করোনা দিনে দিনে ভয়াবহ ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে শিশুদের জন্য, সুস্থ হবার পরেও বিরল সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা অন্যান্য জাতীয় শরীর-স্বাস্থ্য June 28, 2021 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – শিশুদের কাছে করোনা অত্যন্ত ভয়াবহ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে দিনে দিনে। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরেও শিশুদের শরীরে দেখা যাচ্ছে নানা সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিরল রোগ। এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে দেশে। যা থেকে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। সম্প্রতি, মহারাষ্ট্রে বেশকিছু শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যাদের প্রবল শ্বাসকষ্ট ছিল ও রক্তচাপ কমে গিয়েছিল। এই শিশুদের পিতা-মাতা করোনায় আক্রান্ত হলেও তাদের শরীরের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এই শিশুদের। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই শিশুদের শরীরে বিরল কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুজন শিশুকে সুস্থ করা সম্ভব হলেও, বাকি শিশুদের নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসকদের। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনা থেকে শিশু-কিশোররা সুস্থ হয়ে ওঠার পর, চার থেকে ছসপ্তাহের মধ্যে তাদের শরীরে বিরল কিছু সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে কস্তুরবা হাসপাতালের চিকিৎসক এস পি কালান্ত্রি জানিয়েছেন, শিশুদের শরীরের যে সমস্ত লক্ষণ দেখা গেছে, তা নিয়ে তাঁরা অত্যন্ত উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা বুঝতে পারছে না, এসব সমস্যা কতটা গভীরে চলে গেছে? । কতদিন এই রোগের বোঝা বহন করতে হবে? তার কোনো স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি জানিয়েছেন গোটা দেশজুড়ে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ বহু শিশুর মধ্যে এই সমস্ত উপসর্গ দেখতে পেয়েছেন। কতজন শিশু এই সমস্যায় আক্রান্ত? তা এখনও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪ হাজার শিশুর মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাদের মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ৩৬ জন শিশুর। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - শিশুদের মধ্যে তৈরি হওয়া এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় মাল্টি সিস্টেম ইনফ্লেমেটরি সিনড্রোম সংক্ষেপে এমআইএসসি। মহারাষ্ট্রে এই সমস্যাকে নোটিফাই এবেল ডিজিজ বলেও নির্দেশ করা হচ্ছে। চিকিৎসকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের সমস্যা শিশুদের ক্ষেত্রে তৈরি হলে, সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অনেক সময় করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যাপক আকারে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে গিয়ে এমন ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। বেশ কিছু অঙ্গে তীব্র ব্যথা ও যন্ত্রণার সৃষ্টি হচ্ছে এমআইএসসি থেকে। যা থেকে মৃত্যুরও আশঙ্কা আছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এই সমস্যায় আক্রান্ত হলে আসতে পারে তীব্র জ্বর, যা কিছু দিন স্থায়ী থাকতে পারে, শরীরের নানা স্থানে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, চোখ লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে, পেটে ব্যথা হতে পারে, রক্তচাপ কমে যেতে পারে, সারা শরীরের ব্যথা হতে পারে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এর আশঙ্কা বেশি রয়েছে। দিল্লির শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ঝুমা শংকর জানিয়েছেন যে, এই ধরনের রোগ থেকে একাধিক অঙ্গ বিকল হওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে। সম্প্রতি, দিল্লির গঙ্গারাম হাসপাতালে ৭৫ জন শিশু এই ধরনের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে। যাদের বয়স ১৫ বছরের কম। এই হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ধীরেন গুপ্ত জানিয়েছেন, দিল্লি ও দিল্লির নিকটবর্তী অঞ্চলে অন্তত ৫০০ জন শিশু এই সমস্যায় আক্রান্ত। আবার পুনের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আরতী কিনিকার জানিয়েছেন, গত এপ্রিল মাসে এই ধরনের সমস্যা নিয়ে তাঁর কাছে ৩০ জন শিশুকে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে ১২ বছর বয়স্ক ১৩ জন শিশুকে এখনো হাসপাতলে ভর্তি রাখা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছে একাধিক বিরল সমস্যা। অনেকে ভুগছে মায়োকার্ডিটিসে। যার ফলে হৃদযন্ত্রের সমস্যা বাড়ছে। তিনি জানিয়েছেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার পর থেকে এই রোগের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। সোলাপুরের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দয়ানন্দ নাকাতে জানিয়েছেন, এই সমস্যা নিয়ে ২০ জন শিশুকে তাঁর কাছে আনা হয়েছিল। যাঁদের বয়স ছিল দশ থেকে পনেরো বছরের মধ্যে। প্রসঙ্গত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শিশুদের ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, আর এবার আসতে চলেছে তৃতীয় ঢেউ। এই অবস্থায় শিশুদের কিভাবে সুরক্ষিত রাখা যায়? তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের। আপনার মতামত জানান -