প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে বিতর্ক চলছে দীর্ঘদিন ধরে। শুভেন্দু অধিকারী দল ছাড়ার পরে তাঁর অনুগামী হিসেবে দল বিরোধী মন্তব্য করতে শুরু করেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। এবং রাতারাতি তিনি সমস্ত পদত্যাগ করে দল ছেড়ে দেন। স্বাভাবিকভাবে গুঞ্জন ওঠে, তিনি গেরুয়া শিবিরে যেতে চলেছেন বলে। হয়তো যেতেনও, কিন্তু গেরুয়া শিবিরের বেশ কিছু নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে পাল্টা মুখ খোলেন। ফলস্বরূপ তাঁর বিজেপিতে যাওয়া বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং মাথা নিচু করে জিতেন্দ্র তিওয়ারি আবার তৃণমূলে ফিরে আসেন। কিন্তু তৃণমূলে ফিরে আসলেও তিনি তাঁর হারানো সম্মান আর পুনরুদ্ধার করতে পারেননি।

তাই এবার জিতেন্দ্র তিওয়ারি কোণঠাসা অবস্থায় বলে উঠলেন, তাঁরও ধৈর্যের সীমা আছে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে তাঁর প্রতিক্রিয়া কিন্তু ভয়ঙ্কর হবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, এই বার্তা জিতেন্দ্র তিওয়ারি কাকে দিলেন এবং কেন দিলেন? প্রসঙ্গত, জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলের মূল স্রোতে ফেরার চেষ্টা চালালেও এখনো পর্যন্ত সফল হননি। তবে তৃণমূল শিবিরের অন্দরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। জিতেন্দ্র তিওয়ারির প্রত্যাবর্তনে দলে সব থেকে বেশি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন পাণ্ডবেশ্বরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।

এর আগে জিতেন্দ্র তিওয়ারি যখন দল ছেড়েছিলেন এবং জেলা সভাপতি ও আসানসোলের পুরসভার কার্যকরী মেয়রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সেদিনই বিশাল মিছিল বের করেন নরেন্দ্রনাথ। এবং মিছিল শেষে বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে তিনি তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়ে তীব্র হুঁশিয়ারিও দেন। স্বাভাবিকভাবেই অনেকেই মনে করছেন জিতেন্দ্রে বার্তা দিলেন পাণ্ডবেশ্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। দলে ফিরে আসলেও পদ হারাতে হয় জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেও এখনো পর্যন্ত দলের সঙ্গে যে তাঁর দূরত্ব মেটেনি, তাঁর প্রমাণ বহুবার পাওয়া গিয়েছে। এমনকি দলের কোনো অনুষ্ঠানে এখন আর সেভাবে জিতেন্দ্র তিওয়ারি কে চোখে পড়ছে না।

তবে জিতেন্দ্র তিওয়ারির সমর্থকরাও জানাচ্ছেন ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর আপত্তিতে তৃণমূলের অনুষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করে রাখা হচ্ছে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। এসব কারণে তিতিবিরক্ত জিতেন্দ্র তিওয়ারি এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলেন বলে মনে করছেন তৃণমূল শিবিরের একাংশ। যদিও তাঁর এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো প্রতিক্রিয়া যেমন জিতেন্দ্র তিওয়ারি দেননি, তেমনই জিতেন্দ্রর মন্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী।

শুধু তিনি জানান, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পাণ্ডবেশ্বর আসনটি আবার তৃণমূলের হাতেই আসবে। স্বাভাবিকভাবেই জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে এখন তৃণমূল শিবিরে চলছে তীব্র জল্পনা। অনেকেই মনে করছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে দলে ফিরিয়ে নিয়ে কার্যত শাস্তির মুখোমুখি করা হচ্ছে। তবে এই শাস্তি কতদিন মেনে নিতে পারেন জিতেন্দ্র তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। জিতেন্দ্র তিওয়ারির বার্তাও কিন্তু এক্ষেত্রে যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই। এই অবস্থায় এখন দেখার জিতেন্দ্র তিওয়ারি কি আবারো বেসুরো হয়ে ওঠেন?