এখন পড়ছেন
হোম > রাজ্য > দুর্গাপুজোর ‘অন্তরালে’ তৃণমূলের অন্দরে হেভিওয়েটদের লড়াইটা কি প্রকাশ্যে এলো, জল্পনা তুঙ্গে !

দুর্গাপুজোর ‘অন্তরালে’ তৃণমূলের অন্দরে হেভিওয়েটদের লড়াইটা কি প্রকাশ্যে এলো, জল্পনা তুঙ্গে !


তৃণমূল- রাজ্যের শাসকদল। আর সেখানে হেভিওয়েট দের তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়, রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, রাজ্যের পুর ও নগোরন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। তৃণমূলের অন্দরে কানাঘুসো চললেও বাইরে এঁদের মধ্যে কোনো তর্ক বিতরের কথা সোনা যায়নি। একযোগে বিরোধীদের দোষারোপ করতে অথবা দলের গুণগান করতে পিছপা হননি এইসব হেভিওয়েটরা। কিন্তু গোল বাঁধলো এদিন। কি নিয়ে সেই গোলযোগ ? কার পুজো আসল পুজো?এই নিয়েই জোর তরজায় তৃণমূলের চারমন্ত্রী। সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ও।

রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়ের পুজো একডালিয়া এভারগ্রিন বনাম রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়এর নাকতলা উদয়ন সংঘ, রাজ্যের যুব কল্যাণ ও ক্রিড়া দফতরের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এর আলিপুরের সুরুচি সংঘ, রাজ্যের পুর ও নগোরন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এর চেতলা অগ্রনি র পুজো নিয়ে জোর তরজা। এদিন রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্য়ায় দাবি করেন যে,তাঁর পুজো সাবেকি এবং তিনিই সত্যিকারের মাতৃবন্দনা করেন। থিম ভাবনায় যাঁরা পুজোর দিনগুলোকে জমজমাট করছেন, তাঁরা আসলে পুজো নয় উত্‍সব করছেন। সাথেই তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন ধরে একডালিয়া এভারগ্রিন সাবকি পুজো করে আসছে। থিম পুজোর এই বাজারেও একডালিয়া এভারগ্রিনে যেভাবে দর্শনার্থীর ঢল নামছে, তা প্রমাণ করে মানুষ আসলে পুজোই দেখতে যায়।যা শুনে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বাকিরা। এই নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান যে সুব্রতদা আসলে মূল্য ধরে পুজো করেন। e সুব্রতদা ডেকোরেটরের সঙ্গে প্যান্ডেল বানানোর চুক্তি করে অর্থ দেন। প্রতিমা শিল্পীকে বরাত দিয়ে দেন, এখানে কোনও নিজস্ব ভাবনা কাজই করেনা। এটা অনেকটা ক্যাটেরারকে ডেকে অর্থ দিয়ে মেয়ের বিয়ের দায় সারার মতো ব্যাপার। কিন্তু সুরুচি সংঘের পুজো হয় নিজস্ব ভাবনা থেকে। অনেকটা মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে, ক্যাটেরার না ডেকে , নিজেরাই জোগাড় করে তা কার্যে রূপান্তরিত করার মতো। এতে মায়ের প্রতি যে নিজস্ব অনুভূতি ও ভাবনা কাজ করে , তা প্রত্য়ক্ষ করতেই প্রত্যেক বছর পুজোতে দর্শনার্থীরা আলিপুরের সুরুচি সংঘে ভিড় জমান।

অন্যদিকে, রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় যিনি নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ট তিনিএক টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাত্‍কারেরীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। তিনি জানান যে, একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো কলকাতা বিখ্যাত। এই পুজো দেখতে প্রচুর মানুষের ঢল নামে সত্যি , কিন্তু একডালিয়া এভারগ্রিনের লোকেশনের সুবিধার কথাও বিচার করতে হবে, গড়িয়াহাটের মোড়ে রয়েছে একগুচ্ছ বড় পুজো। যার মধ্যে রয়েছে সিংহি পার্ক, হিন্দুস্তান পার্কের মতো পুজো। এতগুলো বড় পুজো দেখতে এমনিতেই মানুষে ঢল নামে। কিন্তু, নাকতলায় মানুষের ঢল নামে শুধুমাত্র উদয়ন সংঘের পুজো দেখতে। এর আশপাশে কিন্তু আর কোনও বড় পুজো নেই, যার টানে মানুষ এখানে আসবে। এখানের থিমের ভাবনা মানুষকে আকৃষ্ট করে বলেই ছুটে আসেন দর্শনার্থীরা।সুব্রত মুখোপাধ্যায় বাটানগরে গিয়ে সাবেকি পুজো করে দেখান তিনি কত দর্শনার্থী টানতে পারেন।

 

রাজ্যের পুর ও নগোরন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও এই নিয়ে বেজায় চোটেছেন। এই নিয়ে তিনি বলেন,পুজো সবার । হিন্দু ,মুসলিম, শিখ, সাই দুর্গাপুজো সকলের। খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ধর্ম নিরপেক্ষাতার সবচেয়ে .বড় প্রতীক। পুজো সাবেকি না সাবেকি নয়, তা বড় নয়, বিষয়টি হল উত্‍সব। যাকে ঘিরে আনন্দে মেতে ওঠে মানুষ। যে উত্‍সবে একটা বড় ভূমিকা নেয় থিম।

পুজো নিয়ে এই তরজায় রীতিমতো সুব্রতবাবুর পাশে দাঁড়িয়ে সাবেকি পুজোর ভাবনার পক্ষেই সওয়াল করেছেন খোদ সাংসদ শতাব্দী রায়। তিনি জানিয়েছেন যে থিম পুজোকে তিনি পুজো বলেই মানতে রাজি নন। তাঁর মতে , ছোটবেলা থেকেই একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো দেখার জন্য তিনি অপেক্ষায় থাকতেন। এখন একডালিয়া এভারগ্রিনের সঙ্গে আত্নিক যোগাযোগ হয়ে গিয়েছে। এই পুজোর যে সাবেকিয়ানা তা রীতিমত মন ছুঁয়ে যায়।

ফেসবুকের কিছু টেকনিকাল প্রবলেমের জন্য সব খবর আপনাদের কাছে পৌঁছেছে না। তাই আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে

এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

আর এই নিয়েই জোর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে রাজনৈতিকমহলে। রাজ্যের চার হেভিওয়েট মন্ত্রীর এহেন তরজা রাজনৈতিকমহলে রীতিমতো প্রশ্ন চিহ্ন ফেলেছে। জনসংযোগ বাড়াতেই এই ধরনের উদ্যোগ নেন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরা। আর নেত্রীর আদেশে এ হেনো কাজে মেতেছেন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীরা। উদেশ্য একটা ২০১৯ এর নির্বাচন। বিরোধীদের কোনো মতেই জায়গা না ছাড়া। কিন্তু পুজোর আড়ালে এ হেনো কাজকর্মে কি প্রকাশ্যে এলো ভেতরের আসল চেহারাটা ? নাকি এটা শুধু মৌখিক এতে দলের ভেতরের কোনো সম্পর্ক নেই ? উত্তরটা অজানা। তবে বিরোধীরা একে ইস্যু করে যে ভোটার ময়দানে নামবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই বলেই মত রাজনৈতিকমহলের।

 

আপনার মতামত জানান -

Top
error: Content is protected !!