়াবহতা লক্ষ্য করা গেছে। কিন্তু বরাবরের মতন কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় গ্রামের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় নেমে পড়েছেন। অন্যদিকে কান্তি গাঙ্গুলীর কথাতেই মনি নদীর বাঁধ মেরামতের কাজে নেমে পড়ল গ্রামের শতাধিক মানুষ। সূত্রের খবর, গত বুধবার আমফান ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ভেঙে গেছে মনি নদীর তিন কিলোমিটার বাঁধ। হুহু করে জোয়ারের জল গ্রামে ঢুকছে। নোনা জলে সমস্ত উর্বর জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই খবর পেয়ে সাথে সাথেই কান্তিবাবু এসে পৌঁছান কুমড়ো পাড়া গ্রামে। সূত্রের খবর, গ্রামবাসীরা প্রাক্তন বিধায়ক এর কাছে অভিযোগ জানায়, গ্রামের এই দুর্যোগেও সরকারি কোন আধিকারিকের দেখা পাওয়া যায়নি এখনও পর্যন্ত। যদিও কান্তিবাবু তাঁদের বক্তব্য শোনার পর নিদান দেন, ভেঙে পড়া নদীবাঁধ নিজেদেরই বাঁধতে হবে। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - এরপর তিনি সকলকে নিয়ে নদীর ধারে আসেন এবং তাঁর নির্দেশমতো জমির নোনা জল বের করে মাটির বাঁধ দিয়ে নদীকে পুনরায় আটকানোর কাজ শুরু করে গ্রামবাসীরাই। অন্যদিকে গ্রামবাসীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ঝড়ে ঘরবাড়ি ভেঙে পড়ার পর সরকারি কোন নেতা, মন্ত্রী বা বিধায়কের দেখা পাওয়া যায়নি। কিন্তু কান্তি গাঙ্গুলি বরাবরের মতন এলাকায় পৌঁছে গিয়ে তাঁদের ভরসা জুগিয়ে চলেছেন। এমনকি ত্রাণের ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যদিকে কান্তিবাবু নিজে জানিয়েছেন এ প্রসঙ্গে, ‘জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওই মানুষগুলোর। ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গিয়েছে। এবার যাতে মানুষ জমির উর্বরতা ফিরিয়ে আবার আমন চাষ করতে পারে সেজন্যই এসেছি। গ্রামের মানুষকে একত্রিত করে জমিতে জমা নোনা জল বের করে, বাঁধ দিয়ে জোয়ারের জল আটকানোর চেষ্টা চলছে। ওরা নিজেরাই করছে সবকিছু। আমি শুধু ওদের পাশে আছি। বর্ষার আগেই জমির উর্বরতা ফিরিয়ে ওরা ফের আমন চাষ করতে পারবে বলেই আমার বিশ্বাস। ওদের মুখে জয়ের সেই হাসিটাই দেখতে চাই আমি।’ অন্যদিকে জানা গেছে, প্রাক্তন মন্ত্রী বাঁধ মেরামতকারীদের জন্য 100 দিনের কাজের পারিশ্রমিকের দাবি তুলেছেন। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের মতে, বাস্তবে আমফান মহাদুর্যোগের পর ধ্বংসস্তুপের ওপর দাঁড়িয়ে আছে গরিব মানুষগুলি। করোনার কারণে রুটি-রুজি বন্ধ হয়েছে আগেই। এরপর নতুন করে দুর্যোগের ধ্বংসলীলার পর মাথার উপর থেকে ছাদটাও চলে গেছে অনেকের। তবে বাদাবনের মানুষদের পাশে যেভাবে কান্তি গাঙ্গুলী পৌঁছে গেছেন তাতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ অবশ্য বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, কান্তি গাঙ্গুলি এহেন কাজ করার পরেও কিভাবে তিনি বিশাল অঙ্কের ভোটে হেরে যান! তবে ভোটের অঙ্কের হিসেব যে কখনো দমিয়ে রাখতে পারেনি কান্তি গাঙ্গুলীর মত মানুষকে, তা আরও একবার প্রমাণিত হল। তাই বলাই যায়, আয়লা হোক বা বুলবুল, ফণী হোক বা আমফানের মত প্রবল ধ্বংসলীলা চালানো ঘূর্ণিঝড়, যেকোন সময়ে বাদাবনের মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রস্তুত কান্তি গাঙ্গুলী। তাই বাদাবনের মানুষের মনে রাজনৈতিক অংকে নয়, প্রাণের টানে বিরাজ করেন বাম জমানার কান্তি গাঙ্গুলী। আপনার মতামত জানান -