এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মিলছে না বকেয়া ডিএ, অথচ পুজো-কমিটিকে অনুদান! ক্ষোভ বাড়ছে শাসকদলের কর্মী-সংগঠনেই!

মিলছে না বকেয়া ডিএ, অথচ পুজো-কমিটিকে অনুদান! ক্ষোভ বাড়ছে শাসকদলের কর্মী-সংগঠনেই!


বকেয়া ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমছিল রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মনে। বারবার রাজ্য সরকারের কাছে অনুনয়-বিনয় করেও কোনো ফল না মেলায়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ একপ্রকার বাধ্য হয়েই কলকাতা হাইকোর্টের মুখাপেক্ষী হয়। আর সেখানে এক ঐতিহাসিক রায়ে কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের দাবি উড়িয়ে জানিয়ে দেয় ডিএ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের নৈতিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।

কিন্তু ডিএর হার কি হবে বা তা বছরে কতবার করে দেওয়া হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুন্যাল বা স্যাটকে নির্দেশ দিয়েছে। সেখানে দুটি পৃথক পৃথক মামলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে চলেছে দুই বিরোধী মনোভাবাপন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন – কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ীজ ও সরকারি কর্মচারী পরিষদ। কিন্তু দলের কথা ভেবে এতদিন চুপ করে থাকলেও রাজ্য সরকারের ডিএ নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা যে খোদ শাসকদলের সরকারি কর্মচারীদের মনেও তীব্র অসন্তোষ তৈরী করেছে – তা এবার স্পষ্ট হয়ে গেল।

শাসকদলের কর্মচারী সংগঠন এতদিন এই নিয়ে কার্যত চুপ ছিল – কিন্তু কিছুদিন আগেই, মুখ্যমন্ত্রী পুজো কমিটিগুলির জন্য অর্থ বরাদ্দ করায় – এবার তাঁদের ক্ষোভ একপ্রকার প্রকাশ্যেই চলে এল। সূত্রের খবর, সাধারণ সরকারি কর্মচারী থেকে শুরু করে নিজেদের সংগঠনের সদস্যদের এই নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ থেকে কার্যত পালিয়ে বাঁচতে হচ্ছে শাসকদলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের নেতাদের। বিরোধীরা – এতদিন যে কথা বলে আসতেন যে, রাজ্য সরকার ডিএ বাদে বাকি সবকিছুই করছে, পুজো কমিটিগুলিকে মুখ্যমন্ত্রীর অনুদান সেই আগুনে যেন নতুন করে ঘৃতাহুতি করল বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের। শুধু তাই নয়, আগামীদিনে নির্বাচনগুলোতে তো বটেই, এমনকি এই ঘটনা নাকি শাসকদলের সংগঠনেও বড়সড় ক্ষতি করতে বলে ধারণা কোন কোন মহলের।

আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন পুজোর আয়োজনে রাজ্যের বিভিন্ন পুজো কমিটিকে রাজ্য সরকারের তরফে মোট ২৮ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, এবারের পুজোয় কেউ কেউ বাইরে থেকে উস্কানি দিতে বড় টাকা ঢালতে পারে – সেই ফাঁদে যেন পুজো কমিটিগুলি না পড়ে! কিন্তু, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্যের শাসকদলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের একাংশের বক্তব্য, দলনেত্রীর এহেন মন্তব্য বা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের এক বিশেষ রাজনৈতিক দলকে আটকানোর পরিকল্পনায় দেখতে পাচ্ছেন সাধারণ কর্মচারীরা। তাঁরা প্রকাশ্যেই বলছেন – সেই দলকে আটকাতে পুজো কমিটিগুলিকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে অনুদান দেওয়া যায়, অথচ রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ‘দয়ার দানের’ মত অপমানজনক শব্দ শুনতে হয়!

ওই নেতাদের আরো বক্তব্য, সাধারণ কর্মচারীরা প্রকাশ্যেই বলছেন – যাঁদের আটকাতে এইভাবে অনুদান দেওয়া হচ্ছে, সেই বিশেষ দলের কর্মচারী সংগঠন কিন্তু সরকারি কর্মচারীদের স্বার্থরক্ষায় একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। কখনো রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সুরক্ষার প্রশ্নে হাইকোর্টে মামলা করছে, তো কখনো বকেয়া ডিএ আদায়ের জন্য স্যাটে ছুটছে, তো কখনো রাস্তায় নেমে তীব্রভাবে আন্দোলন করছে রাজ্য সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে – আদালত থেকে রাস্তা, সরকারি কর্মচারীদের দাবি আদায়ে কোনো পথই ছেড়ে দিচ্ছে না। শাসকদলে থেকে এইসব ‘বঞ্চনা’ নিয়ে মুখ খোলাও যাবে না – অথচ দিনের পর দিন বঞ্চিত হতে হবে! নৈতিকভাবে ওই দলের এইসব দাবি-আন্দোলন নিয়ে কি আপনারা কি বিরোধিতা করার জায়গায় আছেন? ওই নেতারা আরো বলেন, এই ক্ষোভের জায়গায় আপাতত সহমত পোষন করা ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই। আর তাই, সাধারণ কর্মচারীদের এই ক্ষোভের কথা আমরা দলের শীর্ষ নেতৃত্ত্বকে জানাচ্ছি – শীর্ষনেতৃত্ত্ব যেভাবে নির্দেশ দেবেন, সেইভাবেই ভবিষ্যতের রূপরেখা নির্দিষ্ট করা হবে।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!