এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা নিয়ে ক্রমশ কড়া হচ্ছে প্রশাসন

আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা নিয়ে ক্রমশ কড়া হচ্ছে প্রশাসন

আন্দোলনের নামে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার বিরুদ্ধে এবার গর্জে উঠল বাঁকুড়া জেলার পুলিশ। প্রতিবছরের মতো এ বছরও বাঁকুড়া জেলা পুলিশের তরফ থেকে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করা হয়েছিল। অনুষ্ঠানে ‘পুলিশ স্পিক্স’ বা ‘পুলিশ বলছে’ নামক একটি বিশেষ পর্ব রাখা হয়েছিল।

এই অনুষ্ঠানেই আন্দোলনের অজুহাতে বেআইনি জমায়েত,হিংসাত্মক আন্দোলন, অবরোধ বা ঘেরওয়ের নামক জঙ্গী আন্দোলন,সরকারি সম্পত্তি নষ্ট,সরকারি কাজ বাধাদান,সরকারি আধিকারিকদের উপর চড়াও হওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন অসংবিধানিক কাজকর্মের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলেন খাতড়া এবং বিষ্ণুপুর মহাকুমার পুলিশ। আইনের পাঠ পড়ানোর পাশাপাশি এসব বেআইনি কাজকর্ম প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উঠিৎ তার সঠিক দিশা দেখান তাঁরা।

আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে ব্যাপারেও সঠিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে বেশকিছু ভিডিও ফুটেজ পুলিশের তরফ থেকে জেলাবাসীকে দেখানো হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও,জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, বিষ্ণুপুরের সংসদ সদস্য সৌমিত্র খাঁ, ওন্দার বিধায়ক অরূপ খাঁ, জেলার দুই অতিরিক্ত পুলিস সুপার বিশপ সরকার ও শ্যামল সামন্ত প্রমুখরা। এছাড়া জেলার ছাত্র,শিক্ষক,আদিবাসী সম্প্রদায়ের নেতা এবং অন্যান্য স্তরের বহু মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাঁকুড়ার জেলাশাসক জানান,বেআইনি কাজ করার পর আইন না জানার অজুহাত দেখানোটাই অযৌক্তিক। ন্যূনতম জ্ঞান থাকলেই আইন মেনে চলার অভ্যেস তৈরি হয়। আন্দোলনে নেমে অনেকেই সরকারি বাস ভাঙচুর করেন, অগ্নিসংযোগ করেন। অথচ ভাবেনই না, ওই বাসে তাদের নিজেদের কোনো আত্মীয় স্বজন থাকলে তারা কি একইভাবে এসব হিংসাত্মক কাজ করতে পারতেন? প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন তিনি। তাই৷ আন্দোলনের অজুহাত ওসব হিংসামূলক কাজকর্ম বন্ধ করার পক্ষে সওয়াল তোলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার জানান,’আমরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য কাজ করি। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। বিষয়টি মাথায় রেখে সকলকে চলতে হবে।’ শুধু আন্দোলনের নামে বেআইনি কাজকর্মের প্রতিরোধই নয়, জেলায় কুসংস্কার, ডাইনি প্রথা,নারী ও শিশু পাচারের মতো বিষয়েও আলোকপাত করা হয় অনুষ্ঠানে। বলা হয়,বেআইনি কাজকর্ম নজরে আসলেই সবার আগে পুলিশেকে জানাতে। পুলিশের কাজ সহায়তা করার জন্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত মানুষের কাছে অনুরোধ করেন সভাধিপতি।

প্রসঙ্গত,বেশ কয়েকদিন আগেই জঙ্গলমহলের জেলাগুলোতে আন্দোলনে নামে বেশ কয়েকটি সংগঠন। সারাদিন ধরেই রেল এবং গুরুত্বপূর্ন রাস্তাঘাট অবরোধ করে রাখেন তারা। এর জেরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। গতি স্তব্ধ হয়ে যায় দূরপাল্লার ট্রেনগুলোর। এরজেরে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় সাধারন মানুষকে। নাস্তানাবুদ হতে হয় শিশু,মহিলাদের। দাবী আদায়ের জন্য নিত্যযাত্রীদের সমস্যায় ফেলার জেরে অসন্তুষ্ট হন জেলাবাসী। গোটা ঘটনায় উষ্মাও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসেন জেলার পুলিশ প্রশাসন। অবরোধকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় অভিযোগও দায়ের হয়। তারপর এদিন এসব বেআইনি অবরোধ কর্মসূচীর বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান স্পষ্টও করে জেলা পুলিশ।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

 

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্যের বক্তব্য,আগে পুলিসকে মানুষ ভয় পেত। তখন সমস্যা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের কাছে মানুষ যেত। বর্তমানে মানুষ জনপ্রতিনিধিদের থেকেও পুলিসকে বেশি ভরসা করছে। এখন জনপ্রতিনিধিদের একাংশ মানুষকে তাচ্ছিল্য করেন। অথচ পুলিস দিনদিন জনসংযোগের কাজ বাড়াচ্ছে। পুলিশের এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেন তিনি। পুলিশের সমর্থনে জানালেন,অযথা নানান ছোটখাটো ইস্যুতে পুলিসকে অশ্রাব্য গালিগালাজ সহ্য করতে হয়। পুলিসও জনপ্রতিনিধিদের প্রতি বিরূপ আচরণ করে। এই ধরনের আচরণ কাম্য নয় বলেই জানালেন তিনি।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!