এখন পড়ছেন
হোম > রাজনীতি > তৃণমূল > স্পেন থেকে শূন্য হাতে রাজ্যে ফিরছেন মমতা! শেষমেষ সৌরভকে দিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা!

স্পেন থেকে শূন্য হাতে রাজ্যে ফিরছেন মমতা! শেষমেষ সৌরভকে দিয়ে বোকা বানানোর চেষ্টা!


 

প্রিয়বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট-12 দিনের জন্য বিদেশ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝেমধ্যেই খবর হচ্ছে যে, বিপুল পরিমাণে শিল্প নাকি বাংলায় আসছে। শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠক করে অনেক বড় বড় কথা বলতে দেখা গিয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকেও। আর বিদেশের মাটি থেকে রাজ্যে শিল্প আনার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর হলেও, এক অন্য চিত্র সেখানে দেখা গেল। যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর সঙ্গী বাংলার মহারাজ বলে পরিচিত সৌরভ গাঙ্গুলীকে বাংলায় বিনিয়োগ করার কথা বলতে শোনা গেল। কিন্তু সৌরভ গাঙ্গুলি তো বাংলার ছেলে। তিনি তো বাংলায় থেকেও এই কথা বলতে পারতেন। তা না করে কেন বিদেশের মাটি থেকে তিনি এই কথা বললেন? ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।

প্রসঙ্গত, বিদেশের শিল্পপতিদের সামনে বাংলায় বিনিয়োগ করার কথা বলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন যে, বাংলায় তিনি শালবনিতে ইস্পাত কারখানা করবেন। নিঃসন্দেহে এটা বাঙালি হিসেবে সকলের কাছে খুশির খবর। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তো গিয়েছেন বিদেশের শিল্পপতিদের তরফে বড় কোনো শিল্প আনবার জন্য। সেখানে বাংলার সন্তান হিসেবে সৌরভ গাঙ্গুলীর এই ঘোষণার কারণ কি? ইতিমধ্যেই সেই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “সৌরভ গাঙ্গুলি তো বাংলার ছেলে। তাকে কেন বিদেশের মাটি থেকে এই ধরনের ঘোষণা করানো হবে? স্পেনের শিল্পপতিরা, বিদেশের শিল্পপতিরা ঘোষণা করবেন। কেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ঘোষণা করবে?” আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানেও চালাকি করার রাজনীতি খুঁজে নিলেন? বাংলার মানুষকে দেখানোর চেষ্টা করলেন যে, বাংলায় বিনিয়োগ হচ্ছে। কিন্তু তিনি যে চালাকি করার রাজনীতি করছেন, সেটা তো বাংলার মানুষ ধরে ফেলেছে। যদি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দিয়ে বিদেশের মাটিতে প্ল্যান নিয়ে এই ধরনের কাজ করানোর চেষ্টা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাহলে তিনি ভুল করছেন। কটাক্ষ করে তেমনটাই বলছে বিরোধীরা।

অনেকে এটাও বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশের মাটিতে গিয়ে বুঝে গিয়েছেন যে, স্পেন থেকে বিপুল শিল্প নিয়ে রাজ্যে নিয়ে যাওয়া তার পক্ষে কার্যত অসম্ভব। আবার রাজ্যের মানুষকে ফিরে জবাবদিহি করতে হবে। কারণ রাজ্যে এখন যে বিরোধী দল রয়েছে এবং তাদের যে নেতা রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছেড়ে কথা বলবেন না। সামনে আবার লোকসভা ভোট। ফলে সব দিক থেকেই রীতিমতো চাপে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাই কোনো রকমে একটা বিনিয়োগের খবর, লগ্নির খবর রাজ্যবাসীর কানে পৌঁছে দিতে হবে। তাই অনুপ্রাণিত মিডিয়াদের দিয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী বাংলায় বিনিয়োগ করছেন, এই খবর প্রচার করানোর চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেই আক্রমণ বিরোধী শিবিরের।

পর্যবেক্ষকদের মতে, শিল্পপতিদের সামনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, বাংলায় শিল্প করবার জন্য। এমনকি তিনি এটাও বলেছেন যে, জমির কোনো সমস্যা হবে না। অর্থাৎ বাংলার জমিনীতি নিয়ে যে শিল্পপতিরা খুব একটা খুশি নয়, তা মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আর সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝে গিয়েছেন যে, বিদেশের সফর শুধুমাত্র ছুটি কাটানো ছাড়া আর কোনো কাজে দিল না। তেমন কোনো বড় মাপের শিল্প তিনি বাংলায় নিয়ে যেতে পারবেন না। তাই বাংলার ছেলে, বাংলার মহারাজা যিনি বাংলার জন্য কাজ করবেন, এটাই স্বাভাবিক, তাকে বাংলার মাটি থেকে ঘোষণা না করিয়ে বিদেশের মাটি থেকে শিল্পে বিনিয়োগ করার ঘোষণা করাতে দেখা গেল। সুকান্তবাবুর বক্তব্যের পর এই সমস্ত বিষয়ে ক্রমশ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে শুরু করেছে। তাহলে কি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে থেকেই এই ঘোষণা করেছেন? নাকি ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে কোনরকমে ম্যানেজ করে এই ঘোষণা করিয়েছেন? সেটাও লাখ টাকার প্রশ্ন। তবে বাংলার মহারাজা এই ঘোষণা করলেও, স্পেন থেকে শূন্য হাতে ফিরে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্যের মানুষের কাছে জবাব দিতেই হবে। দিনের শেষে তেমনটাই দাবি সমালোচক মহলের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!