‘বৈদিক ভিলেজ’ কাণ্ডে এবার শাসকদলের সঙ্গে বিড়ম্বনায় ভাঙড়ের বিডিও বিশেষ খবর রাজ্য January 15, 2018 বৈদিক ভিলেজ কাণ্ড রাজ্য-রাজনীতিতে এক জ্বলন্ত অধ্যায়। একটি ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে বৈদিক ভিলেজে যে রাজনৈতিক ঝড় উঠেছিল তা এককথায় নজিরবিহীন। আর এবার সেই ‘বৈদিক ভিলেজ কাণ্ডকে’ কেন্দ্র নতুন করে বিড়ম্বনায় রাজ্যের শাসকদল তথা ভাঙড়ের বিডিও ধ্রুবচন্দ্র বিশ্বাস। সোশ্যাল মিডিয়ায় গত কয়েকদিন ধরেই একটি ছবি ভাইরাল হয়ে গেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও ধ্রুবচন্দ্র বিশ্বাস ২০০৯ সালের অগস্টে বৈদিক ভিলেজ-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত আজিজুল ইসলাম ওরফে খুদের (যিনি আবার ভাঙড়ের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের ভাই) পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছেন। গত ৭ জানুয়ারি ভাঙড়ে প্রস্তাবিত পাওয়ার গ্রিড অঞ্চলে সভা করেছিল তৃণমূল, সেখানেই ছবিটি তোলা হয় বলে অভিযোগ। আপাত নিরীহ এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পরে গেছে রাজ্য-রাজনীতিতে। এই ছবি সামনে আসতেই ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের মঞ্চ ‘জমি জীবিকা পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা কমিটি’র আহ্বায়ক মির্জা হাসান প্রশ্ন তুলেছেন, একজন সরকারি আধিকারিক হয়ে ধ্রুবচন্দ্র কেন শাসকদলের সভায় গিয়েছিলেন? কেন একজন ম্যাজিস্ট্রে়ট খুনের ঘটনায় একজন অভিযুক্তের সঙ্গে ছবি তুলবেন? প্রশাসন যে নিরপেক্ষ নয়, তা ফের একবার প্রমাণিত হল। একজন সমাজবিরোধীকে পাশে নিয়ে ছবি তুলছেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের আধিকারিক, যিনি আবার স্থানীয় প্রশাসনের (ব্লক) সর্বময় কর্তাও বটে। অন্যদিকে বিডিও সাহেবের ব্যাখ্যা, কোনও সভায় গোলমালের আশঙ্কা থাকলে একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠানো হয়। কারণ, পুলিশকে টিয়ারগ্যাস-গুলি চালানোর অনুমতি দেন সেই ম্যাজিস্ট্রেটই। ওই দিন আমি ছাড়া আরও একজন ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে গিয়েছিলেন, সরকারি কর্তব্য পালনে গিয়েছিলাম। ওঁর নাম যে আজিজুল তা জানতাম না। আমাদের মাঠে ময়দানে নেমে কাজ করতে হয়, এলাকায় গেলে অনেকেই ছবি তোলেন। আর এই প্রসঙ্গে আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, আমাদের সভায় বিডিও সাহেব কেন এসেছিলেন তা বলতে পারব না, হয়তো প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসেছিলেন। বিভিন্ন কাজে আমরা (বিডিওর কাছে) যাই, কথাবার্তা হয়, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। বিডিও সাহেবের সঙ্গে কথা বলার সময় কেউ ছবি তুলেছিলেন, আমি ছবি তুলতে অভ্যস্ত নই। আমার নামে বৈদিক ভিলেজের একটা কেস রয়েছে, আর কোনও কেস নেই। কিন্তু উত্তপ্ত ভাঙড়ে রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক অফিসারের সাথে বৈদিক ভিলেজ কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্তের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশাসন ও শাসকদলের ভূমিকা নিয়ে একরাশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন বিরোধীরা, যা কার্যতই অস্বস্তিতে ফেলে দেবে রাজ্যের শাসকদলকে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। আপনার মতামত জানান -