এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > কলকাতা > মা দুর্গার “পদ্মযোগ!” শারদোৎসব নিয়ে তুলকালাম মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায়

মা দুর্গার “পদ্মযোগ!” শারদোৎসব নিয়ে তুলকালাম মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায়

সে ত্রেতা যুগের কথা। যখন রাবণকে বধ করার জন্য শ্রীরামচন্দ্র পদ্ম ফুল দিয়ে মাতা দুর্গার পুজো করেছিলেন। আজকালকার দিনে যেখানে আগের দিনের কথা পরের দিন কেউ মনে রাখেনা, সেখানে দুই যুগ আগের কথা কে মনে রাখবে! তার ওপরে এখন সবকিছুই রাজনীতির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সেখানে ছাড় পাননা দেবতাও। তাই এবার মা দুর্গার পদ্ম আসন নিয়ে গোল বাঁধলো সংঘশ্রী ক্লাবের সঙ্গে মৃৎশিল্পীর। কালীঘাট সংঘশ্রী ক্লাবের এবারের পুজোর থিম এবং প্রতিমা নিয়ে গোলযোগ যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। বিতর্কের জেরে ছেঁটে ফেলতে হয়েছে মৃৎশিল্পীকে।

আর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রতিমায় নাকি বিজেপির ছোয়া রয়েছে। যার জেরে প্রতিমার সেই ডিজাইনকে না পসন্দ করছেন পুজো কমিটি ও কর্তৃপক্ষরা। বিশেষ সূত্র মারফত খবর, প্রতিমার ডিজাইন পালটে ফেলতে বলা হয়েছিল শিল্পীকে। যদিও এই ব্যাপার স্বীকার করতে চাননি মৃৎশিল্পী। বরং তার কথায়, বাজেট নিয়ে সমস্যার জেরে সংঘশ্রীর পুজোর কাজ তিনি ছেড়ে দিয়েছেন।

যদিও পুজো কমিটির ভেতর থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে মা দুর্গাকে এবার পদ্ম আসনে বসাতে চেয়ে ছিলেন মৃৎশিল্পী। তা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন সংঘশ্রী ক্লাবের উপদেষ্টা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো কার্তিক ব্যানার্জি। শিল্পীর সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় এবার শিল্পীকে সরিয়ে দিল পুজো কমিটি।

বস্তুত, এই পুজো নিয়ে কিছুদিন আগেই রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে যায়। যখন শোনা যায় কালীঘাটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাড়ার ক্লাব সংঘশ্রী পূজা কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকছেন বঙ্গ বিজেপির অন্যতম নেতা সায়ন্তন বসু। আর এই পুজো উদ্বোধন করতে আসছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরেই ক্লাবের কমিটির মিটিং তড়িঘড়ি ডাকেন ক্লাব সভাপতি শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়।

আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে

আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে



আপনার মতামত জানান -

কি করে তাকে এবং পুজো কমিটির একাধিক সদস্যকে না জানিয়ে সায়ন্তনবাবুকে সভাপতি করা হল সেই বিষয়ে রীতিমতো তোড়জোড় শুরু করেন তিনি। পুজোর অন্যতম উপদেষ্টা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।

যার পরে কিছুদিন আগেই পুজোকে বিজেপি দখলমুক্ত করে নেয় সংঘশ্রী। উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসে পূজা কমিটির তরফে জানানো হয়, 74 তম বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে এবারের থিম হবে কাটাকুটি খেলা। শিল্পী প্রদীপ্ত কর্মকারকে দেওয়া হয় সিমের দায়িত্ব। আর সেই প্রতিমা তৈরীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন মৃৎশিল্পী পরিমলকে। তবে প্রতিমার ডিজাইন ও অর্ডার করে দিয়েছিলেন প্রদীপ্ত কর্মকার। মাঝে পুজো কমিটির ডামাডোল নিয়ে এই বিষয়ে তেমন কিছু হয়নি। খবর পাওয়া যায় সবে প্রতিমার কাজ শুরু হয়েছিল, আর এরই মধ্যে কিছুদিন আগে প্রতিমার আদল বদলানোর কথা বলা হয়।

শিল্পীকে পদ্ম ফুলের উপর মা দুর্গার প্রতিমা পছন্দ করেননি পূজা কমিটি। এই বিষয়ে শিল্পী বলেছেন, প্রথমে পুজোর বাজেট ছিল বেশি। কিন্তু নিয়ন্ত্রক নিয়ে বিতর্কে পর পুজোর বাজেট অনেকটাই কমিয়ে দেয়‌ কমিটি। শিল্পীর কথায়, যে ভাবনা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল, এই সামান্য বাজেটে তা সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। তাই পুজোর কাজ থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। তবে প্রতিমা সংক্রান্ত কোনো আপত্তির কথা আমার জানা নেই।

কিন্তু পুজো কমিটির সদস্যদের কথায় অন্য ধরনের সুর পাওয়া যাচ্ছে। তাদের মতে, প্রতিমার ডিজাইন বদলাতে বলা হয়েছিল। যাতে নাকি শিল্পী রাজি হয়নি। তাই শিল্পী বদলাতে বাধ্য হয়েছে কমিটি। নতুন শিল্পী হিসেবে থাকছেন সাত্যকি সুর। আর তার সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে পুজোর থিমও। আগে কাটাকুটি খেলা পুজোর থিম থাকলেও নতুন হিসেবে থাকছে সবার উপরে মানুষ সত্য।

প্রসঙ্গত, পুজো নিয়ে ডামাডোলের সময় খুঁটি পুজো পিছিয়ে দেওয়া হয়। তারপরেই গতমাসের সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে সংঘশ্রী ঘোষণা করে, পুজো উদ্বোধন করছে না কোনো বিজেপি নেতা এবং পুজোকে রাজনীতি থেকে মুক্ত করার কথাও জানিয়ে দেয় পুজো কমিটি।

পুজো পরিচালনার ক্ষেত্রে যে বিজেপির কোনো সাহায্য নেওয়া হবে না সেকথাও ক্লাব কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন। যাতে করে স্পষ্ট হয়ে যায় সায়ন্তন বসু সংঘশ্রী পরিচালিত পূজোর সভাপতি হচ্ছেন না। কিন্তু মুখে রাজনীতিমুক্ত ক্লাবের কথা বললেও প্রতিমার স্বাভাবিক ডিজাইন নিয়ে আপত্তি তুলে এক নতুন ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হল শারদোৎসবকে কেন্দ্র করে বলেই মনে হচ্ছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!