এখন পড়ছেন
হোম > জাতীয় > দলের নিচুতলার কর্মীদের নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন স্বয়ং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক

দলের নিচুতলার কর্মীদের নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনলেন স্বয়ং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক

বাম শিবিরের নীচু তলার কর্মীদের মধ্যে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস অথবা গেরুয়া শিবিরে যোগদানের এক সুপ্ত বাসনা দেখা দিয়েছে। যার জেরে বেশ আশঙ্কাগ্রস্ত সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। শুক্রবার দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকের শেষ পর্যায়ে একপ্রকার গ্লানির সুরেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি বললেন, ” তৃণমূলের বল্গাহীন সন্ত্রাস নিঃসন্দেহে আমাদের সংগঠনকে দুর্বল করেছে নানা জায়গায়। কিন্তু সন্ত্রাসই আমাদের ভোট কমার একমাত্র কারণ নয়। বুথস্তরে সাংগঠনিক দুর্বলতার দরুণ সর্বত্র মানুষের কাছে পৌঁছনো সম্ভব না হওয়ায় বিগত দু’বছরে বিভিন্ন লোকসভা বা বিধানসভার উপনির্বাচনে আমাদের ফল ভুগতে হয়েছে। বারবার বলেও এই সমস্যা এখনও দূর করা যায়নি। তবে সেই সব ভোট এবং এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, দলের কিছু নেতা-কর্মী তৃণমূলের অত্যাচার-সন্ত্রাস থেকে পরিত্রাণ পেতে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

——————————————————————————————-

 এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

তাঁরা মনে করছেন, কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদির সরকার ক্ষমতায় আছে বলে বিজেপি একমাত্র তৃণমূলকে টাইট দিতে পারবে। আবার একইভাবে দলের অপর কিছু নেতা-কর্মী বিজেপির বাড়বাড়ন্ত দেখে তাদের উৎপাত ঠেকাতে তৃণমূলকেই প্রধান শক্তিধর বলে মনে করছেন। বামপন্থী সাধারণ সমর্থকদের মধ্যেও এই চিন্তার প্রভাব পড়ছে স্বাভাবিকভাবেই। আসলে মতাদর্শগত সমস্যা বা খামতির কারণেই নেতা-কর্মীদের মধ্যে এই ধরনের চিন্তার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এঁরা এই সারটুকু বুঝতে অক্ষম হয়েছেন যে বিজেপি ও তৃণমূল একই মুদ্রার দুই পিঠ মাত্র। মতাদর্শ নিয়ে চর্চা বা প্রশিক্ষণ সঠিকভাবে না করার ফলেই এই মারাত্মক সমস্যা তৈরি হয়েছে তাঁদের মধ্যে। ”

এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে দলের সাধারণ সমর্থকদের পাশাপাশি দলের নেতা-কর্মীদেরও বিজেপি-তৃণমূলে যাওয়ার প্রবণতা তৈরী হওয়ার প্রসঙ্গটি পরোক্ষে মেনে সূর্যবাবু বললেন , ” সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পরিমণ্ডলের দরুণ তৈরি তীব্র মেরুকরণের ফলে গোটা দেশেই দক্ষিণপন্থী শক্তির উত্থান লক্ষ করা যাচ্ছে। গত দু’বছরে এ রাজ্যেও তার প্রভাব পড়েছে। প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার কারণে গত সাত বছরে বাংলায় আরএসএস বিনা বাধায় তাদের শাখা ১১ গুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। এসব কারণেই বিজেপি বাড়তে পারছে। এ ব্যাপারে আমাদের বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণের উপর আমাদের জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে আত্মসমীক্ষা করে সংগঠনকে পুনগর্ঠিত করে দ্রুত সক্রিয় করে তুলতে হবে। তবে পঞ্চায়েত ভোটের পর্যালোচনায় সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হল, এত সন্ত্রাস সত্ত্বেও আটশোর বেশি জায়গায় প্রতিরোধও সংঘটিত হয়েছে। ”

দলের পিছনের সারিতে থাকা অবস্থান থেকে পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সিপিএম। সূর্যবাবু এদিন জানালেন দলের আগামী পরিকল্পনার কথা যে , ১৬ ই জুলাই প্রধানমন্ত্রীর রাজ্য সফরকালীন মেদিনীপুরে কৃষক কল্যাণ সমাবেশের দিনে দলের কৃষকসভা রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ দেখাবে। পরদিন অর্থাৎ ১৭ ই জুলাই কলকাতায় নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মদিন উপলক্ষে সভা হবে। তারপরে ২৪শে জুলাই পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় যথাক্রমে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির লাগামছাড়া সন্ত্রাসের ইস্যুতে দিল্লিতে ধরনা কর্মসূচি হবে। ১ লা আগস্ট থেকে কৃষকসভা গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও কেন্দ্রবিরোধী প্রচার শুরু করবে। ৯ ই আগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের দিনে রাজ্যের সব জেলা সদরে আইন অমান্য কর্মসূচি পালন করা হবে। ২৮ শে আগস্ট কলকাতায় হবে সিটুর মহাসমাবেশ। এবং ৫ ই সেপ্টেম্বর কৃষক ও শ্রমিক ফ্রন্টের যৌথ সংসদ অভিযান হবে রাজধানী দিল্লীতে। এই উপলক্ষ্যে রাজ্য থেকে কয়েক হাজার সমর্থকের দিল্লী যাওয়ার কথা রয়েছে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!