যত দিন, যত সময় পার হচ্ছে, ততই করোনা মোকাবিলায় অস্বস্তি বাড়ছে রাজ্য সরকারের।‌ প্রথমদিকে করোনা মোকাবিলায় প্রায় প্রতিনিয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাংবাদিক বৈঠক করতে দেখা যেত। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে এবং বাংলায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে, সেভাবে আর মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আর এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ‘বিশেষ ব্যবস্থার’ কথা জানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ।

বস্তুত, ইতিমধ্যেই রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী দেখা নেই। তাহলে কি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন? এই প্রশ্ন করেছিলেন দিলীপবাবু। আর এবার সেই দিলীপবাবু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে’ পাঠানোর দাবি তুললেন। যা নিয়ে তীব্র শোরগোল সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রের খবর, এদিন তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রায় একমাস নাটক করলেন, ফটো তুললেন, রাস্তায় দাগ কাটলেন, তারপর তিনি কোথায় গায়েব হয়ে গেলেন! মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য কি ঠিক আছে? সবার জানার প্রয়োজন রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থা কি? রাজ্যের মানুষ মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত।”

অর্থাৎ বিজেপির রাজ্য সভাপতি এই কথা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী একসময় প্রতিনিয়ত সাংবাদিক বৈঠক করলেও, এখন তিনি কার্যত আড়ালে রয়েছেন। আর তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে শোরগোল তুলে দিলেন দিলীপবাবু বলে মত বিশেষজ্ঞদের। প্রসঙ্গত, সাধারণত কারোর বিরুদ্ধে সরকারিভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হলে, তাঁকে কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে পাঠানো হয়। বাংলায় এই ঘরানা বাম আমল থেকেই চালু এবং তৃণমূল সরকারের আমলেও সমানে চলছে বলে দাবি করে থাকেন আমলারা।

আর তাই দিলীপবাবু স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকেই ‘কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে’ পাঠানোর কথা বলে বোঝাতে চাইলেন তাঁর প্রতি চূড়ান্ত অনাস্থার কথা। অন্যদিকে রাজ্যের বর্তমান এই পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি দায়ী নয়? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির আরেক হেভিওয়েট নেতা সায়ন্তন বসু। সবমিলিয়ে করোনা পরিস্থিতির জন্য ঘরে-বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারকে কার্যত তুলধোনা করছে বঙ্গ বিজেপি। এখন গোটা পরিস্থিতির কিভাবে মোকাবিলা করে তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য সরকার – তার দিকেই নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের।