“দিদিকে বলো” সফল না অসফল? উত্তরের আগেই বিজেপিকে আটকাতে ফের নয়া কর্মসূচি হাজির তৃণমূলের কলকাতা রাজ্য October 16, 2019 2011 সালে ক্ষমতায় আসার আগে জনসংযোগকে হাতিয়ার করে তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল জনমত গড়ে তুলেছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার ফল হিসেবেই সেই সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্যে দিয়ে 2011 সালের 20 শে মে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু ক্ষমতা দখলের পরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতার স্বাদ পেতে শুরু করেছেন। আর তাইতো তিনি সেই ভাবে সাধারণ মানুষকে আর গুরুত্ব দেন না বলে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ তুলতে দেখা গেছে বিরোধীদের। আর বিরোধীদের সেই অভিযোগকে কিছুটা হলেও সত্যি করে সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে জনসংযোগ থেকে কিছুটা বিচ্যুত হওয়া তৃণমূল কংগ্রেস 42 এ 42 এর স্লোগান তুললেও 22 টি আসন দখল করেই থেমে যেতে হয়েছে তাদের। অন্যদিকে বিগত বাম আমলে বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূল সাধারণ মানুষের যেমন সমর্থন পেতে শুরু করেছিল, ঠিক একইভাবে সেই তৃণমূল সরকারের আমলে বিরোধী দল হিসেবে বিজেপি সাধারণ মানুষের সমর্থন নিয়ে প্রায় 18 আসন পেয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। আর এহেন একটা পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরের পরিকল্পনামাফিক সেই লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর “দিদিকে বলো” কর্মসূচি করে গোটা দলকে জনসংযোগে পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - ইতিমধ্যেই প্রথম দফার দিদিকে বলো কর্মসূচির কাজ শেষ হয়েছে। তবে শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে নির্দেশ না আসলে যে তৃণমূলের কোনো নেতাই কোন কাজ করেন না, তা ভালোই জানেন সকলে। আর তাই পুজোর মরসুম মেটার সাথে সাথেই রাজ্যের প্রতিটি জেলার ব্লক সভাপতি এবং টাউন সভাপতিদের নিয়ে মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে একটি বৈঠক করে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য তৃণমূলের সভাপতি সুব্রত বক্সি, তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল যুবর সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সহ অন্যান্যরা। আর সেই বৈঠকেই দলের জনসংযোগ কর্মসূচি চালানোর জন্য দ্বিতীয় দফায় দিদিকে বলোর কাজ শুরু করতে উপস্থিত সকল জেলার নেতৃত্ব, ব্লক এবং টাউনের নেতৃত্বদের নির্দেশ দেন শীর্ষ নেতৃত্ব। সাধারণ মানুষকে নিয়েই তৃণমূল কংগ্রেস গঠন হয়েছে। তাই সেই সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই ভবিষ্যতে দলকে চলতে হবে বলে জানিয়ে দেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর তৃণমূলের এই জনসংযোগ কর্মসূচি যে শুধু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ মোতাবেক সব কর্মী মানবে না, এমনটা খুব ভাল করেই জানে রাজনৈতিক মহল। আর তাই এবার রীতিমতো একদিকে দলের জনসংযোগ রক্ষা করতে এবং অপরদিকে সাধারণ মানুষের সাথে চলে বিজেপিকে টেক্কা দিতে “সম্প্রীতি যাত্রা” করার পরিকল্পনা নিল ঘাসফুল শিবির। সূত্রের খবর, আগামী 19 অক্টোবর থেকে 24 অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যের প্রতিটি ব্লক এবং পৌরসভা এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করার নির্দেশ দিয়েছে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এই “সম্প্রীতি যাত্রার” মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ঠিক কিভাবে পৌঁছে যাবে তৃনমূল? দলীয় সূত্রের খবর, গত আট বছর ধরে চলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে রাজ্যের উন্নয়নকে সকলের কাছে তুলে ধরা আর সম্প্রদায়িক বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে এই সম্প্রীতি যাত্রার মাধ্যমে গোটা ব্যাপারটিকে উপস্থাপিত করবে তৃণমূল। তবে তৃণমূলের “সম্প্রীতি যাত্রার” পেছনে বিজেপির বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচিকে বড় করে দেখছে বিশ্লেষকদের একাংশ। কেননা সম্প্রতি গান্ধীজীর সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে বিজেপির তরফে সারা রাজ্যজুড়ে “গান্ধী সংকল্প যাত্রার” আয়োজন করে জনসংযোগ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ফলে বিজেপির এই কর্মসূচিতে যাতে সাধারণ মানুষ আকর্ষিত না হয়, তার জন্যই বিকল্প কর্মসূচি হিসেবে “সম্প্রীতি যাত্রা” কর্মসূচি করে রাজ্যজুড়ে নিজেদের জনসংযোগ যাত্রাকে দীর্ঘায়িত করতে চাইছে তৃণমূল বলে মত একাংশের। তবে বিজেপির বিকল্প হিসেবে তাদের এই কর্মসূচি নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে পার্থবাবু যাই বলুন না কেন, রাজ্যজুড়ে যেভাবে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত বাড়ছে, তাতে তৃণমূল যে অনেকটাই বেকায়দায় এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে এখন সেই বিজেপি যে কর্মসূচি নিচ্ছে, তার পাল্টা কর্মসূচি গ্রহণ করেই যে জনসংযোগ আদায় করতে হচ্ছে তৃণমূলকে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত ওয়াকিবহাল মহল। তবে বিজেপির “গান্ধী সংকল্প যাত্রা” বনাম তৃণমূলের “সম্প্রীতি যাত্রায়” এখন শেষ পর্যন্ত কারা জয়লাভ করে, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। আপনার মতামত জানান -