এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > করোনার কঠিন সময় দেখা নেই দুই হেভিওয়েট বিধায়কের! সাধারণের অসুবিধার কথা জানিয়ে ঝড় বিরোধীদের!

করোনার কঠিন সময় দেখা নেই দুই হেভিওয়েট বিধায়কের! সাধারণের অসুবিধার কথা জানিয়ে ঝড় বিরোধীদের!


করোনা ভাইরাসকে আটকাতে প্রশাসনিক স্তরে সমস্ত রকম তৎপরতা চলছে। তবে জনপ্রতিনিধিদের এই ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। মানুষের কোনো অসুবিধায় যাতে সেই জনপ্রতিনিধিরা পাশে দাঁড়ান, তার জন্য বারবার বিভিন্ন দলের জনপ্রতিনিধিদের সেই দলের পক্ষ থেকে আবেদন করা হচ্ছে। এলাকায় নজরদারি রাখা সহ মহামারী পরিস্থিতিতে মানুষকে সাহায্য করার ব্যাপারে শাসক থেকে বিরোধী বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের ময়দানে নামতে দেখা যাচ্ছে।

তবে এই পরিস্থিতিতে আশ্চর্যজনকভাবে পাত্তা নেই জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা এবং কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর। যা নিয়ে নানা মহলে শুরু হয়েছে জোর চর্চা। মানুষের দুর্দিনে যেখানে সকল দলের জনপ্রতিনিধিরা মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, সেখানে কংগ্রেস এবং তৃণমূলের এই দুই বিধায়ক কেন সাধারণের পাশে নেই, তা নিয়ে বিরোধীদের তরফে তোলা হয়েছে প্রশ্ন।

জানা গেছে, হঠাৎ করেই লকডাউনের ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা কলকাতা থেকে আর বাড়ি ফিরতে পারেননি। যার ফলে এখন দলের নেতাকর্মীদের সেই কলকাতা থেকেই ফোনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে দেখা যাচ্ছে তাকে। তবে কংগ্রেস বিধায়কের এভাবে দুর্দিনের সময় এলাকায় না থাকা নিয়ে এবার সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

এদিন এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের সভাপতি কিষান কল্যাণী বলেন, “এটা মানসিকতার বিষয় মানুষ ওনাকে ভোট দিয়েছে। তাই মানুষই এর বিচার করবে। সঠিক মানুষকে ভোট দিয়েছিল কিনা। মানুষ যখন সমস্যায় পড়ে, বিপদে পড়ে, তখন তারা যায় যাকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসিয়েছে, তাকে পাশে পেতে চায়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। ওনার প্রকৃত কাজ করার মানসিকতা থাকলে সরকারি নিয়ম মেনে অনুমতি নিয়ে জেলায় পারতেন। কত মানুষই তো কলকাতা থেকে জেলায় ফিরছেন!” যদিও বা এই ব্যাপারে অন্য কথা বলছেন কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা।

কলকাতা থেকে ফোনের মাধ্যমে তৃণমূলের কটাক্ষের জবাব দিয়েছেন তিনি। এদিন তিনি বলেন, “এই কঠিন সময়ে আমি জেলায় নেই, তাই চর্চা হচ্ছে। কিন্তু আমি যাব কি করে! প্রথমে জনতা কার্ফু হল। তারপর হঠাৎ করে লকডাউন। তার আগে বিধানসভা চলছিল। এমন কিছু হবে আঁচ করতেই পারিনি। বিজেপির জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার সংসদ সদস্যরা সেখানে থেকেও কিছু করতে পারছে না। তৃণমূল বের হতে দিচ্ছে না। সেখানে আমি ওখানে থাকলেই বা কি করতাম! এখান থেকে টেলিফোনে কর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছি। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ওখানে ত্রানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তার অর্থ পাঠিয়েছি। 600 কিমি দূরে থেকে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে যা করার করছি।”

এদিকে সুখবিলাসবাবু এই কথা বললেও, কোচবিহার জেলা তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর মানুষের পাশে না থাকা নিয়ে বিরোধীদের তরফে তোলা হয়েছে প্রশ্ন। কেন জেলায় থেকেও তিনি মানুষের পাশে থাকছেন না, তা নিয়ে সরব হয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতী রাভা রায় বলেন, “আমাদের দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ককে কোথাও দেখতে পাইনি। এই সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল তৃণমূলের। ওদের দলে অন্তর্দ্বন্দ্ব হয়ত চলছে। সেই কারণে উনি নিজেকে অন্তরালে রেখেছেন। তবে আমরা মনে করি এই বিপদের দিনে বাকি এমএলএ, এমপিদের মত ওনারও রাস্তায় বেরোনো উচিত।”

যদিও বা এই ব্যাপারে অন্য যুক্তি দিয়েছেন কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। তিনি বলেন, “যখন করোনা পরিস্থিতি আজকের জায়গায় পৌঁছয়নি, তখন কেউ রাস্তায় নামেনি, যখন প্রত্যেকটা এলাকায় আমি ত্রাণ বিলি করিয়েছি। রাস্তা দিয়ে লোক জমা করিনি। কিন্তু কাজ করে গিয়েছি। প্রশাসনও নাগরিকদের সচেতন করার কাজ করছে। আমি মনে করি কর্মীদের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগ রাখাটা জরুরি। নিন্দুকেরা অনেক কথাই বলেন। তবে আমি আমার কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল।”

তবে জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা হোক বা কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী, তারা নিজেদের এই মহামারীর সময় ময়দানে না নামা নিয়ে যে যুক্তিই দিন না কেন, বিরোধী নেতাদের যেভাবে চেপে ধরা হচ্ছে, তাতে তারা কিছুটা হলেও কোণঠাসা বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

কেননা সাধারন মানুষ যাদের নির্বাচনে জয়যুক্ত করিয়েছেন, বিপদের দিনে মানুষ তাদেরকে পাশে চান। সেদিক থেকে তারা ফোনের মাধ্যমে বা কর্মী-সমর্থকদের দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও, তারা যদি সশরীরে ময়দানে নামেন, তাহলে তাদের ব্যক্তি ভাবমূর্তি যেমন উজ্জ্বল হবে, ঠিক তেমনই দলগতভাবে তাদের দল অনেকটাই লাভবান হবেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তবে এই দুই বিধায়কের মধ্যে কাউকেই সেভাবে সক্রিয়তা অবলম্বন করতে দেখা না যাওয়ায়, এখন বিরোধীরা অনেকটাই লাভবান হবে বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!