প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই করোনার বেশ কিছু উপসর্গ ও অন্যান্য কিছু সমস্যা নিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।করোনার আশঙ্কায় তাঁর লালা রস পরীক্ষা করানো হয়েছিল। গত ৫ ই অক্টোবর তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পরদিন অর্থাৎ, গত ৬ ই অক্টোবর সকাল ১১ টায় তাঁকে বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি করোনার সমস্যা থেকে রেহাই পেয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন ধরেই তিনি পীড়িত আছেন মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যায়।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গতকাল অষ্টমীর দিন তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু আজ রবিবার মহানবমীর সকাল থেকেই আবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি। তাঁর অবস্থা নিয়ে আশঙ্কায় আছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কিছুদিন আগেও চিকিৎসায় যেভাবে ছাড়া দিচ্ছিলেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। সম্প্রতি তিনি আর তা দিচ্ছেন না। বর্ষীয়ান অভিনেতার চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক ডাক্তার অরিন্দম কর জানিয়েছেন যে, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের রক্তে প্লেটলেটস এর পরিমান স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কমে গেছে। সেইসঙ্গে তাঁর রক্তে ইউরিয়া ও সোডিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও তাঁর সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এখনো পর্যন্ত ঠিক মতো কাজ করছে।

কিছুদিন আগে তাঁর করোনা মুক্ত হবার পর থেকে শারীরিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি ঘটেছিল। কিন্তু তার পরেই অকস্মাত্ তার মস্তিষ্কে স্নায়বিক সমস্যা দেখা দিল। তাঁর মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যায় যথেষ্ট উদ্বেগে আছেন চিকিৎসকেরা। গত মঙ্গলবার থেকে তার মস্তিষ্কের স্নায়ুজনিত সমস্যা দেখা দেয়। তারপর থেকে আবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে শুরু করে। বুধবারও এই অবস্থার বিশেষ কোনো উন্নতি হয়নি।
অভিনেতার বয়স ও কোমরবিডিটি সমস্যা নিয়েও উদ্বেগে আছেন চিকিৎসকেরা।

প্রসঙ্গত এদিকে আবার গত ২০০৬ সাল থেকে সিওপিডিতে আক্রান্ত হয়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। গত বছর তাঁর নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। শ্বাসকষ্টের বিরাট সমস্যা নিয়ে রুবি জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। সে সময় তিনি ভর্তি ছিলেন হাসপাতালের আইসিইউতে। বেশ কিছু কিছু সময় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল সেবারে। তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা বহু বছরের।

প্রসঙ্গত স্নায়ুবিক সমস্যার সঙ্গে সঙ্গে অস্থিরতার সমস্যাতেও অবস্থা কাহিল বৃদ্ধ অভিনেতার। তাঁর মধ্যে কোভিড এনসেফেলোপ্যাথি ক্রমাগত বাড়ছে। মাঝে মাঝে তাঁর চেতনা কমে আসছে। এ কারণেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন যে, আজকেই তাঁর চিকিৎসার বিষয়ে কোনো বিশেষ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তাঁরা। তবে তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে চিকিৎসকেরা কি পদক্ষেপ নেবেন, সে ব্যাপারে তাঁরা এখনও কিছু জানাননি। এ প্রসঙ্গে চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান ডাক্তার অরিন্দম কর জানালেন, “স্টেরয়েড ও অন্যান্য চেষ্টা সত্ত্বেও উনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন না। এটা উদ্বেগের।”

প্রসঙ্গত অভিনেতার চিকিৎসার বিষয়ে দেশের বেশ কিছু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েছেন বেলভিউ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। এমনকি বিদেশেরও কিছু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাঁরা। নতুন করে বেশ কিছু ওষুধও দেয়া হচ্ছে বর্ষীয়ান অভিনেতাকে। বর্ষীয়ান অভিনেতা কবে সম্পূর্ণ রোগ মুক্ত হবেন? সে বিষয়ে এখনও বিশেষ কিছু জানা যায়নি। তবে, সুস্থ হতে তাঁর অনেকটা সময় লাগবে বলেই চিকিৎসকদের ধারণা। প্রবাদপ্রতিম এই অভিনেতা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন ও তার অভিনয়গুণে মুগ্ধ করুন আপামর জনতাকে, এমনটাই সকলের প্রার্থনা।