এখন পড়ছেন
হোম > আন্তর্জাতিক > করোনা ক্রমশ প্রভাব বিস্তার করছে অন্তঃসত্ত্বাদের ওপর, তৃতীয় ঢেউ হবে মারাত্মক, উদ্বেগে চিকিৎসকরা

করোনা ক্রমশ প্রভাব বিস্তার করছে অন্তঃসত্ত্বাদের ওপর, তৃতীয় ঢেউ হবে মারাত্মক, উদ্বেগে চিকিৎসকরা


প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনার প্রথম এবং দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দেওয়ার পর শোনা যাচ্ছে এবার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা। যা প্রথম দুই দফার থেকে আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে প্রথম দফায় বয়স্ক মানুষরা এবং অন্যান্যরা ব্যাপকভাবে করোনার সংক্রমণের শিকার হলেও গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা বিশেষ কিছুই বলতে পারেননি। আর সে কারণেই দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ঢেউতে সবথেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছেন গর্ভবতী মহিলারা এবং যারা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাঁরা। আর এই তথ্য জানিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ এর পক্ষ থেকে।

আইসিএমআর এর সূত্রে জানা যাচ্ছে, কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে দেখা গিয়েছিল গর্ভবতী এবং সদ্য মা হয়েছেন যারা তাঁদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন 14.2 শতাংশ। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর দেখা গেছে এই সংখ্যাটা প্রায় ডবল অর্থাৎ জানা যাচ্ছে দ্বিতীয় ঢেউ এর ফলে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেড়ে হয়েছে 28.7 শতাংশ। অর্থাৎ প্রথমের তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউ গর্ভবতী মহিলাদের এবং সদ্য মা হয়েছেন এরকম মহিলারা আক্রান্ত হয়েছেন বেশী। একইভাবে আইসিএমআর এর সমীক্ষা থেকে জানা যাচ্ছে, করোনার প্রথম ঢেউয়ের ফলে গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে সংক্রমণের কারণে মৃত্যুর হার ছিল কম, কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেই হার বেড়ে গিয়ে হয়েছে 5.7 শতাংশ।

প্রশ্ন উঠেছে, গর্ভবতী মায়েদের শরীরে করোনার কি কি উপসর্গ দেখা গিয়েছে? সে ক্ষেত্রে জানা যাচ্ছে সবক্ষেত্রে করোনা সংক্রমণ জটিল অবস্থায় পৌঁছায়নি। শুধুমাত্র হালকা জ্বর, মাথা ব্যথা, গা-হাত-পা ব্যথার মতো লক্ষণ দেখা গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার ভাইরাল ফ্লু এর উপসর্গ সামনে এসেছে। তবে উপসর্গহীন করোনা সংক্রামিত যারা, তাঁরা সন্তান প্রসবের আগেই জানতে পেরে গিয়েছিলেন যে তাঁরা কোন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। সেক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পরবর্তীতে তাঁদের সন্তান করোনা আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে জ্বর এবং নিউমোনিয়ার মতন উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে অন্তঃসত্ত্বাদের। অনেকেই আবার শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

তবে এখনো পর্যন্ত বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি করোনা অন্তঃসত্ত্বাদের শরীরে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। তবে আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞান পত্রিকার সূত্রে জানা গিয়েছে, যদি একজন গর্ভবতী মহিলা করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে তাঁর শরীরে প্লাসেন্টার মধ্যে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। সেক্ষেত্রে গর্ভস্থ শিশুর মধ্যেও সংক্রমণ অতিবাহিত হবে কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যায়নি। তবে একেবারেই আশঙ্কা নেই সেকথাও কিন্তু বলতে পারছেন না চিকিৎসকরা।

প্রশ্ন উঠেছে, গর্ভবতী মহিলাদের টিকাকরণ না হওয়ার কারণেই কি এই বিপত্তি? সেই নিয়ে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ যামিনী সারওয়াল জানিয়েছেন, বিশ্বের অনেক দেশই কিন্তু ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়েছে গর্ভবতীদের শরীরে। কিন্তু আমাদের দেশে গাইডলাইনে এখনো পর্যন্ত অন্তঃসত্ত্বাদের করোনার ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলা হয়নি। তাছাড়া গর্ভবতী মায়েদের শরীরে ভ্যাকসিনের প্রভাব কতটা কার্যকর হবে তাই নিয়ে এখনো পর্যন্ত গবেষণা চলছে। তবে ল্যানসেটের একটি গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, গর্ভবতী মহিলাদের যদি কোভিড ধরা পড়ে, তাহলে সেক্ষেত্রে কোন চিকিৎসার গাইডলাইন দেওয়া হয়নি।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, অন্তঃসত্ত্বাদের টিকা না দেওয়ার কারণে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে তাঁদের মধ্যে। এমনকি অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য আলাদা করে কোনো ওষুধও নেই। সাধারণের জন্য যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে করোনায় সেই ওষুধই অন্তঃসত্ত্বাদের দেওয়া হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষে স্টেরয়েড দেওয়া হচ্ছে যা মা এবং সন্তানের ওপর বিশেষ প্রভাব ফেলছে। সেক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য গাইডলাইনের অতি অবশ্যই প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা এবং চিকিৎসকরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে অন্তঃসত্ত্বাদের ঝুঁকি বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন করে কোন গাইডলাইন দেওয়া হয় কিনা সে দিকেই এখন নজর সবার।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!