পুরোহিত ভাতাতেও তৃণমূলের স্বজনপোষণ? হেভিওয়েট নেতার বিস্ফোরক অভিযোগে তীব্র অস্বস্তি শাসকদলে কংগ্রেস নদীয়া-২৪ পরগনা রাজনীতি রাজ্য October 14, 2020 প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছরের সবকিছুই কেমন যেন খাপছাড়া ও অসংলগ্ন হয়ে পড়েছে। এ বছর বাঙালি দুর্গোৎসবের আনন্দ উপভোগ করতে পারবে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন ছিল অনেকের মনেই। কারণ, করোনা, লকডাউনের কারণে বহু মানুষের আর্থিক সঙ্গতি প্রায় তলানীতে। তাই ব্যবসাতে টান পড়েছে, চাঁদা দেবার সঙ্গতি অনেকেরই নেই। আবার, বিপাকে পড়েছেন বহু পুরোহিতও। কারণ, আগের মতো পুজোর বরাত পাচ্ছেন না তাঁরা অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে পুজোর আনন্দ ফিরিয়ে আনতে, গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছিলেন। যার মধ্যে একটি হলো পুজো উদ্যোক্তা কমিটিগুলোকে আর্থিক সাহায্য দান, সেইসঙ্গে পুরোহিতের ভাতা প্রদান। রাজ্যের মোট ৮০০০ পুরোহিতকে মাসে ১০০০ টাকা করে ভাতা দেয়ার কথা জানানো হয়। এই পুজোর মাস থেকেই পুরোহিতের ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘোষণার পরেই, রাজ্যের নানা স্থান থেকে বিভিন্ন পুরোহিতেরা এই ভাতার জন্য আবেদন করেছিলেন। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন স্থানের কোন কোন পুরোহিতরা এই ভাতা পাবেন, তার তালিকা প্রকাশ করা হল। আর পুরোহিত ভাতার এই তালিকা নিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ জানালেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের জনৈক কংগ্রেস নেতা। গত সোমবার পুরোহিত ভাতা বিষয়ক একটি তালিকা প্রকাশের পরই তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-মজিলপুরের পুর প্রশাসক ও কংগ্রেস নেতা সুজিত সরখেল। আমাদের নতুন ফেসবুক পেজ (Bloggers Park) লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - জয়নগর পুর এলাকায় মোট ২১ জনের নাম এই তালিকায় উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ সময় ধরে পুরোহিতের কাজ করছেন এমন অনেক ব্যক্তি আছেন, যাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। প্রশাসক অভিযোগ করেছেন যে, পুরসভাকে অজ্ঞাত রেখেই তালিকা প্রকাশ করেছে শাসকদল। গতকাল মঙ্গলবার জয়নগরের পুরভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এ বিষয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। প্রশাসক সুজিত সরখেল এ প্রসঙ্গে জানালেন যে, জয়নগর স্থানের নামকরণই হয়েছে দেবী জয়চণ্ডীর নাম থেকে। কিন্তু জয়চণ্ডী মন্দিরের পুরোহিতের নামই এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান যে, জয়নগরে বহু প্রাচীন মন্দির আছে, কিন্তু সেসব মন্দিরের সঙ্গে যুক্ত পুরোহিতদের অনেকেই এই তালিকায় স্থান পাননি। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল বিধায়ক এর মদতেই পুরসভাকে অজ্ঞাত রেখে পুরোহিতদের এই তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বেছে বেছে তৃণমূল কর্মীদেরই ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এই কারণেই তিনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ এনেছেন। তবে পুর প্রশাসকের দিক থেকে উঠে স্বজনপোষনের অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাৎ করতে দেখা গেল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বনাথ দাস জানালেন যে, স্বজনপোষনের অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, এই তালিকাতে কিছু ভুলভ্রান্তি আছে। পুরোহিতের কাজ করে না এমন কোন কোন ব্যক্তির নামও তালিকায় উঠে এসেছে। তাই তালিকা সংশোধন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। প্রসঙ্গত রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে একাধিক বার একাধিক স্থানে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছে রাজ্যের বিভিন্ন বিরোধীপক্ষ। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধির উদ্দেশ্যেই পুরোহিতদের ভাতা প্রদানের এই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের। এরপরেই, পুরোহিত ভাতায় স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠে এলে যথেষ্ট বেকায়দায় পড়তে হবে শাসক দল তৃণমূলকে, এমনটাই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত। আপনার মতামত জানান -