এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > কংগ্রেস > কংগ্রেস নাকি তরমুজ? আবার তাদেরই শরনাপন্ন মমতা! একেই বলে দেউলিয়ার রাজনীতি!

কংগ্রেস নাকি তরমুজ? আবার তাদেরই শরনাপন্ন মমতা! একেই বলে দেউলিয়ার রাজনীতি!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট- বাম সরকারের আমলে বিরোধী নেত্রী হিসেবে যখন লড়াই করছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রথমে তিনি ছিলেন কংগ্রেসে। তবে পরবর্তীতে সেই কংগ্রেসের ভেতর থেকেই রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আওয়াজ তুলেছিলেন, এই কংগ্রেস তরমুজ হয়ে গিয়ছে। তাদের অনেক নেতা বামপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাই তাদের সঙ্গে থেকে বামপন্থীদের সরানো যাবে না। ফলে শেষ পর্যন্ত সেই কংগ্রেসের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করেছেন, তার নতুন দল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এত কিছু করে কি লাভ হলো? তার দল রাজ্যে ক্ষমতায় কংগ্রেসকে তিনি পশ্চিমবঙ্গে কার্যত নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও সেই কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে বিজেপিকে সরানোর স্বপ্ন দেখছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই এখন তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বাংলার কংগ্রেস নেতারা। অধীরবাবুরা বলছেন, আজকে বাঁচার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের শরণাপন্ন হচ্ছেন। অথচ এই কংগ্রেসকেই একদিন তিনি শেষ করে দিতে চেয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, এদিন ডায়মন্ডহারবারে একটি সভায় যোগ দিতে এসে তৃণমূলকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, “আজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁচার জন্য কংগ্রেসের শরণাপন্ন হচ্ছেন। সর্বভারতীয় দল থেকে আঞ্চলিক দল হয়ে গিয়েছেন। আগামী দিনে এই তৃণমূলকে আমরা জেলার দলে পরিণত করে দেব।” স্বাভাবিক ভাবেই অধীর চৌধুরীর এই বক্তব্যকে কিন্তু উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তারা বলছেন, অধীর চৌধুরী একদম সঠিক কথাই বলেছেন। কারণ এই কংগ্রেসকে ব্যবহার করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হয়েছে। পরবর্তীতে ক্ষমতা পেয়ে তিনি সেই কংগ্রেসকে লাথি মারতে দুবার ভাবেননি। বাংলায় সেই কংগ্রেসকে শেষ করে দিয়ে ক্ষমতার নেশায় ডুবে গিয়েছেন তিনি। আর আজকে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপির সঙ্গে পেরে উঠতে না পেরে বাংলায় শূন্য হয়ে যাওয়ার ভয়ে সেই কংগ্রেসের সঙ্গেই বিজেপি বিরোধী জোটে অংশগ্রহণ করে দেউলিয়ার রাজনীতি করছেন তৃণমূল নেত্রী বলেই দাবি একাংশের।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে গোটা দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে ইন্ডিয়া জোট। যে জোটে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাংলায় তিনি কংগ্রেসকে এত গালিগালাজ করেন, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ করেন, তাদের একটি পঞ্চায়েতেও থাবা বসাতে চান। আবার সেই কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা এবং নেত্রীকে উত্তরীয় পড়াতে ব্যস্ত। যা দেখে রীতিমত বাংলার কংগ্রেস নেতারা অসন্তুষ্ট‌। তারা অনেকেই সর্বভারতীয় স্তরের নেতৃত্বদের কাছে বলছেন যে, কোনোমতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমঝোতা করা যাবে না বাংলায়। কারণ এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অনেক কর্মীর হাতে তাদের অনেক কর্মী খুন হয়েছেন। তাদের অনেক কর্মী ঘর ছাড়া রয়েছেন। তাই তৃণমূলের সঙ্গে যদি বিজেপিকে আটকাতে জোট করা হয়, তাহলে বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা যারা প্রতিমুহূর্তে লড়াই করছেন, আন্দোলন করছেন, তাদের মন বলে যথেষ্ট আঘাত পাবে। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কংগ্রেসের শরণাপন্ন হওয়া যে আদতে কংগ্রেসের জয়, তা বোঝানোর চেষ্টা করলেন অধীর চৌধুরী।

পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী জোট ইন্ডিয়া আদৌ কতটা সফলতার রূপ দেখবে, সেটাই একটা লাখ টাকার প্রশ্ন। কে প্রধানমন্ত্রী হবে, তা নিয়ে হয়তো নির্বাচনের আগেই একে অপরের মধ্যে দড়ি টানাটানি তৈরি হবে। তবে বাংলায় কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে একটা ভুল বার্তা ইতিমধ্যেই চলে গিয়েছে। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে ক্ষমতা পেতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার দলের সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বদের জোট বাংলার নীচুতলার কংগ্রেস কর্মীরা মেনে নিতে পারছেন। আর সেটা অধীর চৌধুরীরাও খুব ভালো মতো উপলব্ধি করেছেন। যার কারণে এখন কর্মীদের কাছে ভালো হতে কংগ্রেসের শরণাপন্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হচ্ছেন বলে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করছেন অধীর চৌধুরী। কারণ তা না হলে আগামী দিনে হয়তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার তাদের সঙ্গে শত্রুতা করতে পারেন। আর তখন বাংলার কংগ্রেস কর্মীরাও দলের সঙ্গে থাকবে না। ফলে দুকূল যাওয়ার ভয়ে এখন থেকেই নিজেদের জমি বাঁচাতে মরিয়ার চেষ্টা করছেন অধীরবাবুরা। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!