প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট –  2014 সালে দেশে ক্ষমতায় আসার আগে নিজেদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে রামমন্দির স্থাপন, 370 ধারা বিলোপ সহ একাধিক বড় বড় প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি। পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসার পরেও তারা সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি বলে অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে। কিন্তু দ্বিতীয়বার অর্থাৎ 2019 সালে আবার নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি কেন্দ্রের ক্ষমতা দখল করার পরেই একের পর এক নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি তারা পূরণ করতে শুরু করে। রাম মন্দির স্থাপন থেকে শুরু করে 370 ধারা বিলোপের পথে ইতিমধ্যেই একধাপ হেঁটেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আর এবার বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ। যেখানে বিজেপির দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্য ছিল, রাজ্যের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে আইন নিয়ে আসা।

আর এবার সেই আইনকে প্রতিষ্ঠিত করতে পদক্ষেপ নিতে চলেছে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার। যার অঙ্গ হিসেবে রবিবার বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের দিন উত্তরপ্রদেশের নতুন জনসংখ্যা নীতি ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের। অর্থাৎ বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের দিনেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে। আর দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ রাজ্য হিসেবে পরিচিত উত্তরপ্রদেশের যদি এই আইন লাগু হয়, তাহলে ধীরে ধীরে 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের বর্তমান বিজেপি সরকার সারাদেশের ক্ষেত্রে এই আইন লাগু করতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দ্বিতীয়বার অর্থাৎ 2019 সালে ক্ষমতায় আসার পরই প্রথম 15 ই আগস্টে এই ব্যাপারে বড় বার্তা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যেখানে দেশের বর্তমান জনসংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভবিষ্যতের ব্যাপারে আশঙ্কার কথা তুলে ধরেছিলেন তিনি। আর তারপর থেকেই জল্পনা তৈরি হয় যে, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন আনার ব্যাপারে এবার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। এমনকি একাধিক বিজেপি সাংসদ এই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন লাগু করা হোক বলেও দাবি জানাতে শুরু করেন।

তবে 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে যখন করোনা ভাইরাস সহ একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখে বিরোধীরা রাস্তায় নেমেছে, তখন বিতর্কিত এই জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন যদি লাগু করা হয় গোটা দেশজুড়ে, তাহলে বিরোধীরা আরও বেশি করে বিজেপিকে চেপে ধরতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সূক্ষ্ম এবং কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চাইছে গেরুয়া শিবির। আর সেই কারণেই নিজেদের দখলে থাকা উত্তরপ্রদেশের জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন লাগু করে ধীরে ধীরে তা দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা নিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি একের পর এক পূরণ করতে শুরু করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। কিন্তু তাদের অন্যতম লক্ষ্য দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আনা। আর সেই কারণেই একের পর এক রাজ্যজুড়ে এই পদক্ষেপ নিতে চলেছে গেরুয়া শিবির। যার জেরে উত্তরপ্রদেশের মত বৃহত্তর রাজ্যে যদি বিজেপির জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন লাগু করতে পারে, তাহলে ভবিষ্যতে গোটা দেশজুড়ে নয়া মাত্রা স্থাপন হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।